পেনসিলভেনিয়া, 5 নভেম্বর: হাতে আর মাত্র কয়েকঘণ্টা । ভারতীয় সময় মঙ্গলবার সন্ধ্যায় পরবর্তী প্রেসিডেন্ট বেছে নিতে ভোট দেবে আমেরিকা । কে হবেন হোয়াইট হাউজের বাসিন্দা ? একদিকে মূল্যবৃদ্ধি, গর্ভপাত বিল নিয়ে প্রচারে ঝড় তুলেছেন ডেমোক্র্যাট প্রার্থী কমলা হ্যারিস ৷ অন্যদিকে, কারচুপির অভিযোগ তুলে ডেমোক্র্যাটদের 'নীল দূর্গ' ভেঙে দেওয়ার প্রাণপণ চেষ্টা করেছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প ৷ পেনসিলভেনিয়ায় প্রচার শেষ করলেন যুযুধান দুই প্রতিদ্বন্দ্বী ৷ তবে কে ঝড় তুললেন, তা জানা যাবে নির্বাচনী ফলে ৷
কিন্তু পেনসিলভেনিয়াই কেন ? উত্তর হল অনিশ্চিত ভোটার ৷ মূলত লাতিন আমেরিকা ও পুয়ের্তো রিকানদের বাস পেনসিলভেনিয়াতে ৷ সীমান্ত পেরিয়ে এসে আমেরিকায় নিজেদের মাটি শক্ত করতে বছরের পর বছর প্রাণপণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন এই প্রদেশের অভিবাসীরা ৷ তাই তাঁদের মন জয় করতে পারলে নির্বাচনী ফলে অনেকটাই এগিয়ে থাকবেন ট্রাম্প কিংবা হ্যারিস ৷ রাজনৈতিক বিশ্লেষক মহলের দাবি, পেনসিলভেনিয়ার 19টি ইলেক্টোরাল কলেজের ভোটের গুরুত্ব তাই অপরিসীম ৷ সে কারণে নির্বাচনী প্রচারের শেষ ধাপে পেনসিলভেনিয়াকেই বেছে নেন দুই প্রতিদ্বন্দ্বী ৷
সোমবার সারাদিন পেনসিলভেনিয়াতেই কাটান ডেমোক্র্যাট প্রার্থী হ্যারিস ৷ এই প্রদেশের ভোট যে তাঁর কাছে অতি গুরুত্বপূর্ণ, অ্যালেনটাউনে নিজের বক্তব্যে বক্তব্যে স্পষ্ট বুঝিয়ে দেন হ্যারিস ৷ তিনি বলেন, "পেনসিলভেনিয়ার প্রতিটি মানুষের ভোট প্রয়োজন ৷ আপনারাই পারবেন পরিবর্তন আনতে ৷" এরপর সেখান থেকে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের জন্মস্থান স্ক্রানটনে পৌঁছে যান তিনি ৷ সেখানেও ভোটারদের মন জয় করার যথেষ্ট চেষ্টা করেন হ্যারিস ৷ নির্বাচনী প্রচারের শুরু থেকেই অধিকার রক্ষার প্রতিশ্রুতিকে হাতিয়ার করেন হ্যারিস ৷ নির্বাচনী প্রচারের শেষ লগ্নে পেনসিলভেনিয়ায় সেই বক্তব্যকেই তুলে ধরেন তিনি ৷
অন্যদিকে, সোমবার প্রথমে নর্থ ক্যারোলিনা, সেখান থেকে রিডিং-এ পৌঁছন ট্রাম্প ৷ তারপর সেখান থেকে পিটসবার্গ পৌঁছন তিনি ৷ উল্লেখ্য, প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের ম্য়াডিসন স্কোয়ার গার্ডেনের অনুষ্ঠানে পুয়ের্তো রিকাকে 'আবর্জনার ভাসমান দ্বীপ' বলে কটাক্ষ করেন কৌতুক শিল্পী টনি হিঞ্চক্লিফ ৷ তাঁর সেই বক্তব্যকে ভালো চোখে দেখেননি পেনসিলভেনিয়ার বাসিন্দারা ৷ এমনকী, রিপাবলিকানদের মধ্য়েও এই নিয়ে ক্ষোভের সৃষ্টি হয় ৷ তবে এবারের নির্বাচনে সেই বক্তব্যের তেমন একটা প্রভাব পড়বে না বলেই মনে করা হচ্ছে ৷ কারণ, স্থানীয়দের একাংশের মতে সীমান্ত সুরক্ষিত রয়েছে কি না, এলাকায় অপরাধ কমেছে কি না, দিনের শেষে এই বিষয়গুলির গুরুত্ব বেশি ৷ তবে এই পেনসিলভেনিয়াতেই নির্বাচনী প্রচারে এসে গুলিবিদ্ধ হন রিপাবলিকান প্রার্থী তথা মার্কিন প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ৷
তবে এই সমস্ত ভাবার সময় শেষ ৷ এবার শুধু অপেক্ষার পালা ৷ হোয়াইট হাউজের ক্ষমতা দখলে 538টি ইলেক্টোরাল ভোটের মধ্যে 270টি ভোট পেতে হবে ট্রাম্প বা হ্যারিসকে ৷ আর এখানেই সকলের চোখ আমেরিকার আটটি সুইং স্টেটের দিকে। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন ভোটের খেলা ঘুরিয়ে দিতে পারে- নেভাদা, অ্যারিজোনা, জর্জিয়া, নর্থ ক্যারোলিনা, পেনসিলভেনিয়া, মিশিগান এবং উইসকনসিন ৷ একটি ওয়েবসাইটের দাবি, এই আট প্রদেশে সামান্য হলেও এগিয়ে রয়েছেন ট্রাম্প । যদিও হাল ছাড়তে নারাজ মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিস ৷ সম্প্রতি উইসকনসিন ও নর্থ ক্যারোলিনায় প্রচারের সময় আত্মবিশ্বাসী হ্যারিস বলেন, "আমরা জিতবই ৷"