কল্যাণী, 18 নভেম্বর: রবি হাঁসদা আর মনোতোষ মাঝির জোড়া হ্যাটট্রিকে সোমবার গোলের উৎসব কল্যাণীতে । সন্তোষ ট্রফির দ্বিতীয় ম্যাচে প্রতিপক্ষ উত্তরপ্রদেশকে 7-0 গোলে দুমড়ে দিয়ে পরের পর্বে কার্যত পৌঁছে গেল বাংলা। রবি হাঁসদা হ্যাটট্রিক-সহ চার গোল এবং মনোতোষ মাঝির তিন গোলে এল বাংলার দাপুটে জয় ।
ঝাড়খণ্ডের পর উত্তরপ্রদেশ, সঞ্জয় সেনের ছেলেরা যেন অশ্বমেধের ঘোড়া। বুধবার বাংলার প্রতিপক্ষ বিহার। দুই ম্যাচে গোলের সুনামির পর সঞ্জয় সেন বলছেন, বিহার ম্যাচে তিন পয়েন্টই পাখির চোখ। আপাতত মূল পর্বে জায়গা নিশ্চিত হওয়ার পরে যাবতীয় পরিকল্পনা পরিস্থিতি বুঝে ঘুঁটি সাজাবেন ।
ঝাড়খণ্ডের বিরুদ্ধে দুটো গোলের পরে উত্তরপ্রদেশের বিরুদ্ধে চার গোল রবি হাঁসদার । কৃষক পরিবারের ছেলে রবি মাস চারেক আগে বাবাকে হারিয়েছেন । ছেলেকে ফুটবলার হওয়ার জন্য উৎসাহিত করেছিলেন বাবা । বাংলার জার্সিতে এই দাপুটে পারফরম্যান্স রবির বাবা দেখে যেতে পারেননি। নিয়মিত গোল করে ভবানীপুরের স্ট্রাইকার রবি যেন তাঁর প্রয়াত বাবাকেই শ্রদ্ধার্ঘ্য দিচ্ছেন । ছোট্ট মেয়েকে নিয়ে রবির স্ত্রী কল্যাণী স্টেডিয়ামে এসেছিলেন । উদ্দেশ্য রবিকে চমক দেওয়া । চার গোলের আনন্দের মধ্যে স্ত্রী এবং মেয়েকে দেখে আপ্লুত ম্যাচের নায়ক ।
সঞ্জয় সেন টিম মিটিংয়ে বলেছিলেন, বিরতির আগে ম্যাচের ভাগ্য নির্ধারণ করে ফেলতে । কোচের কথায় মান্যতা দিতে বিরতির আগে বাংলা পাঁচ গোলে এগিয়ে যায় । আট মিনিটে চাকু মান্ডির পাস থেকে প্রথম গোল রবি মাঝির। বিক্রম প্রধানের সেন্টার থেকে মনোতোষ মাঝি গোলের সময় ম্যাচের বয়স 11 মিনিট । ইসরাফিল দেওয়ান বাঁ দিক ঢুকে ব্যাকসেন্টার করলে ফের গোল মনোতোষের । 16 মিনিটের মধ্যে তিন গোল হয়ে যাওয়ার পরেই বোঝা গিয়েছিল ফের বড় ব্যবধানে জিততে চলেছে বাংলা। এই সময় বাংলার আক্রমণ কার্যত বিনা বাধায় উত্তরপ্রদেশ রক্ষণে চলে আসছিল । ফলশ্রুতিতে 32 মিনিটে ফের গোল বাংলার । আবু সুফিয়ানের শট উত্তরপ্রদেশ গোলরক্ষক বাঁচলেও ফিরতি বল গোলে পাঠান রবি ।
36 মিনিটে পঞ্চম গোল বাংলার, মনোতোষ মাঝির হ্যাটট্রিক সম্পূর্ণ ।
দ্বিতীয়ার্ধে গোল সংখ্যা কতটা বাড়তে পারে তা নিয়ে তখন মাঠে উপস্থিত আইএফএ কর্তা-ব্যক্তিরা আলোচনায় ব্যস্ত । মনোতোষের হ্যাটট্রিকের সঙ্গে পাল্লা দিতেই বোধহয় বিরতির পরে রবি হাঁসদার আরও দুটি গোল করেন। নব্বই মিনিটে মোট চার গোল করে ম্যাচের নায়ক তিনি । সোমবার অন্য ম্যাচে ঝাড়খণ্ড 5-3 গোলে বিহারকে হারানোয় বাংলার কাজ সহজ হয়ে যায়। যদিও সঞ্জয় সেন বলছেন, চাপ কমলেও রাশ হালকা করতে তাঁরা নারাজ ।