কলকাতা, 18 মে: প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীররঞ্জন চৌধুরীকে সংবাদমাধ্যমের মারফত শনিবার ভর্ৎসনা করেন কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গে ৷ এই নিয়ে ‘খুশি’ ঘাসফুল শিবির ৷ তৃণমূল কংগ্রেস নেতা কুণাল ঘোষ বলেন, ‘‘এই কড়া কথাটাই আগে বলার দরকার ছিল ।’’
পুরো বিতর্কের সূত্রপাত তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের একটি মন্তব্যকে কেন্দ্র করে ৷ সম্প্রতি একটি নির্বাচনী জনসভা থেকে তিনি জানিয়েছিলেন যে কেন্দ্রে ‘ইন্ডিয়া’র সরকার তৈরি হলে বাইরে থেকে সমর্থন করবে তৃণমূল কংগ্রেস ৷ পরে অবশ্য মমতা জানান যে তাঁর মন্তব্যের ভুল ব্যাখ্যা করা হয়েছে ৷ তিনি ও তাঁর দল জাতীয়স্তরে ‘ইন্ডিয়া’র সঙ্গেই রয়েছেন ৷
এই বিষয়টি নিয়ে মমতার সমালোচনা করেছিলেন অধীর চৌধুরী ৷ শনিবার অধীরের এই অবস্থানের প্রেক্ষিতে প্রশ্ন করা হয় মল্লিকার্জুন খাড়গেকে ৷ তিনি বলেন, ‘‘জোট নিয়ে সিদ্ধান্ত অধীর চৌধুরী নেবেন না । সিদ্ধান্ত নেব আমরা । তাঁর দায়িত্ব এই সিদ্ধান্ত পালন করার । যদি তিনি তা করতে পারেন তবে তিনি থাকবেন, না হলে তিনি বাইরে যাবেন ।’’ তাই এখন অধীর সম্পর্কে দিল্লির কংগ্রেসের অবস্থানকে বিলম্বিত বোধোদয় বলছেন কুণাল ।
এ দিন কুণাল ঘোষ বলেন, ‘‘দিল্লির কংগ্রেস আর পশ্চিমবঙ্গের কংগ্রেসের ভূমিকা যে আলাদা একথা আমাদের জননেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বারবার বলেছেন । তিনি খুব স্পষ্টভাবে বলেছেন, দিল্লির কংগ্রেস এক ভূমিকা পালন করছে আমরা দেখছি আর রাজ্যের কংগ্রেস অন্য ভূমিকা পালন করছে । অধীর চৌধুরীর নেতৃত্বে রাজ্যের কংগ্রেস তৃণমূল কংগ্রেসকে আক্রমণ করতে গিয়ে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে আক্রমণ করতে গিয়ে, আদতে বিজেপিকে অক্সিজেন দেওয়ার কাজ করছে । সেই কারণেই তিনি জানিয়েছিলেন এই রাজ্যে অন্তত বাংলার কংগ্রেস ও বাংলার সিপিএমের সঙ্গে কোনও জোট নেই । এ রাজ্যে যদি কেউ বিজেপির সঙ্গে লড়াই করে সেটা তৃণমূল ।’’
কুণাল ঘোষ আরও বলেন, ‘‘আজ মল্লিকার্জুন খাড়গে যে কথা বলেছেন, সেটা তাদের দলের অভ্যন্তরীণ বিষয় ৷ তা নিয়ে আমার কিছু বলার নেই । সেখানে তিনি বলছেন, তৃণমূল কংগ্রেস জোটে আছে । মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তো এই কথা বারবার বলেছেন । ছিলাম, আছি, থাকব । এটা তো আমারই নাম দেওয়া জোট । সেখানে আমরা দেখলাম খাড়গেজি অধীর চৌধুরী সম্পর্কে একটা কথা বললেন । এ প্রসঙ্গে আমার বক্তব্য, এই যে বাংলা কংগ্রেস বারবার বিজেপিকে অক্সিজেন দিয়েছে, বারবার তৃণমূল কংগ্রেসকে আক্রমণ করেছে... যে তৃণমূল বিজেপির সঙ্গে লড়ছে । 2021 সালেই এ রাজ্যে কংগ্রেস শূন্য হয়ে গিয়েছিল । দিল্লির উচিত ছিল অনেক আগেই প্রদেশের নেতাদের একটা কড়া বার্তা দেওয়া । কড়া মনোভাব আরও আগে দেখানোর উচিত ছিল ।’’
কুণাল বলেন, ‘‘আজ বলেছেন ঠিক আছে ৷ কিন্তু এমন কড়া বার্তা যখন নির্বাচনী পরিমণ্ডলটা তৈরি হচ্ছিল, তখনই দেওয়া প্রয়োজন ছিল । ফলে যা বলেছেন ঠিক আছে, অনেক বিলম্বিত বোধোদয় ।’’
আরও পড়ুন: