কলকাতা, 3 মার্চ: লোকসভা নির্বাচনের আগেই দলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষকে নিয়ে চরম অস্বস্তিতে রাজ্যের শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেস । একের পর এক বক্তব্যে যেভাবে দলীয় শিষ্টাচার এবং অনুশাসনের উপর প্রশ্নচিহ্ন তুলে দিচ্ছেন তিনি, তাতে তৃণমূল কংগ্রেসের শীর্ষ নেতৃত্ব যথেষ্টই ক্ষুব্ধ । ফলে তাঁকে শো-কজ করা হবে কি না, তা নিয়ে জল্পনা শুরু হয়েছে ৷
প্রসঙ্গত, যেভাবে প্রথমে কুণাল ঘোষ এবং পরবর্তীতে দলের বিধায়ক তথা মুখপাত্র তাপস রায় সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়কে আক্রমণ করেছেন, তাতে দলের শীর্ষ নেতৃত্ব বিষয়টিকে আদৌ ভালোভাবে দেখছে না । ইতিমধ্যেই কুণাল ঘোষ দলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক এবং মুখপাত্র পথ থেকে ইস্তফা দিয়েছেন । এই অবস্থায় দল মুখপাত্রের পদে ইস্তফা গ্রহণ করে একটা বার্তা দেওয়ার চেষ্টা করেছে । কিন্তু এরপরেও যদি কুণাল ঘোষ নিজের অবস্থান বদল না করেন, সে ক্ষেত্রে তাঁর বিরুদ্ধে কী বড় ব্যবস্থা নেওয়া হবে, সেটাই এখন রাজনৈতিক মহলে বড় চর্চার বিষয় ।
তৃণমূল কংগ্রেসের অন্তরে কান পাতলে বিষয়টি নিয়ে দুটি ভিন্নমত পাওয়া যাচ্ছে । একাংশ ঘরোয়া আলোচনায় বলছেন, দলে গণতন্ত্র রয়েছে এই ঘটনা তারই প্রমাণ । একইসঙ্গে, তারা এও বলছে আসলে সমস্ত টাই কংগ্রেসী কালচার । কিন্তু এর প্রভাব নির্বাচনে বা ভোটের প্রচারে পড়বে না । যদিও পুরনো নেতৃত্বের একাংশ কুণাল ঘোষের একতরফা আক্রমণকে ভালো চোখে দেখছে না । পুরনোদের কেউ কেউ বিষয়টিতে মন্তব্য করবেন না বলে এড়িয়ে গেলেও একটা অংশ বলছেন, এভাবে ব্যক্তিগত আক্রমণ না করলেও পারতেন কুণাল ঘোষ ।
তৃণমূল সূত্রে খবর, দলের প্রাক্তন মুখপাত্রের আচরণে যথেষ্টই ক্ষুব্ধ দলনেত্রী । বিশেষ করে এমন একজন মানুষ যিনি দীর্ঘদিন ধরে দলের মুখ হিসাবে কাজ করছেন তিনি এভাবে মুখ খোলায় দল যে অস্বস্তিতে পড়েছে, তাতে কোনও সন্দেহ নেই । সবচেয়ে বড় কথা, যাঁকে নিয়ে সমালোচনা করা হচ্ছে সেই সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় রবিবার সকাল পর্যন্ত একটি শব্দও সংবাদমাধ্যমে খরচ করেননি ।
এমনকি সংবাদ মাধ্যমের তরফ থেকে তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা হলেও তিনি সংবাদমাধ্যমের সংস্পর্শ এড়িয়ে গিয়েছেন । আর এই বিষয়টি আরও বেশি করে বিরুদ্ধে যাচ্ছে প্রাক্তন তৃণমূল মুখপাত্রের । ব্যক্তিগত ক্ষোভ বিক্ষোভ জানানোর জন্য দলের অন্দরে এমন অনেক জায়গা রয়েছে যেখানে এগুলি বলা যেত । তা না করে সোশাল মিডিয়ায় খোলাখুলি আক্রমণ কুণাল ঘোষের বিরুদ্ধে যাচ্ছেন বলে মনে করছেন তৃণমূল কংগ্রেসের প্রবীণ নেতৃত্বের একাংশ । নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক তৃণমূল নেতা জানিয়েছেন, এসব লোকসভা নির্বাচনের মুখে প্রকাশ্যে না হলেই ভালো হত । দলনেত্রী এসব ভালো চোখে দেখছেন না। আর সেখান থেকেই উঠছে প্রশ্ন, যদি কুণাল ঘোষ এখানেই না থামেন তাহলে কি পরবর্তী পদক্ষেপ শো-কজ !
আরও পড়ুন: