ETV Bharat / politics

জলপাইগুড়িতে ভোটের ইস্যু ‘বাংলাদেশ’! তেঁতুলিয়া করিডর চালুর প্রতিশ্রুতি বিজেপির জয়ন্ত রায়ের - Lok Sabha Election 2024 - LOK SABHA ELECTION 2024

Lok Sabha Election 2024: জলপাইগুড়ি লোকসভা আসনে বিজেপি আবার প্রার্থী করেছে জয়ন্তকুমার রায়কে ৷ 2019 সালের ভোটে তিনি ভারত ও বাংলাদেশের হলদিবাড়ি-চিলাহাটি রেলপথ চালু করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন ৷ ভোটে জিতে সেই প্রতিশ্রুতি পালনও করেন তিনি ৷ এবার বাংলাদেশের তেঁতুলিয়া করিডর দিয়ে ভারতের দুই অংশকে জোড়ার প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন ৷

Lok Sabha Election 2024
জলপাইগুড়িতে ভোটের ইস্যু তেঁতুলিয়া করিডর
author img

By ETV Bharat Bangla Team

Published : Mar 28, 2024, 5:42 PM IST

Updated : Apr 3, 2024, 4:25 PM IST

জলপাইগুড়িতে ভোটের ইস্যু বাংলাদেশ

জলপাইগুড়ি, 28 মার্চ: লোকসভা নির্বাচনে জলপাইগুড়িতে বিজেপির ভোট প্রচারের ইস্যু ‘বাংলাদেশ’ । গতবার বিজেপির প্রচারের ইস্যু ছিল বাংলাদেশের সঙ্গে যোগাযোগে হলদিবাড়ি-চিলাহাটি রেলপথ । এবারের ইস্যু বাংলাদেশের তেঁতুলিয়া করিডর ।

2019 সালে লোকসভা নির্বাচনের বিজেপি প্রার্থী জয়ন্তকুমার রায়ের ভোট প্রচারের ইস্যু ছিল ভারত ও বাংলাদেশের মধ্য়ে হলদিবাড়ি-চিলাহাটি রুটে রেলপথ চালু করা । সাংসদ হয়ে সেটা বাস্তবায়িত করেছেন তিনি । নিউ জলপাইগুড়ি থেকে ঢাকা পর্যন্ত চলছে মিতালি এক্সপ্রেস । এবার বিজেপি প্রার্থী মূল ইস্যু করছেন ভারত থেকে বাংলাদেশের উপর দিয়ে তেঁতুলিয়া করিডর চালু করা । বিজেপি প্রার্থী জয়ন্তকুমার রায়ের দাবি, তেঁতুলিয়া করিডর হয়ে গেলে জলপাইগুড়ি থেকে কলকাতার দূরত্ব অনেক কমে যাবে ।

উল্লেখ্য, 1965 সাল থেকে বন্ধ হয়ে যাওয়া ভারত-বাংলাদেশের হলদিবাড়ি-চিলাহাটি রেলপথটি চালুর দাবি ছিল দীর্ঘদিনের ।2019 সালে বিজেপি প্রার্থী হয়ে জয়ন্ত রায় ওই রেলপথ চালুর প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন ৷ ভোটে জিতে প্রতিশ্রুতি পূরণ করেন তিনি ৷ স্থানীয় মানুষের আশা তিনি এবারও ভোটে জিতলে কথা রাখবেন ৷ চালু করবেন ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে দিয়ে তেঁতুলিয়া করিডর ৷

Lok Sabha Election 2024
জলপাইগুড়িতে প্রচারে বিজেপি প্রার্থী তথা সাংসদ জয়ন্তকুমার রায়৷

ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে জলপাইগুড়ি জেলার রাজগঞ্জ ব্লকের চাউলহাটি বর্ডার থেকে শুরু তেঁতুলিয়া করিডরের । এই করিডর ভারতের উত্তর দিনাজপুর জেলার চোপড়াতে গিয়ে জুড়বে । মাঝে থাকবে বাংলাদেশের তেঁতুলিয়া উপজেলার মধ্য দিয়ে 4.2 কিলোমিটার রাস্তা ৷ এর করিডর বাস্তবায়িত হলেই উত্তর-পূর্ব ভারত থেকে কলকাতার দূরত্ব কমবে ৷ জলপাইগুড়ি থেকে এখন কলকাতার দূরত্ব 576 কিলোমিটার ৷ এই করিডর চালু হলে, তা হবে 388 কিলোমিটার হয়ে যাবে ।

