কলকাতা, 2 ডিসেম্বর: বাংলাদেশে সংখ্যালঘু নিপীড়নের প্রভাব এবার আইএসএল-এর মঞ্চে ৷ এই প্রতিযোগিতার মঞ্চ থেকে কলকাতা ময়দানের শতাব্দী প্রাচীন ক্লাব ইস্টবেঙ্গল বাংলাদেশের ঘটনার প্রতিবাদে সরব হল ৷ সরাসরি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির হস্তক্ষেপের দাবি তোলা হয়েছে ক্লাব কর্তৃপক্ষের তরফে ৷ এই নিয়ে প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি দেবেন বলে জানিয়েছেন লাল-হলুদের শীর্ষকর্তা দেবব্রত সরকার ৷
তিনি বলেন, "ইস্টবেঙ্গল ক্লাব দিশা দেখাবে, পাশে থাকবে ৷ দরকার মতো আমরা প্রধানমন্ত্রীর কাছেও চিঠি লিখব আগামিদিনের পরিস্থিতি বিচার করে ৷ আমরা একটা বার্তা মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে চাই যে পাশে আছি ৷ তা সে ক্ষুদ্র ক্ষমতা নিয়ে হলেও ৷ কারণ, আমরা যাঁরা ইস্টবেঙ্গল ক্লাবের সভ্য-সদস্য ও সমর্থক, সকলে বিষয়টি নিয়ে খুবই উদ্বিগ্ন ৷ আমরা চাই তাঁদের পাশে থাকতে ৷ কিন্তু, আমাদের ক্ষমতা খুবই ক্ষুদ্র ৷ তাও যেটুকু সম্ভব হয় ৷"
এই নিয়ে সাংবাদিক বৈঠক করেছেন ইস্টবেঙ্গলের ফুটবল সচিব সৈকত গঙ্গোপাধ্যায় ৷ যেখানে ইস্টবেঙ্গল ক্লাবের ইতিহাস, তার সমর্থক এবং তাঁদের পূর্ব পুরুষের বাংলাদেশ যোগের বিষয়টি তুলে ধরেন তিনি ৷ এমনকি বাংলাদেশেও যে ক্লাবের অগণিত সমর্থক রয়েছে, তাও তুলে ধরেন ফুটবল সচিব ৷
সৈকত গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, "বৈষম্য শব্দটি ফিফা চার্টারে স্থান পাওয়ার অনেক আগেই, এর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়ে ইস্টবেঙ্গল ক্লাবের জন্ম হয়েছিল ৷ প্রথমদিন থেকে ইস্টবেঙ্গল ক্লাব জাতিগত বৈষম্যের বিরুদ্ধে লড়াই করে আসছে ৷ 1943 সালে বাংলার দুর্ভিক্ষ থেকে আয়লা এবং অতিসম্প্রতি কোভিড-19 অতিমারীর সময়ও মানুষের পাশে থেকেছে ৷ সেখানে বাংলাদেশের সংখ্যালঘুদের উপর পরিকল্পিতভাবে হামলা, ভারতে আমাদের সমর্থকদের ব্যথিত করেছে ৷"
তিনি বলেন, "আমাদের অধিকাংশ সমর্থকদের পূর্ব পুরুষের শিকড় পূর্ববঙ্গ তথা বাংলাদেশে রয়েছে ৷ এমনিক আমাদের সমর্থকদের বহু আত্মীয় স্বাধীনতার আগে থেকে, এমনকি 1971-এর মুক্তিযুদ্ধের সময় থেকে ওপার বাংলায় বসবাস করেছেন ৷ ফলে আমাদের অসংখ্য সমর্থকও রয়েছে বাংলাদেশে ৷ প্রতিনিয়ত সেখানে তাঁদের সঙ্গে হয়ে চলা অত্যাচার সম্পর্কে আমাদের ইমেল করে জানাচ্ছেন সমর্থকরা ৷ এমনকি পশ্চিমবঙ্গ ও ভারতের অন্যান্য প্রান্তে বসবাস করা আমাদের সমর্থকরাও বাংলাদেশের পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বিগ্ন ৷"
বাংলাদেশের সেই সব সমর্থক ও তাঁদের পরিজনদের নিরাপত্তার দাবিতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে হস্তক্ষেপের দাবি জানান ইস্টবেঙ্গলের ফুটবল সচিব ৷ বাংলাদেশের সকল সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে দিশা দেখানোর কথাও বলেন সৈকত গঙ্গোপাধ্যায় ৷