কলকাতা, 13 সেপ্টেম্বর: আনোয়ার আলিকে নিয়ে জট ক্রমেই জটিল হয়ে উঠছে । শুক্রবারের ময়দান তাঁকে ঘিরেই সরগরম । দিল্লি হাইকোর্টে ইস্টবেঙ্গল, দিল্লি এফসি এবং আনোয়ার স্থগিতাদেশের আবেদন করেছিলেন । তা নিয়ে শুনানি কি হয় সেটাই ছিল দেখার । স্থগিতাদেশের বদলে যে রায় সামনে এল, তাতে জট কাটার বদলে জটিল হয়ে গেল ।
আনোয়ারকে নিয়ে সর্বভারতীয় ফুটবল ফেডারেশনের প্লেয়ার্স স্টেটাস কমিটির নেওয়া যাবতীয় সিদ্ধান্ত খারিজ করে দেয় আদালত । সেই সঙ্গে ফেডারেশনের দেওয়া নো অবজেকশন সার্টিফিকেট (এনওসি) বাতিল বলে ঘোষণা করে আদালত । এই মর্মে ফের শনিবারই নতুন করে শুনানির কথাও বলেছে আদালত ।
সূত্রের খবর, আনোয়ারকে নিয়ে শুনানিতে ফেডারেশনের কাছে আদালত জানতে চায়, যে কারণের উপর ভিত্তি করে পিএসসি নির্বাসনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সেই কারণগুলি লিখিত আকারে জানানো হয়েছে কি না । ফেডারেশন এক্ষেত্রে নেতিবাচক উত্তর দেয় । তখনই আদালত জানতে চায়, কোনও কারণ ছাড়াই কীভাবে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হল ? আরও জানা গিয়েছে, শাস্তির বিরুদ্ধে পালটা আবেদনের কথাও সেই রায়ে উল্লেখ ছিল না । ফলে স্থগিতাদেশ দিতে আদালত দেরি করেনি । তারপরেই লাল-হলুদ সমর্থকরা সমাজমাধ্যমে একের পর এক পোস্ট করতে থাকেন । কারণ আনোয়ারের আইএসএলে খেলতে তখন কোনও বাধা ছিল না । এক্স পোস্ট করেন দিল্লি এফসির কর্ণধার রঞ্জিত বজাজও । তিনি লেখেন, “টাকা এবং ক্ষমতা সবসময় জিততে পারে না । আদালতের উপরে সর্বদা ভরসা রাখা উচিত ।”
তখনও নাটকের বাকি ছিল । মধ্যাহ্নভোজের বিরতির পরের শুনানিতে আদালত নির্দেশ দেয়, ফেডারেশনের নির্বাসনের সিদ্ধান্ত যেহেতু বাতিল করে দেওয়া হয়েছে, তাহলে তাদের তরফে দেওয়া এনওসিও খারিজ করে দেওয়া হোক । সেই সঙ্গেই পিএসসিকে শনিবার ফের পুরো বিষয়টি শোনারও নির্দেশ দিয়েছে আদালত । ফলে ইস্টবেঙ্গলের সঙ্গে আনোয়ারের চুক্তিও আর বৈধ নয় । পুরো বিষয়ে ইস্টবেঙ্গলের তরফে সরকারিভাবে কিছু মন্তব্য করা হয়নি ।
শনিবারই ইস্টবেঙ্গল আইএসএলে বেঙ্গালুরু এফসির বিরুদ্ধে অভিযান শুরু করছে । কিন্তু সেসবকে ছাপিয়ে সকলের নজর এখন আনোয়ারের সিদ্ধান্তের দিকেই ৷ বৃহস্পতিবারই আনোয়ার কাণ্ডে দিল্লি হাইকোর্টে পিটিশন দাখিল করার কথা জানিয়েছিলেন ইস্টবেঙ্গলের অন্যতম শীর্ষকর্তা দেবব্রত সরকার । তাঁর বক্তব্য ছিল, নিয়ম মেনেই তিনদিনের মধ্যে আপিল কমিটির কাছে কাগজপত্র চেয়ে আবেদন করেছে ইস্টবেঙ্গল । সেই মতো দশদিনের মধ্যে যাবতীয় কাগজপত্র ইস্টবেঙ্গলকে পাঠাবে ফেডারেশন । তারপরে ফের পিটিশন করা হবে লাল-হলুদের তরফে । এই দীর্ঘ প্রক্রিয়া চলাকালীন আনোয়ারের যাতে খেলতে কোনও অসুবিধা না-হয়, সেই কারণেই ফেডারেশনের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে স্থগিতাদেশ চাওয়া হয়েছে । রাতে ফের মোহনবাগানের তরফে এএফসি ও ফেডারেশনের নিয়ম ভাঙার কথা বলে চিঠি দেওয়া হয় । সেই চিঠিতে সবুজ-মেরুনের তরফে ইস্টবেঙ্গল, দিল্লি এফসি এবং আনোয়ারকে কড়া শাস্তি দেওয়ার কথাও বলা হয়েছে ।