কলকাতা, 8 এপ্রিল: এবার রাজভবনের দ্বারস্থ তৃণমূল। দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে তৃণমূল কংগ্রেসের 12 সদস্যের এক প্রতিনিধি দল সোমবার রাতেই রাজভবনে যায়। সেখানে রাজ্যপালের সঙ্গে সাক্ষাতের পর সরাসরি নির্বাচন কমিশনের দিকে আঙুল তুললেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ৷ বিজেপি নয় এদিন সরাসরি কমিশন এবং জাতীয় নির্বাচন কমিশনারকে আক্রমণ করে অভিষেক বলেন, "মেরুদণ্ড বিক্রি করে বশ্যতা স্বীকার করেছে কমিশন ৷ দিনের আলোয় গণতন্ত্রকে হত্যা করা হয়েছে ৷ তার মূল কারিগর নির্বাচন কমিশন ৷"
এদিন প্রতিনিধি দলে অভিষেক ছাড়াও ছিলেন রাজ্যের মন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়, শশী পাঁজা, ফিরহাদ হাকিম, অরূপ বিশ্বাস, ব্রাত্য বসু, সাংসদ সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়, মালা রায়, তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষ এবং অসীমা পাত্র। দিল্লিতে নির্বাচন কমিশনের সদর দফতরে ডেপুটেশন দিতে গিয়ে 24 ঘণ্টার শান্তিপূর্ণ ধরনা কর্মসূচি নিয়েছিল তৃণমূল কংগ্রেস। আর তা শেষ পর্যন্ত ধুন্ধুমার পরিস্থিতিতে পৌঁছয় ৷ শান্তিপূর্ণ ধরণা থেকেই তৃণমূলের সাংসদ-সহ প্রতিনিধি দলকে তুলে নিয়ে যায় দিল্লি পুলিশ। এবার সেই বিষয় নিয়ে রাজভবনের দ্বারস্থ হল রাজ্যের শাসক দল ৷ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে এই প্রতিনিধি দল রাজ্যপালের কাছে সময় চায়। এরপর রাত 9টার কিছু আগে রাজভবনে পৌঁছয় প্রতিনিধি দল।
সাক্ষাৎ শেষে অভিষেক বলেন, "মহিলা সাংসদদের পুলিশ যেভাবে টেনে-হিঁচড়ে তুলে নিয়ে গিয়েছে তার দায় নির্বাচন কমিশনেরই ৷ দোলা সেনের পায়ে অপারেশন হয়েছে দু'সপ্তাহ আগ ৷ তাঁকে টানতে টানতে চ্যাংদোলা করে নিয়ে গিয়েছে ৷ প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে মানুষের ঘর ভেঙে গিয়েছে তাদের জন্য কাজ করতে দেওয়ার অনুমতি দিক কমিশন ৷ কেন্দ্রের থেকে টাকা চাইছি না ৷ আমরাই কাজ করব তাই অনুমতি নিতে গিয়েছিল তৃণমূলের নেতারা ৷ আট দিন হয়ে গিয়েছে এখনও কমিশন অনুমতি দেয়নি ৷"
পাশাপাশি তিনি আরও বলেন, "যে নির্বাচন কমিশনারকে নিয়োগ করা হয়েছে তিনি চান না গরিব মানুষের ঘর ঠিক হোক ৷ প্রমাণ থাকার পর কেন নির্বাচন কমিশন এনআইএ এসপি'কে সরাবে না ? বিজেপির অভিযোগে রাজ্য পুলিশের ডিজি, জেলাশাসক পরিবর্তন হয়ে যায়, সেখানে এনআইএ ডিরেক্টর কেন পরিবর্তন হবে না ? আমাদের অভিযোগ বিজেপির বিরুদ্ধে নয়, নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে ৷ 2021 সালে বিজেপির অবস্থা যা হয়েছিল এবার তার থেকেও খারাপ হবে ৷"
রাজভবনে যাওয়ার আগেই এদিন সরব হন তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি স্পষ্ট ভাষায় বলেন, "যত সময় যাচ্ছে বাংলা-বিরোধী শক্তি তথা জমিদাররা ক্ষমতা দখলের জন্য মরিয়া এবং হিংস্র হয়ে পড়ছে। ওদের উপযুক্ত জবাব দেবে বাংলা।" রাজভবনে যাওয়ার আগেই সোশাল মিডিয়ায় তাঁর এই বার্তা অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল। সেখানে তিনি আরও লেখেন, "2023 সালের অক্টোবরে, কৃষি ভবনের অভ্যন্তরে গণতন্ত্র মুখ থুবড়ে পড়েছিল। আজ প্রকাশ্য দিবালোকে হামলা হল! যত দিন যাচ্ছে, বাংলা বিরোধী জমিদাররা তাদের ক্ষমতার জন্য হিংস্র ও মরিয়া হয়ে উঠছে। উপযুক্ত জবাব দেবে বাংলা! " অভিষেকের এই বক্তব্য থেকেই স্পষ্ট, তৃণমূল বিষয়টিকে প্রবল গুরুত্ব দিয়ে দেখছে। এই বিষয়টি রাজভবনে রাজ্যপালের কাছে তুলে ধরবে তৃণমূল।
আরও পড়ুন: