কলকাতা, 13 ফেব্রুয়ারি: ছয় নম্বর ম্যাচে হারের ধাক্কা । আর তাতেই অনেকটা নিষ্প্রভ মশাল । কয়েকদিন আগে যে মশালের তেজ সমীহ আদায় করে নিচ্ছিল, এখন তা সমালোকদের তীক্ষ্ণ নজরে । চোট ও কার্ড সমস্যায় চার বিদেশি নিয়ে খেলতে নেমে প্রশ্ন চিহ্নের মুখে কার্লেস কুয়াদ্রাতের দল। আইএসএলে মঙ্গলবার যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনে ইস্টবেঙ্গলের সামনে মুম্বই সিটি এফসি । এই দ্বৈরথ মানেই চোখে চোখ রেখে লড়াই । কিন্তু যার ওপর ভরসা করে প্রতিপক্ষকে চ্যালেঞ্জ ছোঁড়া যায়, চোখ পাকানো যায়, সেই ডাগ-আউটেই সমস্যা।
ক্লেটন সিলভা কার্ডের কারণে এই ম্যাচে নেই । চোটের কারণে ছিটকে গিয়েছেন সওল ক্রেসপো । তবে তা দীর্ঘমেয়াদি নয় । ফলে কিছুটা স্বস্তি লাল হলুদে । জর্ডন এলসের পরে ক্রেসপোর চোট যদি বড়সড় ধাক্কা দিত তাহলে কুয়াদ্রাতের সমস্যা বাড়ত । পার্দোর চোট । তিনি খেলবেন কি না, তা কুয়াদ্রাত প্র্যাকটিসে দেখে সিদ্ধান্ত নেবেন । এই অবস্থায় আশার আলো শৌভিক চক্রবর্তীর কার্ড সমস্যা কাটিয়ে ফিরে আসা। মুম্বইয়ের আক্রমণ বিপিন, আপুইয়া ছাঙতেদের দৌড় থামাতে এবং নাগুয়েরা তিরিদের দাপট খর্ব করতে দলগত লড়াই ভরসা কুয়াদ্রাতের । প্রেটকাটকির দলে মেহতাব সিং মঙ্গলবারের ম্যাচে নেই । অনিশচয়তা পেরেরা দিয়াজ এবং ভ্যান নিফকে ঘিরে । লাল-হলুদ প্রফেসর অবশ্য প্রতিপক্ষ দলের দিকে না-তাকিয়ে নিজের দলের পাওয়া ও না-পাওয়ার তালিকায় চোখ রেখে ছক কষতে চান ।
নবাগত ভিক্টর ভাসকুয়েজ এবং ফেলিসিও ব্রাউনের ফুটবল নৈপুন্যে আস্থা রাখছেন কুয়াদ্রাত । জার্মানির বয়সভিত্তিক জাতীয় দলে প্রতিনিধিত্ব করা এবং কোস্টারিকার জাতীয় দলের সদস্য ব্রাউন বলছেন, টাইম জোনের সমস্যা থাকলেও তা কাটিয়ে উঠতে চান । প্রথম ম্যাচে গোল তাঁকে তৃপ্তি দিলেও দলের হারের জন্য অখুশি । তাই ঘরের মাঠে ফের গোল করে সমর্থকদের খুশি করাকেই পাখির চোখ করছেন তিনি । কুয়াদ্রাত বলছেন, ক্রেসপো এবং পার্দো টানা খেলে চলেছে । ফলে চোট আঘাত সমস্যা স্বাভাবিক । কারণ ফুটবলাররাও মানুষ । তাই আগামী 10 ম্যাচকে ফাইনাল খেলার মত গুরুত্ব দিতে চান ইস্টবেঙ্গল কোচ । তবে সেই গুরুত্ব প্রতিপক্ষের বিচারে ভিন্ন হবে ।
আগেও আইএসএল ক্রীড়াসূচির দিকে আঙুল তুলেছিলেন কুয়াদ্রাত । এ দিনও তাই করলেন । ন'টি ম্যাচ অল্প সময়ের ব্যবধানে খেলতে হচ্ছে বলে ক্ষুব্ধ তিনি । তবে অজুহাত খাড়া না-করে রোটেশন পদ্ধতিতে ফুটবলারদের ব্যবহার করে চোট আঘাতের থেকে বাঁচাতে চান । তাই মঙ্গলবার ইস্টবেঙ্গলের একাদশে একাধিক বদলের ইঙ্গিত দিলেন লাল-হলুদ কোচ।
কুয়াদ্রাত মনে করেন, ডাগ-আউটে যাঁরা থাকেন তাঁরা সকলেই যোগ্য । তাই এবার তাঁদের মেলে ধরার সময় । বিশেষ করে লালচুনুঙ্গার পারফরম্যান্সে যে তিনি অখুশি তা গোপন করছেন না ইস্টবেঙ্গল কোচ । এর জন্য ভারতীয় দলের প্রস্তুতিকে দায়ী করছেন তিনি । আপাতত ভারতীয় ডিফেন্ডারকে পুরানো ছন্দে ফেরানো লক্ষ্য কুয়াদ্রাতের । সব মিলিয়ে সমস্যা কাটিয়ে জয়ের কড়ি তুলতে চান । কারণ, তা না-হলে সুপার সিক্সের স্বপ্ন অধরা থেকে যাবে ইস্টবেঙ্গলের । মাত্র দুটো জয়ে শেষ ছয়ের টিকিট আসবে না । তাই নতুনভাবে টার্গেট সাজাচ্ছেন লাল-হলুদ চাণক্য ।
আরও পড়ুন: