ETV Bharat / international

ব্রিটেনের পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী কিয়ের স্টারমার, জেনে নিন তাঁর সম্পর্কে... - Keir Starmer

author img

By PTI

Published : Jul 5, 2024, 2:37 PM IST

Keir Starmer: বৃহস্পতিবার ছিল ব্রিটেনের ভোট ৷ সেই নির্বাচনে জিতে সেখানে সরকার গড়তে চলেছে লেবার পার্টি ৷ ওই দলের নেতা স্যার কিয়ের স্টারমার হতে চলেছেন ব্রিটেনের পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী ৷ 10 ডাউনিং স্ট্রিটের পরবর্তী বাসিন্দা সম্বন্ধে বিস্তারিত জানতে পড়ুন...

Keir Starmer
স্ত্রী ভিক্টোরিয়ার সঙ্গে ব্রিটেনের পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী কিয়ের স্টারমার৷ (ছবি সৌজন্য়ে: কিয়ের স্টারমারের এক্স হ্যান্ডেল)

লন্ডন, 5 জুলাই: 14 বছরের কনজারভেটিভ সরকারের পতন হল ব্রিটেনে ৷ এই সময়ের মধ্যে সেখানকার সরকার চালিয়েছেন পাঁচজন প্রধানমন্ত্রী ৷ এবার লেবার পার্টি ক্ষমতায় আসতে চলেছে সেখানে ৷ প্রধানমন্ত্রী হতে চলেছেন স্যার কিয়ের স্টারমার ৷ ফলে বিশ্বজুড়ে আলোচনা শুরু হয়েছে এই লেবার নেতাকে ঘিরে ৷ সকলেই জানতে চাইছেন তাঁর সম্পর্কে ৷ তাই জেনে নেওয়া যাক ব্রিটেনের পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী সম্পর্কে ৷

কিয়ের স্টারমার একজন আইনজীবী ৷ তিনি 2008 থেকে 2013 পর্যন্ত ইংল্যান্ড ও ওয়েলসে চিফ প্রসিকিউটর হিসেবে কাজ করেছেন ৷ তাঁকে বিরোধীরা কটাক্ষ করে বলে ‘লেফটি লন্ডন লইয়ার’ (লন্ডনের বাঁহাতি আইনজীবী) ৷ ক্রাউন প্রসিকিউশন সার্ভিসে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেওয়ার জন্য 2014 সালে তাঁকে নাইট উপাধি দেওয়া হয় ৷ যা নিয়েও বিরোধীরা তাঁকে কটাক্ষ করে ৷ ‘স্যার’ হওয়ায় তিনি সাধারণের ধরাছোঁয়ার বাইরে থাকেন বলেও অভিযোগ করে বিরোধীরা ৷

যদিও তাঁর পুরো কর্মজীবন ছিল, যাঁদের প্রয়োজন তাঁদের জন্য ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা নিয়ে । একজন মানবাধিকার আইনজীবী হিসেবে মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত লোকদের প্রতিনিধিত্ব করা থেকে শুরু করে গুড ফ্রাইডে চুক্তির প্রেক্ষিতে উত্তর আয়ারল্যান্ড পুলিশ বোর্ড গঠনে কাজ করা, প্রধান প্রসিকিউটর হিসেবে ভিকটিমদের জন্য আইনকে কার্যকর করার ক্ষেত্রেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছেন তিনি ।

1963 সালে জন্ম কিয়ের স্টারমারের ৷ সারের ছোট্ট শহর অক্সটেডে তিনি বড় হয়েছেন ৷ তাঁর বাবা একটি টুলমেকার কারখানায় কাজ করতেন ৷ তাঁর মা ছিলেন নার্স ৷ ছোট থেকেই তাঁর মাকে কিয়ের অসুস্থ অবস্থায় দেখেছেন ৷ হাসপাতালে ভরতি হলে তাঁর মায়ের পাশে সর্বদা বাবাকে থাকতে দেখেছেন কিয়ের ৷

স্টারমারের জীবনীগ্রন্থের নাম ‘কিয়ের স্টারমার: দ্য় বায়োগ্রাফি’ ৷ লিখেছেন টম ব্ল্যাডউইন ৷ তিনি জানিয়েছেন, কিয়ের নামের জন্য স্টারমারকে অনেকের কাছে কটাক্ষ শুনতে হত ৷ কারণ, আইরিস বা গ্যালিক ভাষায় স্টারমারের অর্থ ব্রুডিং বা অন্ধকার ৷ যদিও তাঁর নাম রাখা হয়েছিল কিয়ের হার্ডির নাম থেকে ৷ কিয়ের হার্ডি ছিলেন উনিশ শতকের স্কটিশ শ্রমিক নেতা ৷ 1900 সালে হার্ডি লেবার পার্টি তৈরি করেন ৷ 124 বছর পর সেই লেবার পার্টির নেতা হিসেবে স্টারমার বসতে চলেছেন ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রীর চেয়ারে ৷

অসুস্থ মায়ের লড়াই বরাবর অনুপ্রেরণা জুগিয়েছে কিয়েরকে ৷ সেই লড়াই তাঁকে লিডস বিশ্ববিদ্যালয়ে আইন নিয়ে পড়াশোনার করার পরিস্থিতিতে নিয়ে যায় ৷ 1987 সালে আইনজীবী হিসেবে স্বীকৃতি পাওয়ার পর একজন ব্যারিস্টার হিসেবে তিনি কাজ শুরু করেন ৷ আইনজীবী হিসেবে অনেক হাইপ্রোফাইল মামলায় যেমন তিনি লড়েছেন, তেমনই বহু মানুষকে বিনামূল্যে আইনি পরিষেবাও দিয়েছেন ৷

এ হেন কিয়ের ফুটবলের খুব বড় ভক্ত ৷ ছাত্রাবস্থায় প্রতি রবিবার বন্ধুদের সঙ্গে ফুটবল খেলতেন ৷ নিজেকে ‘বক্স-টু-বক্স মিডফিল্ড জেনারেল’ বলতে ভালোবাসেন তিনি ৷ যদিও তাঁর বন্ধুরা তাঁর সঙ্গে একমত নন ৷ আর্সেনালের ভক্ত কিয়ের পরিবার নিয়ে এখনও মাঠে খেলা দেখতে যান ৷

কিয়ের স্টারমারের মা নার্স হিসেবে এনএইচএস-এ কাজ করতেন ৷ কাকতালীয়ভাবে তাঁর স্ত্রীও এখন এনএইচএস-এ কাজ করেন ৷ আইনজীবী হিসেবে কাজ করতে করতেই স্ত্রী ভিক্টোরিয়ার সঙ্গে পরিচয় কিয়েরের ৷ 2007 সালে তাঁরা বিয়ে করেন ৷ তাঁরা এখন দুই সন্তানের মা-বাবা ৷

নাইটহুড পাওয়ার পরপরই কিয়ের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত হয়ে পড়েন ৷ লেবার পার্টির সদস্য হিসেবে 2015 সালে তিনি প্রথমবার ব্রিটেনের সংসদের সদস্য হন ৷ 2015 থেকে 2016 তে ইউরোপীয় ইউনিয়নের শ্যাডো ইমিগ্রেশন মিনিস্টার (ছায়ামন্ত্রী) এবং 2016 থেকে 2020 শ্য়াডো সেক্রেটারি অফ স্টেট (ছায়া বিদেশসচিব) হিসেবে কাজ করেছেন তিনি ৷ 2020 সালের এপ্রিলে লেবার পার্টি তাঁকে নেতা হিসেবে মনোনীত করে ৷

নেতৃত্ব পাওয়ার চার বছরের মধ্যেই তিনি ক্ষমতায় ফেরালেন লেবার পার্টি ৷ ভোটে জিতে তিনি ব্রিটেনের ভোটারদের ধন্যবাদ দিয়েছেন ৷ পাশাপাশি 61 বছর বয়সী এই লেবার নেতা ব্রিটেনে সব ধরনের পরিবর্তন আনার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন ৷ তিনি বলেন, "পরিবর্তন এখান থেকেই শুরু হল ৷ কারণ এটা আপনার গণতন্ত্র, আপনার সম্প্রদায়, আপনার ভবিষ্যত ।"

লন্ডন, 5 জুলাই: 14 বছরের কনজারভেটিভ সরকারের পতন হল ব্রিটেনে ৷ এই সময়ের মধ্যে সেখানকার সরকার চালিয়েছেন পাঁচজন প্রধানমন্ত্রী ৷ এবার লেবার পার্টি ক্ষমতায় আসতে চলেছে সেখানে ৷ প্রধানমন্ত্রী হতে চলেছেন স্যার কিয়ের স্টারমার ৷ ফলে বিশ্বজুড়ে আলোচনা শুরু হয়েছে এই লেবার নেতাকে ঘিরে ৷ সকলেই জানতে চাইছেন তাঁর সম্পর্কে ৷ তাই জেনে নেওয়া যাক ব্রিটেনের পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী সম্পর্কে ৷

কিয়ের স্টারমার একজন আইনজীবী ৷ তিনি 2008 থেকে 2013 পর্যন্ত ইংল্যান্ড ও ওয়েলসে চিফ প্রসিকিউটর হিসেবে কাজ করেছেন ৷ তাঁকে বিরোধীরা কটাক্ষ করে বলে ‘লেফটি লন্ডন লইয়ার’ (লন্ডনের বাঁহাতি আইনজীবী) ৷ ক্রাউন প্রসিকিউশন সার্ভিসে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেওয়ার জন্য 2014 সালে তাঁকে নাইট উপাধি দেওয়া হয় ৷ যা নিয়েও বিরোধীরা তাঁকে কটাক্ষ করে ৷ ‘স্যার’ হওয়ায় তিনি সাধারণের ধরাছোঁয়ার বাইরে থাকেন বলেও অভিযোগ করে বিরোধীরা ৷

যদিও তাঁর পুরো কর্মজীবন ছিল, যাঁদের প্রয়োজন তাঁদের জন্য ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা নিয়ে । একজন মানবাধিকার আইনজীবী হিসেবে মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত লোকদের প্রতিনিধিত্ব করা থেকে শুরু করে গুড ফ্রাইডে চুক্তির প্রেক্ষিতে উত্তর আয়ারল্যান্ড পুলিশ বোর্ড গঠনে কাজ করা, প্রধান প্রসিকিউটর হিসেবে ভিকটিমদের জন্য আইনকে কার্যকর করার ক্ষেত্রেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছেন তিনি ।

1963 সালে জন্ম কিয়ের স্টারমারের ৷ সারের ছোট্ট শহর অক্সটেডে তিনি বড় হয়েছেন ৷ তাঁর বাবা একটি টুলমেকার কারখানায় কাজ করতেন ৷ তাঁর মা ছিলেন নার্স ৷ ছোট থেকেই তাঁর মাকে কিয়ের অসুস্থ অবস্থায় দেখেছেন ৷ হাসপাতালে ভরতি হলে তাঁর মায়ের পাশে সর্বদা বাবাকে থাকতে দেখেছেন কিয়ের ৷

স্টারমারের জীবনীগ্রন্থের নাম ‘কিয়ের স্টারমার: দ্য় বায়োগ্রাফি’ ৷ লিখেছেন টম ব্ল্যাডউইন ৷ তিনি জানিয়েছেন, কিয়ের নামের জন্য স্টারমারকে অনেকের কাছে কটাক্ষ শুনতে হত ৷ কারণ, আইরিস বা গ্যালিক ভাষায় স্টারমারের অর্থ ব্রুডিং বা অন্ধকার ৷ যদিও তাঁর নাম রাখা হয়েছিল কিয়ের হার্ডির নাম থেকে ৷ কিয়ের হার্ডি ছিলেন উনিশ শতকের স্কটিশ শ্রমিক নেতা ৷ 1900 সালে হার্ডি লেবার পার্টি তৈরি করেন ৷ 124 বছর পর সেই লেবার পার্টির নেতা হিসেবে স্টারমার বসতে চলেছেন ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রীর চেয়ারে ৷

অসুস্থ মায়ের লড়াই বরাবর অনুপ্রেরণা জুগিয়েছে কিয়েরকে ৷ সেই লড়াই তাঁকে লিডস বিশ্ববিদ্যালয়ে আইন নিয়ে পড়াশোনার করার পরিস্থিতিতে নিয়ে যায় ৷ 1987 সালে আইনজীবী হিসেবে স্বীকৃতি পাওয়ার পর একজন ব্যারিস্টার হিসেবে তিনি কাজ শুরু করেন ৷ আইনজীবী হিসেবে অনেক হাইপ্রোফাইল মামলায় যেমন তিনি লড়েছেন, তেমনই বহু মানুষকে বিনামূল্যে আইনি পরিষেবাও দিয়েছেন ৷

এ হেন কিয়ের ফুটবলের খুব বড় ভক্ত ৷ ছাত্রাবস্থায় প্রতি রবিবার বন্ধুদের সঙ্গে ফুটবল খেলতেন ৷ নিজেকে ‘বক্স-টু-বক্স মিডফিল্ড জেনারেল’ বলতে ভালোবাসেন তিনি ৷ যদিও তাঁর বন্ধুরা তাঁর সঙ্গে একমত নন ৷ আর্সেনালের ভক্ত কিয়ের পরিবার নিয়ে এখনও মাঠে খেলা দেখতে যান ৷

কিয়ের স্টারমারের মা নার্স হিসেবে এনএইচএস-এ কাজ করতেন ৷ কাকতালীয়ভাবে তাঁর স্ত্রীও এখন এনএইচএস-এ কাজ করেন ৷ আইনজীবী হিসেবে কাজ করতে করতেই স্ত্রী ভিক্টোরিয়ার সঙ্গে পরিচয় কিয়েরের ৷ 2007 সালে তাঁরা বিয়ে করেন ৷ তাঁরা এখন দুই সন্তানের মা-বাবা ৷

নাইটহুড পাওয়ার পরপরই কিয়ের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত হয়ে পড়েন ৷ লেবার পার্টির সদস্য হিসেবে 2015 সালে তিনি প্রথমবার ব্রিটেনের সংসদের সদস্য হন ৷ 2015 থেকে 2016 তে ইউরোপীয় ইউনিয়নের শ্যাডো ইমিগ্রেশন মিনিস্টার (ছায়ামন্ত্রী) এবং 2016 থেকে 2020 শ্য়াডো সেক্রেটারি অফ স্টেট (ছায়া বিদেশসচিব) হিসেবে কাজ করেছেন তিনি ৷ 2020 সালের এপ্রিলে লেবার পার্টি তাঁকে নেতা হিসেবে মনোনীত করে ৷

নেতৃত্ব পাওয়ার চার বছরের মধ্যেই তিনি ক্ষমতায় ফেরালেন লেবার পার্টি ৷ ভোটে জিতে তিনি ব্রিটেনের ভোটারদের ধন্যবাদ দিয়েছেন ৷ পাশাপাশি 61 বছর বয়সী এই লেবার নেতা ব্রিটেনে সব ধরনের পরিবর্তন আনার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন ৷ তিনি বলেন, "পরিবর্তন এখান থেকেই শুরু হল ৷ কারণ এটা আপনার গণতন্ত্র, আপনার সম্প্রদায়, আপনার ভবিষ্যত ।"

ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.