চন্দননগর, 9 নভেম্বর: ফরাসি আমলে চন্দননগরে একাধিক জগদ্ধাত্রী পুজোর প্ৰচলন ছিল। তার মধ্যে অন্যতম চন্দননগর বাগবাজার জগদ্ধাত্রী পুজো কমিটি। এই পুজো শুরু হয় 1835 সালে।
পুরনো ইতিহাস থেকে জানা যায়, তৎকালীন সময়ে লক্ষ্মীগঞ্জ বাজারে আদি জগদ্ধাত্রী মায়ের পুজো হত। মহিলারা সেভাবে পুজোয় অংশ নিতে পারতেন না। সেই কারণেই বাগবাজার অঞ্চলের মহিলারা ঠিক করেন জগদ্ধাত্রী পুজো করার। এবছর বাগবাজার সর্বজনীনের 190তম বর্ষ।
কীভাবে পুজো শুরু হয়েছিল
প্রতিবছরই অগণিত মানুষের আগমন হয় ঐতিহ্যশালী এই পুজো দেখতে। দেবীর অপূর্ব মুখশ্রী ও সাজসজ্জায় মুগ্ধ থাকেন ভক্তরা ৷ যখন পুজো তখন জগদ্ধাত্রীর আরাধনা শুরু হয় হোগলা পাতার ছাউনি দিয়ে। এই পুজো বেশ কয়েকবার আর্থিক সঙ্কটে পড়েছে। সমস্ত কঠিন পরিস্থিতির মধ্যেও মহিলারাই এগিয়ে এসে পুজো চালিয়ে যাওয়ার উদ্যোগী হয়েছেন।
স্বাধীনতার শরিক চন্দননগর বাগবাজার সর্বজনীন
শুধু তাই নয়, চন্দননগর বাগবাজার বারোয়ারী স্বাধীনতা সংগ্রামে আলাদা ভূমিকা গ্রহণ করেছিল। জগদ্ধাত্রী পুজোর মধ্যেও স্বাধীনতা আন্দোলনে শরিক হয়েছিল। গান্ধিজীর বিদেশি জিনিসপত্র বর্জনের আন্দোলনে সামিল হয় এই পুজো কমিটি। তারা মা জগদ্ধাত্রীকে স্বদেশি খাদির কাপড় পরিয়ে প্রতিবাদ জানিয়েছিলেন। এছাড়াও সশস্ত্র বিপ্লবী কানাইলাল ও মোহনলালের মতো শহিদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়েছিলেন অন্যভাবে। জগদ্ধাত্রীর চালচিত্রতে ছিল চন্দননগরের সন্তান কানাইলাল-সহ অন্যান্য বিপ্লবীর ছবি। নানা ইতিহাস নিয়ে বাগবাজার বারোয়ারি স্বমহিমায় আজও পুজো চালিয়ে যাচ্ছে।
পুজো উদ্যোক্তাদের বক্তব্য
- বাগবাজারে কার্যকরী সভাপতি মোহন সেনগুপ্ত বলেন, "বাগবাজারের মহিলারা চন্দননগর লক্ষ্মীগঞ্জ বাজারে পুষ্পাঞ্জলি দিতে যেতেন। কিন্তু অসুবিধার কারণে মহিলাদের উদ্যোগে এখানকার চারজন এই পুজো শুরু করেন। একসময় আর্থিক সংকটেপ পরিস্থিতি তৈরি হয়। আমাদের দেড়শো বছর পূর্তির সময় ইন্দিরা গান্ধির মৃত্যু হয়েছিল। সেবার অষ্টমীর দিন বাগবাজারে সমস্ত আলো নিভিয়ে দেওয়া হয়েছিল। আমাদের দেখাদেখি পুরো চন্দননগর আলো নিভিয়ে দিয়েছিল।"
- বাগবাজার পুজো কমিটির সম্পাদক শুভজিৎ গোস্বামী বলেন, "আমরা সাবেকিয়ানায় বিশ্বাস করি। মায়ের এই মৃন্ময়ী মূর্তিকে ডাকের সাজ দেওয়া হয়েছে ৷ এবছর শোভাযাত্রার বিশেষ চমক থাকছে ৷ লাইট অ্যান্ড সাউন্ডের মাধ্যমে সঙ্গীতের উপর থিম করা হচ্ছে।"