কলকাতা, 31 অগস্ট: মসলন্দপুর থেকে ভারতীয় ফুটবলের রাজপথ। সুদীর্ঘ পথ পাড়ি দেওয়া ফুটবলকে সঙ্গে করে ৷ অবশেষে সেই যাত্রার সমাপ্তি। অবসর নিলেন শিলটন পাল ৷ সতীর্থদের 'গার্ড অব অনারে' বুট তুলে রাখলেন মোহনবাগানের আই লিগ জয়ী গোলরক্ষক ৷
উত্তর 24 পরগনার মছলন্দপুরের শিল্টন টাটা ফুটবল অ্যাকাডেমি থেকে উঠে এসেছিলেন। দীর্ঘ 14 বছর সবুজ-মেরুন ক্লাবে খেলেছেন। 2020 সালে সই করেছিল চার্চিল ব্রাদার্সে ৷ চলতি মরশুমে তিনি কলকাতা প্রিমিয়র ডিভিশনের রেনবোর হয়ে খেলেন। আর শুক্রবার এই ক্লাবের জার্সি গায়েই পেশাদার ফুটবলকে বিদায় জানান শিলটন ৷
বাবা তাঁর প্রিয় গোলরক্ষক ইংল্যান্ডের পিটার শিলটনের নামের অনুকরণে ছেলের নাম রেখেছিলেন। সেদিনের ছোট্ট শিলটন যে ভারতীয় ফুটবলে অন্যতম সেরা গোলরক্ষক হয়ে উঠবেন, তা ভাবা যায়নি। ভাবনা এবং বাস্তবের মেলবন্ধনে একদিন মসলন্দপুরের ছেলেটি হয়ে উঠেছিলেন মোহনবাগান গোলের বিশ্বস্ত প্রহরী। শুধু ক্লাব ফুটবল নয়, রাজ্য এবং জাতীয় দলের হয়েও প্রতিনিধিত্ব করেছেন সগৌরবে ৷ অধিনায়ক শিলটনের হাত ধরে মোহনবাগান জাতীয় লিগ জয়ের কৃতিত্ব অর্জন করেছে ৷ একাধিক বড় ম্যাচ অবিশ্বাস্য দক্ষতায় বের করেছেন শিলটন। তাঁর বাড়ানো দু'হাত এড়িয়ে প্রতিপক্ষ স্ট্রাইকাররা গোল করতে হতদ্যম হয়ে পড়তেন।
শুধু সবুজ-মেরুন জার্সি পড়ে বাংলার ফুটবলই নয়, গোয়ার চার্চিল ব্রাদার্সের হয়েও আই লিগে প্রতিনিধিত্ব করেছেন। আই লিগ জয় ছাড়াও সবুজ-মেরুন জার্সিতে ফেডারেশন কাপ-সহ একাধিক সর্বভারতীয় ট্রফি জিতেছেন ৷ আইএসএলে চেন্নাইয়িন এফসি ছাড়াও কেরালা ব্লাস্টার্সের হয়েও খেলেছেন বাংলার এই গোলকিপার ৷ দীর্ঘ ফুটবল কেরিয়ার অবশেষে ইতি টানলেন তিনি ৷ ফুটবলকে বিদায় জানালেন ভারতীয় ফুটবলে পেশাদার গোলরক্ষক শিলটন পাল।
শুক্রবার কলকাতা লিগে জর্জ টেলিগ্রাফ স্পোর্টস ক্লাবের বিরুদ্ধে নিজের শেষ ম্যাচটি খেলে ফেললেন রেনবোর শিলটন। বিদায়ী ম্যাচে 2-0 গোলে জর্জ টেলিগ্রাফের বিরুদ্ধে জয় তুলে নিল শিলটন পালের ক্লাব রেইনবো। ব্যারাকপুর স্টেডিয়ামে ম্যাচ শেষে দুই দলের ফুটবলার, কর্তারা শিলটনকে 'গার্ড অফ অনার দেন' ৷ বিদায় বেলায় স্বাভাবিকভাবেই আবেগপ্রবণ তিনি। ইতিমধ্যে নতুন ফুটবলার তুলে নিয়ে আসার কাজ শুরু করেছেন শিলটন। তাঁর অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগানোর পরিকল্পনার কথা ইতিমধ্যেই ক্লাব কর্তারা বলেছেন ৷ তবে শিলটন পালের বুট তুলে রাখার সঙ্গে টাটা ফুটবল অ্যাকাডেমির সোনালি ব্যাচের প্রতিনিধিত্বেও দাড়ি পড়ল ৷