ETV Bharat / international

মার্কিন মসনদে ট্রাম্প, সিঁদুরে মেঘ দেখছেন পরিবেশবিদরা

উন্নয়নশীল দেশের মানুষদের জলবায়ু পরিবর্তনের জন্য সবচেয়ে বেশি মাশুল গুনতে হয় ৷ আরও একবার আমেরিকার প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েছেন ট্রাম্প ৷ তিনি কী করবেন ?

President Donald Trump on Climate Action
ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট হওয়ায় পৃথিবীর জলবায়ু সঙ্কট আরও গভীর হতে পারে (ছবি: এপিটিএন)
author img

By PTI

Published : 3 hours ago

নয়াদিল্লি, 6 নভেম্বর: আমেরিকায় এবার শুরু হচ্ছে ট্রাম্পের দ্বিতীয় শাসনকাল ! তাঁর এই জয় পৃথিবীর বা বলা ভালো পৃথিবীর জলবায়ুর পরিবর্তনের জন্য বড় ধাক্কা। এমনটাই মনে করছেন পরিবেশবিদদের সিংহভাগ ৷ 2016 থেকে 2020 সাল পর্যন্ত তিনি প্রেসিডেন্ট থাকাকালীন পরিবেশ রক্ষা সংক্রান্ত আন্তর্জাতিক চুক্তিগুলির তোয়াক্কা করেননি ৷ এবার জলবায়ু সঙ্কট নিয়ন্ত্রণের জন্য প্রয়োজনীয় অর্থ তিনি দিতে চাইবেন না বলেই আশঙ্কা করছেন পরিবেশ নিয়ে কাজ করে চলা আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞরা ৷ তার ফলে পরিবেশের সমস্যাগুলি আরও গভীর হবে ৷

দিল্লির সেন্টার ফর সায়েন্স অ্যান্ড এনভায়রনমেন্ট-এর ডিরেক্টর জেনারেল সুনীতা নারাইনের মতে, হোয়াইট হাউজের দৌড়ে ট্রাম্পের জয়ী হওয়াটা বিশ্বের জলবায়ু জন্য মোটেও সুখবর নয় ৷ বিশেষত তিনি ক্ষমতায় এসে ইনফ্লেশন রিডাকশন অ্যাক্ট-এর (আইআরএ) মতো দেশের অভ্য়ন্তরীণ নীতিগুলি প্রত্যাহার করে নিতে পারেন ৷ ইতিমধ্যে জলবায়ু সংক্রান্ত সমস্যাগুলির সমাধানে আমেরিকা অনেকটাই পিছিয়ে আছে ৷

তিনি আরও বলেন, "জলবায়ু নিয়ে জো বাইডেন প্রশাসন দেশের অভ্যন্তরে কঠোর পদক্ষেপ করেছে। তা আন্তর্জাতিক স্তরের থেকেও বেশি কঠিন ছিল ৷ ট্রাম্প হয়তো এই ধরনের প্রচেষ্টাগুলিকে প্রত্যাহার করে নেবেন ৷ তার মধ্যে আইআরএ-ও থাকবে ৷ এনিয়ে আমরা দুশ্চিন্তায় রয়েছি ৷" জলবায়ু পরিবর্তনের মোকাবিলায় আইআরএ-র মাধ্যমে ভর্তুকি ও করে ছাড় দিয়ে জলবায়ু রক্ষায় বিনিয়োগ করা হয় ৷

আইআরএ কেন গুরুত্বপূর্ণ ?

এর ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে সুনীতা বলেন, "আমেরিকা একাই সবচেয়ে বেশি পরিমাণে গ্রিনহাউজ গ্যাস নির্গমন করে ৷ সবচেয়ে বেশি পরিমাণে তেল ও গ্যাসের উৎপাদনকারী এবং রফতানিকারক দেশও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ৷ প্রতিদিন 13 মিলিয়ন তেল ও গ্যাস উৎপন্ন হয় ৷ 2030 সালের মধ্যে এই নির্গমন 50 শতাংশে নামিয়ে আনা এবং তা 2005 সালের থেকেও কম করা- এই লক্ষ্যমাত্র পূরণে আইআরএ-র ভূমিকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ ৷"

এদিকে ট্রাম্প কিন্তু এর উল্টো পথে হাঁটার ইঙ্গিত দিয়েছিলেন তাঁর প্রচারে ৷ জলবায়ু নিয়ে দুশ্চিন্তাকে একেবারে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে তিনি আরও বেশি পরিমাণে তেল ও গ্যাস উৎপাদনে জোর দিয়েছেন ৷ খোলাখুলিই জলবায়ু পরিবর্তনের মতো সমস্যাগুলিকে 'ভুয়ো' বলে ঠাট্টা করেছেন ৷ তাই প্রেসিডেন্ট হয়ে তিনি যদি আইআরএ প্রত্যাহার করে দেশে তেল উৎপাদন বৃদ্ধি করেন, তাহলে তা আন্তর্জাতিক স্তরে বিশ্বের জলবায়ু সংক্রান্ত প্রচেষ্টাগুলির জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর হয়ে উঠবে বলে আশঙ্কা পরিবেশ বিশেষজ্ঞদের ৷