এর অর্থ 188 কিলোমিটার দূরত্ব কমে যাবে । ফলে কয়েক ঘণ্টা সময় বাঁচবে । গাড়ির জ্বালানি কমবে । পরিবহণ খরচও কমে যাবে । জলপাইগুড়ি-সহ পাশ্ববর্তী এলাকার আর্থ সামাজিক উন্নয়ন যেমন হবে, তেমনই সুবিধাও হবে । বর্তমানে শিলিগুড়ি ভৌগলিক কারণে উন্নত হয়েছে । এই করিডর চালু হলে ভারতের হাজার হাজার কোটি টাকা সাশ্রয় হবে । তাছাড়া এশিয়ান ডেভলপমেন্ট ব্যাংকের টাকায় বাংলাদেশ, ভুটান, নেপাল ও ভারতের মধ্যে একটি করিডর হচ্ছে । তেঁতুলিয়ার অংশ এতে যুক্ত হলে, তা আরও কার্যকরী হবে ৷

প্রসঙ্গত, ইন্দিরা-মুজিব চুক্তি অনুযায়ী বাংলাদেশের দহগ্রাম পাটগ্রামের মধ্যে যোগাযোগ সহজ করার জন্য ভারতের তিনবিঘা করিডর বাংলাদেশের মানুষকে ব্যবহারের জন্য দেওয়া হয়েছে । 2011 সালে ভারতের তিনবিঘা করিডর বাংলাদেশের মানুষকে 24 ঘণ্টার ব্যবহারের জন্য খুলে দেওয়া হয়েছে । তিনবিঘা করিডর দিয়েই দুই অংশের মানুষের যাতায়াত করছেন । তিনবিঘা করিডর ভারত না দিলে বাংলাদেশের এই অংশের মানুষের যাতায়াত বন্ধ হয়ে যেত ।

এর প্রেক্ষিতেই এই তেঁতুলিয়া করিডর চালুর দাবি 1980 সাল থেকে উঠছে ৷ সেটা জানেন বলেই ভোট প্রচারে এই ইস্যুটিকে বারবার তুলে ধরছেন জয়ন্ত রায় ৷ তিনি বলেন, ‘‘তেঁতুলিয়া করিডর নিয়ে ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে আলোচনা চলছে । এবার বাংলাদেশের তেঁতুলিয়া করিডর দিয়ে রেলপথ যদি একটা করা যায়, তার কথাও চলছে । কলকাতা থেকে জলপাইগুড়ির রাস্তা যেমন কমে যাবে, তেমন সময়ও বাঁচবে । উত্তর-পূর্ব ভারতের সঙ্গে যোগাযোগ আরও সহজ হবে । শিলিগুড়ির উপর আর ভরসা করতে হবে না । বিকল্প একটা পথ তৈরি হবে ।’’

এই নিয়ে স্থানীয় গাড়ি চালক অবিনাশ দাস বলেন, ‘‘তেঁতুলিয়া করিডোর চালু হলে আমাদের রোজগার বাড়বে । ভাড়া বেশি হবে। ট্রেনের স্টপেজ বাড়বে ।’’ আর এই কাজ সাংসদ জয়ন্ত রায়ের হাত ধরেই সম্ভব বলে মনে করছেন জলপাইগুড়ির প্রবীণ নাগরিক প্রদীপ গঙ্গোপাধ্যায় ৷ তাঁর কথায়, ‘‘এর আগে হলদিবাড়ি-চিলাহাটি রেলপথ জয়ন্ত রায়ের আমলেই হয়েছে ।তেঁতুলিয়া করিডর হলে উত্তর দিনাজপুরের লাভ হবে ৷ যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নত হলে এলাকায় উন্নতি হবে । রানিনগর থেকে এই রেলপথটি ঘুরিয়ে দিলে অসম ও ত্রিপুরার সঙ্গে যোগাযোগ আরও সহজ হবে ।’’

আরও পড়ুন:

