ETV Bharat / lifestyle

'বুড়িমা'ই এখানে থিম ! দেবী হৈমন্তিকা এবার সেজেছেন 12 কেজি গয়নায়

নদিয়ার কৃষ্ণনগরের জগদ্ধাত্রী পুজোয় আলাদা আকর্ষণ 'বুড়িমা' ৷ নবমীর সকাল থেকেই আবেগ ও ভক্তিতে মিলেমিশে একাকার বুড়িমার মণ্ডপ প্রাঙ্গন ৷ দেখুন মায়ের সাজ ৷

JAGADDHATRI PUJA 2024
দেবী হৈমন্তিকা এবার সেজেছেন 12 কেজি গয়নায় (ইটিভি ভারত)
author img

By ETV Bharat Bangla Team

Published : Nov 10, 2024, 2:11 PM IST

কৃষ্ণনগর, 10 নভেম্বর: আজ জগদ্ধাত্রী পুজোর নবমী ৷ কৃষ্ণনগরের জগদ্ধাত্রী পুজোগুলির মধ্যে অন্যতম বুড়িমার পুজো। 250 বছরেরও বেশি সময় ধরে পুজো হয়ে আসছে কৃষ্ণনগরের ঐতিহ্যবাহী জগদ্ধাত্রী মাতা বুড়িমা। ভক্তদের বিশ্বাস, বুড়িমার কাছে ভক্তি ভরে কিছু চাইলে কাউকেই ফেরান না তিনি। পুজো উদ্যোক্তারা বলছেন, এখানে আলাদা কোনও মণ্ডপসজ্জার বিশেষত্ব নেই, না-আছে কোনও রকম থিমের পাহাড় ৷ বুড়িমাই এখানে 'থিম' ৷ সকলেই বুড়িমাকে জ্যান্ত দেবী মনে করেন ৷ এ বছর মা সেজেছেন 10-12 কেজি গয়নায় ৷

কৃষ্ণনগর জগদ্ধাত্রী পুজো-

জগদ্ধাত্রী পুজো বিখ্যাত কৃষ্ণনগর ও চন্দনগরে ৷ চন্দনগরে ষষ্ঠী, সপ্তমী, অষ্টমী, নবমী ও দশমী আলাদা আলাদা দিনে পুজো হলেও অর্থাৎ পাঁচদিন ধরে মা হৈমন্তিকার আরাধনা চললেও কৃষ্ণনগরে নবমীতেই মূলত পুজো হয় ৷ আর আজ সেইদিন ৷ নদিয়ার এই কৃষ্ণনগরে আজ দিকে দিকে মা জগদ্ধাত্রী সেজে উঠেছেন ৷ মনে করা হয়, এই পুজোই কৃষ্ণনগরের সবেচেয়ে প্রাচীন। এখানে নেই কোনও মণ্ডপের সাজসজ্জা। মূলত বুড়িমাকে ঘিরে ব্যাপক উন্মাদনা কৃষ্ণনগরবাসীর। প্রায় 10-12 কেজি সোনার গয়নায় সেজে উঠেছেন কৃষ্ণনগরের চাষাপাড়া বারোয়ারির বুড়িমা, জানিয়েছেন পুজো কমিটির সম্পাদক গৌতম ঘোষ।

সকলেই বুড়িমাকে জ্যান্ত দেবী মনে করেন, বলছেন পুজো উদ্যোক্তা (ইটিভি ভারত)

রাজা কৃষ্ণচন্দ্রের হাতে জগদ্ধাত্রী পুজো শুরু-

  • খাজনা দিতে না-পারার কারণে নবাব কাসেমের হাতে বন্দি ছিলেন রাজা কৃষ্ণচন্দ্র। তাঁকে পাঠানো হয় বিহারের মুঙ্গেরের জেলে। বন্দিদশা কাটানোর পর তিনি যখন নদীপথে বাড়ি ফিরছিলেন, তখন কৃষ্ণনগরে পৌঁছনোর আগে ধুবুলিয়াতে বিসর্জনের বাজনা শুনতে পান। তখন রাজা কৃষ্ণচন্দ্র, যাঁরা নৌকা চালাচ্ছিলেন তাঁদের জিজ্ঞাসা করেন এই বাজনা কীসের ? তখন তাঁরা উত্তর দেন, দুর্গাপুজোর বিসর্জনের বাজনা। যদিও, তার আগে থেকেই রাজা কৃষ্ণচন্দ্রের রাজত্বে দুর্গাপুজো হয়ে আসছিল। কিন্তু, ওই বছর তাঁর বন্দিদশার ফলে দুর্গাপুজো করতে পারেননি রাজা কৃষ্ণচন্দ্র ৷
JAGADDHATRI PUJA 2024
বুড়িমাকে গয়না পরানোর আগের মুহূর্ত (নিজস্ব ছবি)
  • সে বছর আর দুর্গাপুজো দেওয়া হল না ভেবে তখন মনে মনে খুব কষ্ট পান কৃষ্ণচন্দ্র । তিনি বাড়িতে আসার পর সেই রাতেই স্বপ্নাদেশ পান। স্বপ্নে তাঁকে দেবী জানান, যেহেতু তিনি দুর্গাপুজো দিতে পারেননি, তাই মা দুর্গার আরও এক রূপ রয়েছে, সেই পুজো তিনি দিতে পারেন। এর পরেই তিনি রাজদরবারে এসে পণ্ডিতদের সঙ্গে কথা বলে জানতে পারেন জগদ্ধাত্রী নামে আরও এক দেবী রয়েছেন ৷ এর পরই প্রায় 265 বছর আগে দুর্গাপুজোর নবমীর ঠিক একমাস পর কার্তিক শুক্লা নবমীতে জগদ্ধাত্রী পুজো শুরু করেন রাজা কৃষ্ণচন্দ্র ৷
JAGADDHATRI PUJA 2024
আবেগ ও ভক্তিতে মিলেমিশে একাকার বুড়িমার আরাধনা প্রাঙ্গন (নিজস্ব ছবি)

বুড়িমার সাজ

  • বুড়িমার সাজে রয়েছে বিশেষ চমক। রয়েছে সোনার মুকুট। বুড়িমা'র কপাল জুড়ে থাকে বিভিন্ন আকারের সোনার টিপ। গলায় সোনার চিক-সহ একাধিক চেন, মালা নেকলেস, সীতাহার। হাত-ভর্তি সোনার বালা থেকে শুরু করে মানতাসা। সঙ্গে জড়োয়ার সেট। বুড়িমার পায়ের নুপুরও হয় সোনার। দেবীর বাহন সিংহকেও পড়ানো হয় স্বর্ণালঙ্কার, সোনার মুকুট।
JAGADDHATRI PUJA 2024
বুড়িমাই এখানে থিম (নিজস্ব ছবি)
  • সেই সময় থেকেই কৃষ্ণনগরে পূজিতা হয়ে আসছেন কৃষ্ণনগরের আরও এক ঐতিহ্যবাহী জগদ্ধাত্রী মাতা বুড়িমা। মূলত, সাবেকিয়ানায় পুজো হয় এখানে। কোনও বিশেষ সাজসজ্জা থাকে না। বুড়িমাকে ঘিরেই মূল আকর্ষণ চাষা পাড়া বারোয়ারির। 250 বছরেরও বেশি জগদ্ধাত্রী মাতার শরীরে এবার 10-12 কেজি গয়না পরানো হয়েছে। আজ সকাল থেকেই হাজার হাজার মানুষ বুড়িমাকে দর্শন করার জন্য লাইনে দাঁড়িয়েছেন।

কৃষ্ণনগর, 10 নভেম্বর: আজ জগদ্ধাত্রী পুজোর নবমী ৷ কৃষ্ণনগরের জগদ্ধাত্রী পুজোগুলির মধ্যে অন্যতম বুড়িমার পুজো। 250 বছরেরও বেশি সময় ধরে পুজো হয়ে আসছে কৃষ্ণনগরের ঐতিহ্যবাহী জগদ্ধাত্রী মাতা বুড়িমা। ভক্তদের বিশ্বাস, বুড়িমার কাছে ভক্তি ভরে কিছু চাইলে কাউকেই ফেরান না তিনি। পুজো উদ্যোক্তারা বলছেন, এখানে আলাদা কোনও মণ্ডপসজ্জার বিশেষত্ব নেই, না-আছে কোনও রকম থিমের পাহাড় ৷ বুড়িমাই এখানে 'থিম' ৷ সকলেই বুড়িমাকে জ্যান্ত দেবী মনে করেন ৷ এ বছর মা সেজেছেন 10-12 কেজি গয়নায় ৷

কৃষ্ণনগর জগদ্ধাত্রী পুজো-

জগদ্ধাত্রী পুজো বিখ্যাত কৃষ্ণনগর ও চন্দনগরে ৷ চন্দনগরে ষষ্ঠী, সপ্তমী, অষ্টমী, নবমী ও দশমী আলাদা আলাদা দিনে পুজো হলেও অর্থাৎ পাঁচদিন ধরে মা হৈমন্তিকার আরাধনা চললেও কৃষ্ণনগরে নবমীতেই মূলত পুজো হয় ৷ আর আজ সেইদিন ৷ নদিয়ার এই কৃষ্ণনগরে আজ দিকে দিকে মা জগদ্ধাত্রী সেজে উঠেছেন ৷ মনে করা হয়, এই পুজোই কৃষ্ণনগরের সবেচেয়ে প্রাচীন। এখানে নেই কোনও মণ্ডপের সাজসজ্জা। মূলত বুড়িমাকে ঘিরে ব্যাপক উন্মাদনা কৃষ্ণনগরবাসীর। প্রায় 10-12 কেজি সোনার গয়নায় সেজে উঠেছেন কৃষ্ণনগরের চাষাপাড়া বারোয়ারির বুড়িমা, জানিয়েছেন পুজো কমিটির সম্পাদক গৌতম ঘোষ।

সকলেই বুড়িমাকে জ্যান্ত দেবী মনে করেন, বলছেন পুজো উদ্যোক্তা (ইটিভি ভারত)

রাজা কৃষ্ণচন্দ্রের হাতে জগদ্ধাত্রী পুজো শুরু-

  • খাজনা দিতে না-পারার কারণে নবাব কাসেমের হাতে বন্দি ছিলেন রাজা কৃষ্ণচন্দ্র। তাঁকে পাঠানো হয় বিহারের মুঙ্গেরের জেলে। বন্দিদশা কাটানোর পর তিনি যখন নদীপথে বাড়ি ফিরছিলেন, তখন কৃষ্ণনগরে পৌঁছনোর আগে ধুবুলিয়াতে বিসর্জনের বাজনা শুনতে পান। তখন রাজা কৃষ্ণচন্দ্র, যাঁরা নৌকা চালাচ্ছিলেন তাঁদের জিজ্ঞাসা করেন এই বাজনা কীসের ? তখন তাঁরা উত্তর দেন, দুর্গাপুজোর বিসর্জনের বাজনা। যদিও, তার আগে থেকেই রাজা কৃষ্ণচন্দ্রের রাজত্বে দুর্গাপুজো হয়ে আসছিল। কিন্তু, ওই বছর তাঁর বন্দিদশার ফলে দুর্গাপুজো করতে পারেননি রাজা কৃষ্ণচন্দ্র ৷
JAGADDHATRI PUJA 2024
বুড়িমাকে গয়না পরানোর আগের মুহূর্ত (নিজস্ব ছবি)
  • সে বছর আর দুর্গাপুজো দেওয়া হল না ভেবে তখন মনে মনে খুব কষ্ট পান কৃষ্ণচন্দ্র । তিনি বাড়িতে আসার পর সেই রাতেই স্বপ্নাদেশ পান। স্বপ্নে তাঁকে দেবী জানান, যেহেতু তিনি দুর্গাপুজো দিতে পারেননি, তাই মা দুর্গার আরও এক রূপ রয়েছে, সেই পুজো তিনি দিতে পারেন। এর পরেই তিনি রাজদরবারে এসে পণ্ডিতদের সঙ্গে কথা বলে জানতে পারেন জগদ্ধাত্রী নামে আরও এক দেবী রয়েছেন ৷ এর পরই প্রায় 265 বছর আগে দুর্গাপুজোর নবমীর ঠিক একমাস পর কার্তিক শুক্লা নবমীতে জগদ্ধাত্রী পুজো শুরু করেন রাজা কৃষ্ণচন্দ্র ৷
JAGADDHATRI PUJA 2024
আবেগ ও ভক্তিতে মিলেমিশে একাকার বুড়িমার আরাধনা প্রাঙ্গন (নিজস্ব ছবি)

বুড়িমার সাজ

  • বুড়িমার সাজে রয়েছে বিশেষ চমক। রয়েছে সোনার মুকুট। বুড়িমা'র কপাল জুড়ে থাকে বিভিন্ন আকারের সোনার টিপ। গলায় সোনার চিক-সহ একাধিক চেন, মালা নেকলেস, সীতাহার। হাত-ভর্তি সোনার বালা থেকে শুরু করে মানতাসা। সঙ্গে জড়োয়ার সেট। বুড়িমার পায়ের নুপুরও হয় সোনার। দেবীর বাহন সিংহকেও পড়ানো হয় স্বর্ণালঙ্কার, সোনার মুকুট।
JAGADDHATRI PUJA 2024
বুড়িমাই এখানে থিম (নিজস্ব ছবি)
  • সেই সময় থেকেই কৃষ্ণনগরে পূজিতা হয়ে আসছেন কৃষ্ণনগরের আরও এক ঐতিহ্যবাহী জগদ্ধাত্রী মাতা বুড়িমা। মূলত, সাবেকিয়ানায় পুজো হয় এখানে। কোনও বিশেষ সাজসজ্জা থাকে না। বুড়িমাকে ঘিরেই মূল আকর্ষণ চাষা পাড়া বারোয়ারির। 250 বছরেরও বেশি জগদ্ধাত্রী মাতার শরীরে এবার 10-12 কেজি গয়না পরানো হয়েছে। আজ সকাল থেকেই হাজার হাজার মানুষ বুড়িমাকে দর্শন করার জন্য লাইনে দাঁড়িয়েছেন।
ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.