ETV Bharat / politics

খাড়গের একের পর এক তিরে বিদ্ধ মোদি, নীরব মমতায় - Lok Sabha Election 2024

Mallikarjun Kharge in Malda: শেষ লগ্নের প্রচারে মালদায় এলেন কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গে ৷ সভা থেকে একের পর এক তিরে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে বিদ্ধ করলেও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রসঙ্গে নীরব থাকলেন তিনি ৷

Lok Sabha Election 2024
মালদায় মল্লিকার্জুন খাড়গে (নিজস্ব ছবি)
author img

By ETV Bharat Bangla Team

Published : May 5, 2024, 7:50 PM IST

মোদিকে নিশানা করলেন খাড়গে (নিজস্ব ছবি)

মালদা, 5 মে: অবশেষে প্রচারের শেষ দিন কংগ্রেস প্রার্থীদের সমর্থনে এআইসিসির কোনও শীর্ষস্থানীয় নেতা মালদায় এলেন ৷ কথা ছিল, মালদার দুই কংগ্রেস প্রার্থী ইশা খান চৌধুরী ও মোস্তাক আলমের সমর্থনে রবিবার প্রচারে আসবেন প্রিয়াঙ্কা গান্ধি বঢরা ৷ কিন্তু রায়বেরিলিতে ব্যস্ত থাকায় তিনি মালদায় আসতে পারেননি ৷ রবিবার সুজাপুর বিধানসভা কেন্দ্রের হাতিমারি ময়দানে সেই নির্বাচনী জনসভা করলেন জাতীয় কংগ্রেসের সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গে ৷ মঞ্চে ছিলেন জাতীয়, প্রদেশ ও জেলার একাধিক কংগ্রেস নেতা ৷ এ দিন বক্তব্যের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত বিজেপি ও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে নিশানা করতে শোনা গেল খাড়গেকে ৷ তবে তৃণমূল নিয়ে একটিও মন্তব্য করলেন না তিনি ৷

প্রবল গরমের মধ্যেও এ দিন খাড়গের সভায় উপস্থিত হয়েছিলেন সুজাপুর এলাকার কংগ্রেস সমর্থকরা ৷ তাঁর বক্তব্যে অবধারিতভাবে চলে আসে গনি খান প্রসঙ্গ ৷ কংগ্রেস সভাপতি বলেন, "ইন্দিরা গান্ধির আমলে ব্যাংকের রাষ্ট্রীয়করণ হয়েছিল ৷ গ্রামের গরিব মানুষ থেকে শুরু করে কৃষকদের কথা ভেবেই সেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল ৷ সেই সময় বরকতদা মালদার গ্রামে গ্রামে রাষ্ট্রীয় ব্যাংকের শাখা খুলেছিলেন ৷ গরিব মানুষকে ঋণ দেওয়ার ব্যবস্থা করেছিলেন ৷ তখন আরএসএস-বিজেপি এর বিরোধিতা করেছিল ৷ তারা প্রচার করেছিল, কংগ্রেস গরিবের সম্পত্তি এভাবে দখল করছে ৷ কিন্তু এই ব্যবস্থায় সুদখোরদের রাজত্বের অবসান ঘটেছিল ৷ এসব ইন্দিরা-গনি খানের সময়েই হয়েছিল ৷"

তাঁর কথায়, "বরকত সাহেব কেন্দ্রে রেল, সেচ, কয়লা ও বিদ্যুৎ মন্ত্রী ছিলেন ৷ বরকতদা এই রাজ্যের মানুষের জন্য প্রচুর কাজ করেছিলেন ৷ কলকাতায় চক্র রেল আর দেশের প্রথম মেট্রো তাঁরই দান ৷ কিন্তু এখন কেউ কেউ এসব কাজ নিজের বলে দাবি করছে ৷ আসলে আমরা যা করেছি, অন্যরা তা উপভোগ করছে ৷ আর মোদিজি এমনভাবে কথা বলেন তাতে মনে হয় 2014 সালে দেশ স্বাধীন হয়েছে ৷"

খাড়গে দাবি করেন, "অন্য দলে গিয়ে মৌসম নূরের সমস্যা বেড়ে গিয়েছে ৷ তিনি দল ছাড়তে চাইছেন ৷ আমরা এখনও চুপ করে বসে আছি ৷ আমরা যদি ক্ষমতায় না আসি, তবে এই দেশে গণতন্ত্র শেষ হয়ে যাবে ৷ সংবিধানও শেষ হয়ে যাবে ৷ সেটা হলে বিপদ ৷ মোদি ফের প্রধানমন্ত্রী হলে দেশের সর্বনাশ ৷ দেশে স্বৈরতন্ত্র চালু হয়ে যাবে ৷ হিন্দু-মুসলিমের ভাতৃত্ববোধ নষ্ট হয়ে যাবে ৷ মোদি বলছেন, কংগ্রেস ক্ষমতায় এলে নাকি হিন্দুদের সম্পত্তি মুসলিমদের হাতে চলে যাবে ৷ এসব কথা যে বলে, তার হাতে কি দেশ সুরক্ষিত থাকবে? মালদায় কাজ করার অনেক জায়গা রয়েছে ৷"

জাতীয় কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সভাপতি বলেন, "কংগ্রেসের আমলেই মালদার উন্নতি হয়েছিল ৷ সোনিয়া গান্ধির আমলেই মনরেগা প্রকল্প চালু হয়েছিল ৷ মনমোহন সিং আর সোনিয়া গান্ধি ফু়ড সিকিউরিটি অ্যাক্ট এনেছিলেন ৷ বিনা পয়সায় গরিব মানুষকে খাবার দেওয়া হয়েছিল ৷ মোদি বলতে পারবেন, তিনি মানুষের জন্য কী কী প্রকল্প চালু করেছেন? তিনি গরিব মানুষকে পায়ে চিপে মারতে চান ৷ এই দেশের মাত্র 22 জনের হাতে 70 কোটি দেশবাসীর সঞ্চিত অর্থ রয়েছে ৷ এরা মানুষের উপকার করবে ! এদের ভোট দিয়ে ভোট নষ্ট করবেন না ৷ আমাদের দল কন্যাকুমারী থেকে কাশ্মীর, বাংলা থেকে গুজরাত পর্যন্ত বিস্তৃত ৷"

এ দিন মল্লিকার্জুন খাড়গে তৃণমূল নিয়ে নীরব থাকলেও তাঁর গলায় আজ ছিল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছোঁয়া ৷ মমতার মতো মল্লিকার্জুনও কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে প্রতি অ্যাকাউন্টে 15 লক্ষ টাকা, বছরে দু'কোটি চাকরি, কৃষকদের দ্বিগুন আয়, রাজনীতিতে ধর্মের ভেদাভেদ, নিজের রুচির খাবার খাওয়া, পোশাক পরা প্রভৃতি বিষয়ে সরব হয়েছেন ৷ সম্ভবত ইন্ডিয়া জোটের বাধ্যবাধকতায় বলে রাজনৈতিকমহলের মত ৷

আরও পড়ুন:

  1. সোনিয়ার রায়বরেলিতে প্রার্থী রাহুল, মনোনয়ন জমা দিলেন ‘যুবরাজ’
  2. ভোটে লড়ার টাকা নেই, টিকিট ফিরিয়ে দিলেন পুরীর কংগ্রেস প্রার্থী

মোদিকে নিশানা করলেন খাড়গে (নিজস্ব ছবি)

মালদা, 5 মে: অবশেষে প্রচারের শেষ দিন কংগ্রেস প্রার্থীদের সমর্থনে এআইসিসির কোনও শীর্ষস্থানীয় নেতা মালদায় এলেন ৷ কথা ছিল, মালদার দুই কংগ্রেস প্রার্থী ইশা খান চৌধুরী ও মোস্তাক আলমের সমর্থনে রবিবার প্রচারে আসবেন প্রিয়াঙ্কা গান্ধি বঢরা ৷ কিন্তু রায়বেরিলিতে ব্যস্ত থাকায় তিনি মালদায় আসতে পারেননি ৷ রবিবার সুজাপুর বিধানসভা কেন্দ্রের হাতিমারি ময়দানে সেই নির্বাচনী জনসভা করলেন জাতীয় কংগ্রেসের সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গে ৷ মঞ্চে ছিলেন জাতীয়, প্রদেশ ও জেলার একাধিক কংগ্রেস নেতা ৷ এ দিন বক্তব্যের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত বিজেপি ও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে নিশানা করতে শোনা গেল খাড়গেকে ৷ তবে তৃণমূল নিয়ে একটিও মন্তব্য করলেন না তিনি ৷

প্রবল গরমের মধ্যেও এ দিন খাড়গের সভায় উপস্থিত হয়েছিলেন সুজাপুর এলাকার কংগ্রেস সমর্থকরা ৷ তাঁর বক্তব্যে অবধারিতভাবে চলে আসে গনি খান প্রসঙ্গ ৷ কংগ্রেস সভাপতি বলেন, "ইন্দিরা গান্ধির আমলে ব্যাংকের রাষ্ট্রীয়করণ হয়েছিল ৷ গ্রামের গরিব মানুষ থেকে শুরু করে কৃষকদের কথা ভেবেই সেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল ৷ সেই সময় বরকতদা মালদার গ্রামে গ্রামে রাষ্ট্রীয় ব্যাংকের শাখা খুলেছিলেন ৷ গরিব মানুষকে ঋণ দেওয়ার ব্যবস্থা করেছিলেন ৷ তখন আরএসএস-বিজেপি এর বিরোধিতা করেছিল ৷ তারা প্রচার করেছিল, কংগ্রেস গরিবের সম্পত্তি এভাবে দখল করছে ৷ কিন্তু এই ব্যবস্থায় সুদখোরদের রাজত্বের অবসান ঘটেছিল ৷ এসব ইন্দিরা-গনি খানের সময়েই হয়েছিল ৷"

তাঁর কথায়, "বরকত সাহেব কেন্দ্রে রেল, সেচ, কয়লা ও বিদ্যুৎ মন্ত্রী ছিলেন ৷ বরকতদা এই রাজ্যের মানুষের জন্য প্রচুর কাজ করেছিলেন ৷ কলকাতায় চক্র রেল আর দেশের প্রথম মেট্রো তাঁরই দান ৷ কিন্তু এখন কেউ কেউ এসব কাজ নিজের বলে দাবি করছে ৷ আসলে আমরা যা করেছি, অন্যরা তা উপভোগ করছে ৷ আর মোদিজি এমনভাবে কথা বলেন তাতে মনে হয় 2014 সালে দেশ স্বাধীন হয়েছে ৷"

খাড়গে দাবি করেন, "অন্য দলে গিয়ে মৌসম নূরের সমস্যা বেড়ে গিয়েছে ৷ তিনি দল ছাড়তে চাইছেন ৷ আমরা এখনও চুপ করে বসে আছি ৷ আমরা যদি ক্ষমতায় না আসি, তবে এই দেশে গণতন্ত্র শেষ হয়ে যাবে ৷ সংবিধানও শেষ হয়ে যাবে ৷ সেটা হলে বিপদ ৷ মোদি ফের প্রধানমন্ত্রী হলে দেশের সর্বনাশ ৷ দেশে স্বৈরতন্ত্র চালু হয়ে যাবে ৷ হিন্দু-মুসলিমের ভাতৃত্ববোধ নষ্ট হয়ে যাবে ৷ মোদি বলছেন, কংগ্রেস ক্ষমতায় এলে নাকি হিন্দুদের সম্পত্তি মুসলিমদের হাতে চলে যাবে ৷ এসব কথা যে বলে, তার হাতে কি দেশ সুরক্ষিত থাকবে? মালদায় কাজ করার অনেক জায়গা রয়েছে ৷"

জাতীয় কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সভাপতি বলেন, "কংগ্রেসের আমলেই মালদার উন্নতি হয়েছিল ৷ সোনিয়া গান্ধির আমলেই মনরেগা প্রকল্প চালু হয়েছিল ৷ মনমোহন সিং আর সোনিয়া গান্ধি ফু়ড সিকিউরিটি অ্যাক্ট এনেছিলেন ৷ বিনা পয়সায় গরিব মানুষকে খাবার দেওয়া হয়েছিল ৷ মোদি বলতে পারবেন, তিনি মানুষের জন্য কী কী প্রকল্প চালু করেছেন? তিনি গরিব মানুষকে পায়ে চিপে মারতে চান ৷ এই দেশের মাত্র 22 জনের হাতে 70 কোটি দেশবাসীর সঞ্চিত অর্থ রয়েছে ৷ এরা মানুষের উপকার করবে ! এদের ভোট দিয়ে ভোট নষ্ট করবেন না ৷ আমাদের দল কন্যাকুমারী থেকে কাশ্মীর, বাংলা থেকে গুজরাত পর্যন্ত বিস্তৃত ৷"

এ দিন মল্লিকার্জুন খাড়গে তৃণমূল নিয়ে নীরব থাকলেও তাঁর গলায় আজ ছিল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছোঁয়া ৷ মমতার মতো মল্লিকার্জুনও কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে প্রতি অ্যাকাউন্টে 15 লক্ষ টাকা, বছরে দু'কোটি চাকরি, কৃষকদের দ্বিগুন আয়, রাজনীতিতে ধর্মের ভেদাভেদ, নিজের রুচির খাবার খাওয়া, পোশাক পরা প্রভৃতি বিষয়ে সরব হয়েছেন ৷ সম্ভবত ইন্ডিয়া জোটের বাধ্যবাধকতায় বলে রাজনৈতিকমহলের মত ৷

আরও পড়ুন:

  1. সোনিয়ার রায়বরেলিতে প্রার্থী রাহুল, মনোনয়ন জমা দিলেন ‘যুবরাজ’
  2. ভোটে লড়ার টাকা নেই, টিকিট ফিরিয়ে দিলেন পুরীর কংগ্রেস প্রার্থী
ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.