  1. সিএএ কার্যকর হওয়ায় জলপাইগুড়িতে মতুয়াদের উৎসবে অংশ নিলেন বিজেপি সাংসদ
  2. দু’টো বন্দে ভারত এক্সপ্রেস চলবে উত্তরবঙ্গ থেকে, রেলমন্ত্রীকে ধন্যবাদ বিজেপি সাংসদের
  3. দু’টো বন্দে ভারত এক্সপ্রেস চলবে উত্তরবঙ্গ থেকে, রেলমন্ত্রীকে ধন্যবাদ বিজেপি সাংসদের

জলপাইগুড়িতে ভোটের ইস্যু বাংলাদেশ

জলপাইগুড়ি, 28 মার্চ: লোকসভা নির্বাচনে জলপাইগুড়িতে বিজেপির ভোট প্রচারের ইস্যু ‘বাংলাদেশ’ । গতবার বিজেপির প্রচারের ইস্যু ছিল বাংলাদেশের সঙ্গে যোগাযোগে হলদিবাড়ি-চিলাহাটি রেলপথ । এবারের ইস্যু বাংলাদেশের তেঁতুলিয়া করিডর ।

2019 সালে লোকসভা নির্বাচনের বিজেপি প্রার্থী জয়ন্তকুমার রায়ের ভোট প্রচারের ইস্যু ছিল ভারত ও বাংলাদেশের মধ্য়ে হলদিবাড়ি-চিলাহাটি রুটে রেলপথ চালু করা । সাংসদ হয়ে সেটা বাস্তবায়িত করেছেন তিনি । নিউ জলপাইগুড়ি থেকে ঢাকা পর্যন্ত চলছে মিতালি এক্সপ্রেস । এবার বিজেপি প্রার্থী মূল ইস্যু করছেন ভারত থেকে বাংলাদেশের উপর দিয়ে তেঁতুলিয়া করিডর চালু করা । বিজেপি প্রার্থী জয়ন্তকুমার রায়ের দাবি, তেঁতুলিয়া করিডর হয়ে গেলে জলপাইগুড়ি থেকে কলকাতার দূরত্ব অনেক কমে যাবে ।

উল্লেখ্য, 1965 সাল থেকে বন্ধ হয়ে যাওয়া ভারত-বাংলাদেশের হলদিবাড়ি-চিলাহাটি রেলপথটি চালুর দাবি ছিল দীর্ঘদিনের ।2019 সালে বিজেপি প্রার্থী হয়ে জয়ন্ত রায় ওই রেলপথ চালুর প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন ৷ ভোটে জিতে প্রতিশ্রুতি পূরণ করেন তিনি ৷ স্থানীয় মানুষের আশা তিনি এবারও ভোটে জিতলে কথা রাখবেন ৷ চালু করবেন ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে দিয়ে তেঁতুলিয়া করিডর ৷

Lok Sabha Election 2024
জলপাইগুড়িতে প্রচারে বিজেপি প্রার্থী তথা সাংসদ জয়ন্তকুমার রায়৷

ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে জলপাইগুড়ি জেলার রাজগঞ্জ ব্লকের চাউলহাটি বর্ডার থেকে শুরু তেঁতুলিয়া করিডরের । এই করিডর ভারতের উত্তর দিনাজপুর জেলার চোপড়াতে গিয়ে জুড়বে । মাঝে থাকবে বাংলাদেশের তেঁতুলিয়া উপজেলার মধ্য দিয়ে 4.2 কিলোমিটার রাস্তা ৷ এর করিডর বাস্তবায়িত হলেই উত্তর-পূর্ব ভারত থেকে কলকাতার দূরত্ব কমবে ৷ জলপাইগুড়ি থেকে এখন কলকাতার দূরত্ব 576 কিলোমিটার ৷ এই করিডর চালু হলে, তা হবে 388 কিলোমিটার হয়ে যাবে ।

এর অর্থ 188 কিলোমিটার দূরত্ব কমে যাবে । ফলে কয়েক ঘণ্টা সময় বাঁচবে । গাড়ির জ্বালানি কমবে । পরিবহণ খরচও কমে যাবে । জলপাইগুড়ি-সহ পাশ্ববর্তী এলাকার আর্থ সামাজিক উন্নয়ন যেমন হবে, তেমনই সুবিধাও হবে । বর্তমানে শিলিগুড়ি ভৌগলিক কারণে উন্নত হয়েছে । এই করিডর চালু হলে ভারতের হাজার হাজার কোটি টাকা সাশ্রয় হবে । তাছাড়া এশিয়ান ডেভলপমেন্ট ব্যাংকের টাকায় বাংলাদেশ, ভুটান, নেপাল ও ভারতের মধ্যে একটি করিডর হচ্ছে । তেঁতুলিয়ার অংশ এতে যুক্ত হলে, তা আরও কার্যকরী হবে ৷

প্রসঙ্গত, ইন্দিরা-মুজিব চুক্তি অনুযায়ী বাংলাদেশের দহগ্রাম পাটগ্রামের মধ্যে যোগাযোগ সহজ করার জন্য ভারতের তিনবিঘা করিডর বাংলাদেশের মানুষকে ব্যবহারের জন্য দেওয়া হয়েছে । 2011 সালে ভারতের তিনবিঘা করিডর বাংলাদেশের মানুষকে 24 ঘণ্টার ব্যবহারের জন্য খুলে দেওয়া হয়েছে । তিনবিঘা করিডর দিয়েই দুই অংশের মানুষের যাতায়াত করছেন । তিনবিঘা করিডর ভারত না দিলে বাংলাদেশের এই অংশের মানুষের যাতায়াত বন্ধ হয়ে যেত ।

এর প্রেক্ষিতেই এই তেঁতুলিয়া করিডর চালুর দাবি 1980 সাল থেকে উঠছে ৷ সেটা জানেন বলেই ভোট প্রচারে এই ইস্যুটিকে বারবার তুলে ধরছেন জয়ন্ত রায় ৷ তিনি বলেন, ‘‘তেঁতুলিয়া করিডর নিয়ে ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে আলোচনা চলছে । এবার বাংলাদেশের তেঁতুলিয়া করিডর দিয়ে রেলপথ যদি একটা করা যায়, তার কথাও চলছে । কলকাতা থেকে জলপাইগুড়ির রাস্তা যেমন কমে যাবে, তেমন সময়ও বাঁচবে । উত্তর-পূর্ব ভারতের সঙ্গে যোগাযোগ আরও সহজ হবে । শিলিগুড়ির উপর আর ভরসা করতে হবে না । বিকল্প একটা পথ তৈরি হবে ।’’

এই নিয়ে স্থানীয় গাড়ি চালক অবিনাশ দাস বলেন, ‘‘তেঁতুলিয়া করিডোর চালু হলে আমাদের রোজগার বাড়বে । ভাড়া বেশি হবে। ট্রেনের স্টপেজ বাড়বে ।’’ আর এই কাজ সাংসদ জয়ন্ত রায়ের হাত ধরেই সম্ভব বলে মনে করছেন জলপাইগুড়ির প্রবীণ নাগরিক প্রদীপ গঙ্গোপাধ্যায় ৷ তাঁর কথায়, ‘‘এর আগে হলদিবাড়ি-চিলাহাটি রেলপথ জয়ন্ত রায়ের আমলেই হয়েছে ।তেঁতুলিয়া করিডর হলে উত্তর দিনাজপুরের লাভ হবে ৷ যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নত হলে এলাকায় উন্নতি হবে । রানিনগর থেকে এই রেলপথটি ঘুরিয়ে দিলে অসম ও ত্রিপুরার সঙ্গে যোগাযোগ আরও সহজ হবে ।’’

আরও পড়ুন:

  1. সিএএ কার্যকর হওয়ায় জলপাইগুড়িতে মতুয়াদের উৎসবে অংশ নিলেন বিজেপি সাংসদ
  2. দু’টো বন্দে ভারত এক্সপ্রেস চলবে উত্তরবঙ্গ থেকে, রেলমন্ত্রীকে ধন্যবাদ বিজেপি সাংসদের
  3. দু’টো বন্দে ভারত এক্সপ্রেস চলবে উত্তরবঙ্গ থেকে, রেলমন্ত্রীকে ধন্যবাদ বিজেপি সাংসদের
Last Updated : Apr 3, 2024, 4:25 PM IST
ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.