প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট আগেই জানিয়েছিলেন, ওভাল হাউজে বসে প্যারিস চুক্তি থেকে আমেরিকাকে ফের বের করে আনবেন ৷ হয়তো রাষ্ট্রসংঘের 'ফ্রেমওয়ার্ক কনভেনশন অন ক্লাইমেট চেঞ্জ' থেকেও নিজের দেশকে প্রত্যাহার করে নেবেন ৷ ঠিক এই আশঙ্কা করেছেন রাজ্যসভার কংগ্রেস সাংসদ জয়রাম রমেশ ৷ তিনি প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংয়ের মন্ত্রিসভায় পরিবেশমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেছেন ৷

বুধবার রমেশ জানান, ডোনাল্ড ট্রাম্প ফিরে আসায় জলবায়ু পরিবর্তন সংক্রান্ত 2015 সালের প্যারিস চুক্তির ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত হয়ে গেল ৷ কারণ এর আগেও 2020 সালে তাঁর সময়ে আমেরিকা এই চুক্তি থেকে বেরিয়ে গিয়েছিল ৷ প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের আমলে আমেরিকা ফের এই চুক্তিতে যোগ দিয়েছিল ৷ আবার দ্বিতীয় ট্রাম্প জমানায় এমনটা হলে তা বিপর্যয়ের সামিল হবে ৷

প্রাক্তন কেন্দ্রীয় পরিবেশ মন্ত্রী আরও বলেন, "প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের আমলে আমেরিকা ফের 2015 সালের প্যারিস চুক্তিতে যুক্ত হয়েছিল ৷ এবার চুক্তির ভবিষ্যৎ একেবারে অন্ধকারে ৷ আমেরিকা যদি আবার নিজেদের প্রত্যাহার করে নেয়, তাহলে তার ফলাফল সাংঘাতিক হবে, যা বিপর্যয়ের সমতুল্য ৷" তবে দলগতভাবে কংগ্রেস অবশ্য ডোনাল্ড ট্রাম্পকে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের জয়ের জন্য শুভেচ্ছা জানিয়েছে ৷ সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গে বলেন, "বিশ্বের শান্তি ও সমৃদ্ধির জন্য আমরা আমেরিকার সঙ্গে একযোগে কাজ করার জন্য মুখিয়ে আছি ৷"

নয়াদিল্লি, 6 নভেম্বর: আমেরিকায় এবার শুরু হচ্ছে ট্রাম্পের দ্বিতীয় শাসনকাল ! তাঁর এই জয় পৃথিবীর বা বলা ভালো পৃথিবীর জলবায়ুর পরিবর্তনের জন্য বড় ধাক্কা। এমনটাই মনে করছেন পরিবেশবিদদের সিংহভাগ ৷ 2016 থেকে 2020 সাল পর্যন্ত তিনি প্রেসিডেন্ট থাকাকালীন পরিবেশ রক্ষা সংক্রান্ত আন্তর্জাতিক চুক্তিগুলির তোয়াক্কা করেননি ৷ এবার জলবায়ু সঙ্কট নিয়ন্ত্রণের জন্য প্রয়োজনীয় অর্থ তিনি দিতে চাইবেন না বলেই আশঙ্কা করছেন পরিবেশ নিয়ে কাজ করে চলা আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞরা ৷ তার ফলে পরিবেশের সমস্যাগুলি আরও গভীর হবে ৷

দিল্লির সেন্টার ফর সায়েন্স অ্যান্ড এনভায়রনমেন্ট-এর ডিরেক্টর জেনারেল সুনীতা নারাইনের মতে, হোয়াইট হাউজের দৌড়ে ট্রাম্পের জয়ী হওয়াটা বিশ্বের জলবায়ু জন্য মোটেও সুখবর নয় ৷ বিশেষত তিনি ক্ষমতায় এসে ইনফ্লেশন রিডাকশন অ্যাক্ট-এর (আইআরএ) মতো দেশের অভ্য়ন্তরীণ নীতিগুলি প্রত্যাহার করে নিতে পারেন ৷ ইতিমধ্যে জলবায়ু সংক্রান্ত সমস্যাগুলির সমাধানে আমেরিকা অনেকটাই পিছিয়ে আছে ৷

