চন্দননগর, 8 নভেম্বর: চন্দননগরের জগদ্ধাত্রী পুজো আজ বিশ্বের দরবারে পৌঁছে গিয়েছে। শুক্রবার ছিল সপ্তমী ৷ চন্দননগরের বেশোহাটা সর্বজনীন এবার তাদের 75 বছরে এক অনন্য থিম তুলে ধরেছে মণ্ডপে ৷
তা দেখে বিস্মিত সকলেই। বিপ্লবী ও দেবতারা মিশে গিয়েছেন এখানে। থিমের নাম 'বন্দেব্রতকথাম'। পুজো উদ্যোক্তাদের দাবি, চন্দননগর বিপ্লব তীর্থ। তাই এমন ভাবনা ৷ কিন্তু হঠাৎ দেবতাদের বিপ্লবীদের সঙ্গে মিশিয়ে দেওয়া হল কেন? উত্তর খুঁজল ইটিভি ভারত।
চন্দননগরের বেশোহাটা সর্বজনীনের থিম-
মা কালীর হাতে খর্গ ও ভগবান শিবের হাতে ত্রিশূলের বদলে বন্দুক। মহাদেব আবার কারাগারে বন্দি। ব্রম্ভার মুখের বদলে মহত্মা গান্ধী ও নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু-সহ একাধিক বিপ্লবীর মুখ। ত্রিশূল হাতে দাঁড়িয়ে রয়েছেন ঋষি অরবিন্দ। দেবতা-বিপ্লবী মিলে মিশে একাকার হয়ে গিয়েছেন। এক ঝাঁক দেবতা ও বিপ্লবীদের ছবি এবং মডেল দিয়ে মণ্ডপ সাজিয়ে তুলেছে চন্দননগরের বেশোহাটা সর্বজনীন।
পুজোর 75 বছরে এভাবেই মণ্ডপসজ্জা করেছেন শিল্পী সুরজিৎ পাল। তাই দেখে বিস্মিত সকলেই। পুজো উদ্যোক্তাদের দাবি, চন্দননগরের ইতিহাসের সঙ্গে বিপ্লবীদের নিবিড় যোগাযোগ। সেই ইতিহাসকে স্মরণ করে স্বাধীনতা সংগ্রামীদের ঈশ্বর রূপে কল্পনা করা হয়েছে।
থিমের কেন এমন ভাবনা-
বেশোহাটা সর্বজনীনের সাধারণ সম্পাদক বারিন দত্ত বলেন, "আমাদের শিল্পী একবছর ধরে গবেষণা করেন 'বন্দেব্রতকথাম' শীর্ষক থিমের প্রস্তাব দেন। এই থিমের মূল ভাবনা 'দেবতা এদেশে মানুষ হয়েছে জানি, মানুষকে দেখি গণদেবতার বেশে, ভারতবর্ষ সূর্যের এক নাম।' এই থিমের মূল বক্তব্য হল- দেবতারাই বিপ্লবী বেশে ভারতে এসেছিলেন। তাই বিপ্লবী ও দেবতা মিশে গিয়েছেন। বিপ্লবীদের মূল মন্ত্র বা ব্রত ছিল স্বাধীনতা অর্জন । তেমনই ঈশ্বরের ব্রতকথা তুলে ধরা হয়েছে মণ্ডপে।"
তিনি আরও বলেন, "মণ্ডপজুড়ে বিপ্লবীদের সঙ্গে দেবতাদের মিলন ঘটনা হয়েছে। একদিকে বিপ্লবীদের সঙ্গে দেবতার তুলনা করা হয়েছে। অন্যদিকে, দেবতার সঙ্গে বিপ্লবীদের তুলনা করা হয়েছে। অর্থাৎ বিপ্লবীদের আমরা দেবতা হিসেবে দেখেছি। মা কালীর হাতে বন্দুক রাখাটা বিতর্কিত বিষয় বলে মনে হতেই পারে। কিন্তু শিল্পী এখানে মা কালীকে, প্রীতিলতা ওয়াদ্দেদার ভেবেছেন। ক্ষুদিরাম বসুকে ভাবা হয়েছে দেবাদিদেব। এছাড়াও যোদ্ধার প্রতীকে কার্তিক রূপে বিপ্লবীর কানাইলাল দত্তর মুখ দেওয়া হয়েছে।"