ETV Bharat / politics

কংগ্রেসের বিক্রমাদিত্য সিং কি বিজেপির পথে, সুখু সরকারের ‘বিদ্রোহী’ মন্ত্রীর দিল্লি সফর ঘিরে জল্পনা - Congress

Himachal Political Crisis: হিমাচল প্রদেশ কংগ্রেস নেতারা সেখানকার সরকার বাঁচানোর জন্য সবরকম চেষ্টা করছে ৷ যদিও মুখে তারা বলছে যে কোনও সংকট নেই ৷ তবে কংগ্রেসের বিক্রমাদিত্য সিং ও তাঁর মা প্রতিভা সিং বিজেপিতে যোগ দিতে পারেন বলে জল্পনা চলছে । বিক্রমাদিত্য অমিত শাহ ও জেপি নাড্ডা-সহ বিজেপি শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে দেখা করতে পারেন । এর পরই পুরোটা স্পষ্ট হবে বলে মনে করা হচ্ছে ৷

Vikramaditya Singh
Vikramaditya Singh
author img

By ETV Bharat Bangla Team

Published : Mar 2, 2024, 8:49 PM IST

সিমলা, 2 মার্চ: রাজ্যসভার নির্বাচনে হিমাচল প্রদেশে কংগ্রেস হেরে যাওয়ার পর থেকেই ওই রাজ্য়ে রাজনৈতিক সংকট তৈরি হয়েছে ৷ এই পরিস্থিতিতে সকলের নজর এখন বিক্রমাদিত্য সিংয়ের উপর ৷ তাঁর পরবর্তী পদক্ষেপ কী হবে, সেটাই এখন সবচেয়ে বড় রহস্য ৷ তিনি এখন নয়াদিল্লিতে রয়েছেন ৷

সূত্রের খবর, সেখানে বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্বের সঙ্গে তিনি সাক্ষাৎ করতে পারেন ৷ সরকারিভাবে কেন্দ্রীয় সড়ক পরিবহণমন্ত্রকের সঙ্গে বৈঠকের জন্য দিল্লি গিয়েছেন বিক্রমাদিত্য সিং ৷ কিন্তু তিনি যদি অমিত শাহ বা জেপি নাড্ডার সঙ্গে দেখা করেন, তাহলে পুরো চিত্রটাই স্পষ্ট হয়ে যাবে ৷

প্রসঙ্গত, রাজ্যসভার নির্বাচনে ছ’জন কংগ্রেস বিধায়ক ক্রস ভোটিং করায় অভিষেক মনু সিংভি হারতে হয় ৷ তখন থেকেই হিমাচল প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী সুখদেব সিং সুখুর সরকার সংকটে রয়েছে ৷ পরিস্থিতি সামলাতে ছয় বিদ্রোহী বিধায়কের পদ খারিজ করা হয়েছে ৷ গত 28 ফেব্রুয়ারি বিক্রমাদিত্য সিং পদত্য়াগ করার কথা ঘোষণা করা হলেও, তাঁকে বারবার বোঝানোর চেষ্টা করা হয়েছে ৷

বিক্রমাদিত্যর মন্ত্রিত্ব ছাড়ার ঘোষণার পর তাঁর সঙ্গে দু’জন বিধায়ক ছিলেন ৷ তাঁদের একজন নন্দলাল ও দ্বিতীয়জন মোহন লাল ভক্তা ৷ পরিস্থিতি সামলাতে রামপুরের বিধায়ক নন্দলালকে সপ্তম অর্থ কমিশনের চেয়ারম্যান (ক্যাবিনেট মন্ত্রীর সমতুল পদ) করা হয়েছে ৷ তাঁকে এবং রোহরুর বিধায়ক মোহন লাল ভক্তার নিরাপত্তা বৃদ্ধি করা হয়েছে ৷ তাঁরা এখন থেকে পুলিশের পাইলট কার পাবেন কনভয়ে ৷

ফলে এটা স্পষ্ট যে এখনও বিধায়কদের দল ছাড়া নিয়ে শঙ্কায় রয়েছে কংগ্রেস ৷ তাদের সেই শঙ্কা আরও বাড়িয়েছেন পদ চলে যাওয়া বিধায়ক রাজিন্দর রানা ৷ চাঁদনিগড়ের এই বিধায়ক দাবি করেছেন, হিমাচলে কংগ্রেস সরকার বাঁচাতে পারবে না ৷ কারণ, অনেক বিধায়কই তাঁর সঙ্গে যোগাযাগ রাখছেন ৷ তবে কতজন বিধায়ক আসবেন, সেটা নির্ভর করছে বিক্রমাদিত্য সিংয়ের পরবর্তী পদক্ষেপের উপর ৷

উল্লেখ্য, জানুয়ারি থেকেই বিদ্রোহী হয়ে উঠেছিলেন হিমাচলের এই কংগ্রেস নেতা ৷ সুখবিন্দর সিং সুখু সরকারের মন্ত্রী হওয়া সত্ত্বেও তিনি গত 22 জানুয়ারি রামলালার প্রাণ প্রতিষ্ঠা অনুষ্ঠানে যোগ দেন ৷ তাঁর এই পদক্ষেপ কংগ্রেসের হাইকমান্ডকে অমান্য করার সামিল ছিল ৷ কারণ, কংগ্রেসের তরফে ওই অনুষ্ঠানের আমন্ত্রণ প্রত্যাখান করা হয়েছিল ৷ সেই সময় তিনি ও তাঁর মা তথা কংগ্রেস সাংসদ প্রতিভা সিং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির প্রশংসা করেন ৷

এছাড়া একাধিকবার তাঁকে কেন্দ্রীয় সড়ক পরিবহণমন্ত্রী নিতিন গড়করি প্রশংসা করতে দেখা গিয়েছে ৷ গত শুক্রবারও তিনি জানান যে বিজেপি কংগ্রেসের চেয়ে ভালো ৷ ফলে প্রশ্ন উঠছে, যে এগুলো কি তাঁর বিজেপিতে যোগদানের ইঙ্গিত ? সেইদিকেই তাকিয়ে রাজনৈতিক মহল ৷ আর এই জল্পনা যদি সত্যি হয়, তাহলে তা হিমাচলের রাজনীতির জন্য সবচেয়ে বড় চমক হবে ৷

কারণ, হিমাচলে কংগ্রেস ও বিক্রমাদিত্যার বাবা বীরভদ্র সিং ছিলেন কার্যত সমার্থক ৷ তাঁকে সেখানে জননেতা হিসেবে মানা হয় ৷ তিনি বহুবার কংগ্রেসের হাইকমান্ডের নির্দেশ অমান্য করেছেন ৷ জনসমর্থন থাকায় কখনোই তাঁকে বিপাকে ফেলেনি কংগ্রেসের শীর্ষ নেতৃত্ব ৷ হিমাচল প্রদেশে ছ’বার মুখ্যমন্ত্রী হন তিনি ৷ কেন্দ্রও মন্ত্রী হয়েছেন ৷ হিমাচলে কংগ্রেসের প্রদেশ সভাপতির দায়িত্বও সামলেছেন ৷ লাল বাহাদুর শাস্ত্রীকে দেখে তিনি রাজনীতিতে আসেন ৷ কাজ করেছেন ইন্দিরা গান্ধি থেকে মনমোহন সিংয়ের সঙ্গে ৷

আরও পড়ুন:

  1. কংগ্রেস নয় সরকার চালান সুখুর বন্ধুরা! বিস্ফোরক হিমাচলের বিক্ষুব্ধ বিধায়ক
  2. বিদ্রোহী কংগ্রেস বিধায়কদের 'কাল সাপ' বলে তীব্র আক্রমণ সুখুর
  3. লোকসভা পর্যন্ত মুখ্যমন্ত্রীত্বে থাকুন সুখুই, সুপারিশ পর্যবেক্ষকদের

সিমলা, 2 মার্চ: রাজ্যসভার নির্বাচনে হিমাচল প্রদেশে কংগ্রেস হেরে যাওয়ার পর থেকেই ওই রাজ্য়ে রাজনৈতিক সংকট তৈরি হয়েছে ৷ এই পরিস্থিতিতে সকলের নজর এখন বিক্রমাদিত্য সিংয়ের উপর ৷ তাঁর পরবর্তী পদক্ষেপ কী হবে, সেটাই এখন সবচেয়ে বড় রহস্য ৷ তিনি এখন নয়াদিল্লিতে রয়েছেন ৷

সূত্রের খবর, সেখানে বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্বের সঙ্গে তিনি সাক্ষাৎ করতে পারেন ৷ সরকারিভাবে কেন্দ্রীয় সড়ক পরিবহণমন্ত্রকের সঙ্গে বৈঠকের জন্য দিল্লি গিয়েছেন বিক্রমাদিত্য সিং ৷ কিন্তু তিনি যদি অমিত শাহ বা জেপি নাড্ডার সঙ্গে দেখা করেন, তাহলে পুরো চিত্রটাই স্পষ্ট হয়ে যাবে ৷

প্রসঙ্গত, রাজ্যসভার নির্বাচনে ছ’জন কংগ্রেস বিধায়ক ক্রস ভোটিং করায় অভিষেক মনু সিংভি হারতে হয় ৷ তখন থেকেই হিমাচল প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী সুখদেব সিং সুখুর সরকার সংকটে রয়েছে ৷ পরিস্থিতি সামলাতে ছয় বিদ্রোহী বিধায়কের পদ খারিজ করা হয়েছে ৷ গত 28 ফেব্রুয়ারি বিক্রমাদিত্য সিং পদত্য়াগ করার কথা ঘোষণা করা হলেও, তাঁকে বারবার বোঝানোর চেষ্টা করা হয়েছে ৷

বিক্রমাদিত্যর মন্ত্রিত্ব ছাড়ার ঘোষণার পর তাঁর সঙ্গে দু’জন বিধায়ক ছিলেন ৷ তাঁদের একজন নন্দলাল ও দ্বিতীয়জন মোহন লাল ভক্তা ৷ পরিস্থিতি সামলাতে রামপুরের বিধায়ক নন্দলালকে সপ্তম অর্থ কমিশনের চেয়ারম্যান (ক্যাবিনেট মন্ত্রীর সমতুল পদ) করা হয়েছে ৷ তাঁকে এবং রোহরুর বিধায়ক মোহন লাল ভক্তার নিরাপত্তা বৃদ্ধি করা হয়েছে ৷ তাঁরা এখন থেকে পুলিশের পাইলট কার পাবেন কনভয়ে ৷

ফলে এটা স্পষ্ট যে এখনও বিধায়কদের দল ছাড়া নিয়ে শঙ্কায় রয়েছে কংগ্রেস ৷ তাদের সেই শঙ্কা আরও বাড়িয়েছেন পদ চলে যাওয়া বিধায়ক রাজিন্দর রানা ৷ চাঁদনিগড়ের এই বিধায়ক দাবি করেছেন, হিমাচলে কংগ্রেস সরকার বাঁচাতে পারবে না ৷ কারণ, অনেক বিধায়কই তাঁর সঙ্গে যোগাযাগ রাখছেন ৷ তবে কতজন বিধায়ক আসবেন, সেটা নির্ভর করছে বিক্রমাদিত্য সিংয়ের পরবর্তী পদক্ষেপের উপর ৷

উল্লেখ্য, জানুয়ারি থেকেই বিদ্রোহী হয়ে উঠেছিলেন হিমাচলের এই কংগ্রেস নেতা ৷ সুখবিন্দর সিং সুখু সরকারের মন্ত্রী হওয়া সত্ত্বেও তিনি গত 22 জানুয়ারি রামলালার প্রাণ প্রতিষ্ঠা অনুষ্ঠানে যোগ দেন ৷ তাঁর এই পদক্ষেপ কংগ্রেসের হাইকমান্ডকে অমান্য করার সামিল ছিল ৷ কারণ, কংগ্রেসের তরফে ওই অনুষ্ঠানের আমন্ত্রণ প্রত্যাখান করা হয়েছিল ৷ সেই সময় তিনি ও তাঁর মা তথা কংগ্রেস সাংসদ প্রতিভা সিং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির প্রশংসা করেন ৷

এছাড়া একাধিকবার তাঁকে কেন্দ্রীয় সড়ক পরিবহণমন্ত্রী নিতিন গড়করি প্রশংসা করতে দেখা গিয়েছে ৷ গত শুক্রবারও তিনি জানান যে বিজেপি কংগ্রেসের চেয়ে ভালো ৷ ফলে প্রশ্ন উঠছে, যে এগুলো কি তাঁর বিজেপিতে যোগদানের ইঙ্গিত ? সেইদিকেই তাকিয়ে রাজনৈতিক মহল ৷ আর এই জল্পনা যদি সত্যি হয়, তাহলে তা হিমাচলের রাজনীতির জন্য সবচেয়ে বড় চমক হবে ৷

কারণ, হিমাচলে কংগ্রেস ও বিক্রমাদিত্যার বাবা বীরভদ্র সিং ছিলেন কার্যত সমার্থক ৷ তাঁকে সেখানে জননেতা হিসেবে মানা হয় ৷ তিনি বহুবার কংগ্রেসের হাইকমান্ডের নির্দেশ অমান্য করেছেন ৷ জনসমর্থন থাকায় কখনোই তাঁকে বিপাকে ফেলেনি কংগ্রেসের শীর্ষ নেতৃত্ব ৷ হিমাচল প্রদেশে ছ’বার মুখ্যমন্ত্রী হন তিনি ৷ কেন্দ্রও মন্ত্রী হয়েছেন ৷ হিমাচলে কংগ্রেসের প্রদেশ সভাপতির দায়িত্বও সামলেছেন ৷ লাল বাহাদুর শাস্ত্রীকে দেখে তিনি রাজনীতিতে আসেন ৷ কাজ করেছেন ইন্দিরা গান্ধি থেকে মনমোহন সিংয়ের সঙ্গে ৷

আরও পড়ুন:

  1. কংগ্রেস নয় সরকার চালান সুখুর বন্ধুরা! বিস্ফোরক হিমাচলের বিক্ষুব্ধ বিধায়ক
  2. বিদ্রোহী কংগ্রেস বিধায়কদের 'কাল সাপ' বলে তীব্র আক্রমণ সুখুর
  3. লোকসভা পর্যন্ত মুখ্যমন্ত্রীত্বে থাকুন সুখুই, সুপারিশ পর্যবেক্ষকদের
ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.