তিনি আরও বলেন, "জলবায়ু নিয়ে জো বাইডেন প্রশাসন দেশের অভ্যন্তরে কঠোর পদক্ষেপ করেছে। তা আন্তর্জাতিক স্তরের থেকেও বেশি কঠিন ছিল ৷ ট্রাম্প হয়তো এই ধরনের প্রচেষ্টাগুলিকে প্রত্যাহার করে নেবেন ৷ তার মধ্যে আইআরএ-ও থাকবে ৷ এনিয়ে আমরা দুশ্চিন্তায় রয়েছি ৷" জলবায়ু পরিবর্তনের মোকাবিলায় আইআরএ-র মাধ্যমে ভর্তুকি ও করে ছাড় দিয়ে জলবায়ু রক্ষায় বিনিয়োগ করা হয় ৷

আইআরএ কেন গুরুত্বপূর্ণ ?

এর ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে সুনীতা বলেন, "আমেরিকা একাই সবচেয়ে বেশি পরিমাণে গ্রিনহাউজ গ্যাস নির্গমন করে ৷ সবচেয়ে বেশি পরিমাণে তেল ও গ্যাসের উৎপাদনকারী এবং রফতানিকারক দেশও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ৷ প্রতিদিন 13 মিলিয়ন তেল ও গ্যাস উৎপন্ন হয় ৷ 2030 সালের মধ্যে এই নির্গমন 50 শতাংশে নামিয়ে আনা এবং তা 2005 সালের থেকেও কম করা- এই লক্ষ্যমাত্র পূরণে আইআরএ-র ভূমিকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ ৷"

এদিকে ট্রাম্প কিন্তু এর উল্টো পথে হাঁটার ইঙ্গিত দিয়েছিলেন তাঁর প্রচারে ৷ জলবায়ু নিয়ে দুশ্চিন্তাকে একেবারে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে তিনি আরও বেশি পরিমাণে তেল ও গ্যাস উৎপাদনে জোর দিয়েছেন ৷ খোলাখুলিই জলবায়ু পরিবর্তনের মতো সমস্যাগুলিকে 'ভুয়ো' বলে ঠাট্টা করেছেন ৷ তাই প্রেসিডেন্ট হয়ে তিনি যদি আইআরএ প্রত্যাহার করে দেশে তেল উৎপাদন বৃদ্ধি করেন, তাহলে তা আন্তর্জাতিক স্তরে বিশ্বের জলবায়ু সংক্রান্ত প্রচেষ্টাগুলির জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর হয়ে উঠবে বলে আশঙ্কা পরিবেশ বিশেষজ্ঞদের ৷

প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট আগেই জানিয়েছিলেন, ওভাল হাউজে বসে প্যারিস চুক্তি থেকে আমেরিকাকে ফের বের করে আনবেন ৷ হয়তো রাষ্ট্রসংঘের 'ফ্রেমওয়ার্ক কনভেনশন অন ক্লাইমেট চেঞ্জ' থেকেও নিজের দেশকে প্রত্যাহার করে নেবেন ৷ ঠিক এই আশঙ্কা করেছেন রাজ্যসভার কংগ্রেস সাংসদ জয়রাম রমেশ ৷ তিনি প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংয়ের মন্ত্রিসভায় পরিবেশমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেছেন ৷

বুধবার রমেশ জানান, ডোনাল্ড ট্রাম্প ফিরে আসায় জলবায়ু পরিবর্তন সংক্রান্ত 2015 সালের প্যারিস চুক্তির ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত হয়ে গেল ৷ কারণ এর আগেও 2020 সালে তাঁর সময়ে আমেরিকা এই চুক্তি থেকে বেরিয়ে গিয়েছিল ৷ প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের আমলে আমেরিকা ফের এই চুক্তিতে যোগ দিয়েছিল ৷ আবার দ্বিতীয় ট্রাম্প জমানায় এমনটা হলে তা বিপর্যয়ের সামিল হবে ৷

প্রাক্তন কেন্দ্রীয় পরিবেশ মন্ত্রী আরও বলেন, "প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের আমলে আমেরিকা ফের 2015 সালের প্যারিস চুক্তিতে যুক্ত হয়েছিল ৷ এবার চুক্তির ভবিষ্যৎ একেবারে অন্ধকারে ৷ আমেরিকা যদি আবার নিজেদের প্রত্যাহার করে নেয়, তাহলে তার ফলাফল সাংঘাতিক হবে, যা বিপর্যয়ের সমতুল্য ৷" তবে দলগতভাবে কংগ্রেস অবশ্য ডোনাল্ড ট্রাম্পকে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের জয়ের জন্য শুভেচ্ছা জানিয়েছে ৷ সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গে বলেন, "বিশ্বের শান্তি ও সমৃদ্ধির জন্য আমরা আমেরিকার সঙ্গে একযোগে কাজ করার জন্য মুখিয়ে আছি ৷"

ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.