নয়াদিল্লি, 10 এপ্রিল: জয়ের হ্যাটট্রিকের সঙ্গে প্লে-অফের আশাও বেঁচে থাকত ৷ ইস্টবেঙ্গলের প্রথম শর্ত ছিল নয়াদিল্লিতে প্রতিপক্ষ পঞ্জাব এফসি’কে হারানো । সেটাতেই ডাহা ফেল করল কার্লেস কুয়াদ্রাতের ছেলেরা ৷ জয়ের আলোয় প্রথমবার সুপার সিক্সে পৌঁছনোর আশা শেষ হল চার গোলের লজ্জায়। পঞ্জাব এফসির বিরুদ্ধে 1-4 গোলে পরাজিত ইস্টবেঙ্গল। জোড়া গোল জর্ডনের, বাকি দু’টো মাহেদি তালাল, লুকার । ইস্টবেঙ্গলের গোল সায়ন বন্দ্যোপাধ্যায়ের । ইস্টবেঙ্গলের বিপর্যয়ে প্রথম ছয়ে এক ম্যাচ বাকি থাকতে নিশ্চিত করে ফেলল চেন্নাইয়িন এফসি ।
21 ম্যাচে 24 পয়েন্টে দাঁড়িয়ে থাকা কার্লেস কুয়াদ্রাতের ছেলেরা যেকোনও মূল্যে জয় চাইছিল । যাতে প্লে-অফের আশা বেঁচে থাকে । সেটা না হলেও অন্তত জয় দিয়ে মরশুম শেষ করা গিয়েছে এই সন্তুষ্টি থাকত । ছন্নছাড়া ডিফেন্সে সব স্বপ্নে ইতি ৷ এক নয়, দু’বার নয়, বারবার ডিফেন্সের ভুল । আর তাতেই চার-চারটে গোল পঞ্জাব এফসির । ইস্টবেঙ্গলের সুপার সিক্সের ক্ষীণ আশাও শেষ । 22 ম্যাচে 24 পয়েন্ট নিয়ে সাত নম্বরে শেষ ইস্টবেঙ্গলের এবছরের দৌড় । গত তিনবছরের মত লাস্ট বয় নয়, সাত নম্বরে শেষ করার মধ্যে লাল-হলুদ সমর্থকরা আশার আলো খুঁজতে পারেন । শুধু খুঁতখুত করবে চার গোল হজম ।
দিল্লিতে দর্শকশূন্য স্টেডিয়ামে ম্যাচটিতে পঞ্জাব এফসির কোনও তাগিদ ছিল না । কিন্তু ইস্টবেঙ্গলের কাছে প্রথম ছয়ে ঢুকে পড়ার আশা টিকিয়ে রাখার ম্যাচ । বলের দখল থেকে আক্রমণের সংখ্যায় ইস্টবেঙ্গল এগিয়ে থাকলেও রক্ষণের ভুলে চার গোল হজম করল । ক্রিকেটে ক্যাচ মিস যেমন কোনও দলকে বিপর্যয়ের দিকে এগিয়ে দেয়, তেমনই ফুটবলে রক্ষণের ভুল । সময় যত গড়িয়েছে, ততই রক্ষণের ফাঁক আলগা হয়েছে । যা কাজে লাগিয়ে গোলের উৎসব লুকা, জর্ড, মেহেদি তালালদের ।
কুড়ি মিনিটে রক্ষণের একটি ভুলকে কাজে লাগিয়ে পঞ্জাব এফসিকে এগিয়ে দেন জর্ডন । গোলটি হওয়ার সময় হরমনজোৎ খাবরা জায়গায় ছিলেন না । ছ’মিনিটের মধ্যে প্রত্যাঘাত ইস্টবেঙ্গলের । প্রতিপক্ষ রক্ষণকে শরীরের দোলায় টলিয়ে দলকে সমতায় ফেরান সায়ন । তাঁর সোয়ার্ভিং শটের হদিশ পাননি পঞ্জাব গোলরক্ষক । নিঃসন্দেহে আইএসএলের সেরা গোলের তালিকায় থাকবে । যা দেখে উচ্ছ্বসিত কুয়াদ্রাত-সহ পুরো লাল-হলুদ ডাগ আউট । এর আগে ভাসকুয়েজের পাস থেকে সায়ন একটি সহজ সুযোগ নষ্ট করেন।
এই সময় মনে হয়েছিল ইস্টবেঙ্গল ম্যাচে ফিরবে । রেফারি বুধবার রাতেও একটি নিশ্চিত পেনাল্টি থেকে ইস্টবেঙ্গলকে বঞ্চিত করলেন । কিন্তু তাতে সান্তনা খোঁজা যেতে পারে মাত্র । 43 মিনিটে ফের রক্ষণের ভুল কাজে লাগিয়ে পঞ্জাবকে এগিয়ে দেন মেহেদি তালাল । বিরতির পরে পুরোটাই পঞ্জাব এফসি । রক্ষণ জমাট রেখে প্রতি আক্রমণে লাল-হলুদ আশার কফিনে শেষ পেরেক পুঁতে দিল তারা । এই কাজে নেতৃত্ব দিলেন মেহেদি তালাল । 88 মিনিট মাঠে থেকে নিজে একটি গোল করলেন ৷ বাকি তিনটি জর্ডন লুকাকে দিয়ে করালেন । তাঁর দৌড়কে সামলাতে লাল-হলুদ বারবার অসহায়ভাবে ভেঙে পড়ল । শেষের দিকে হরমনজোৎ সিং খাবরা গোল লাইন সেভ না করলে পাঁচ গোল হজম করতে হত শতাব্দীপ্রাচীন দলকে ।
আরও পড়ুন: