ঢাকা, 1 সেপ্টেম্বর: হিংসা ও অস্থিরতা অনেকটাই কাটিয়ে উঠেছে বাংলাদেশ ৷ পরিস্থিতি এখন আগের তুলনায় অনেকটাই শান্ত ৷ তবে দেশটির একটি সংখ্যালঘু সংগঠনের মতে, 5 অগস্ট শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকারের পতনের পর বাংলাদেশে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের অন্তত 49 জন শিক্ষক-শিক্ষাকর্মীকে পদত্যাগ করতে বাধ্য করা হয়েছে । ডেইলি স্টার পত্রিকার খবর অনুযায়ী, শনিবার এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানিয়েছে বাংলাদেশ ছাত্র ঐক্য পরিষদ, বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের ছাত্র সংগঠন ৷
সংগঠনের সমন্বয়ক সজিব সরকার দাবি করেন, ৭৬ বছর বয়সী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ক্ষমতাচ্যুত হয়ে দেশ ছাড়ার পর বেশ কয়েকদিন ধরে হিংসার ঘটনায় সারাদেশে সংখ্যালঘু শিক্ষকরা শারীরিক নির্যাতনের শিকার হন এবং তাঁদের মধ্যে অন্তত 49 জনকে চাকরি ছাড়তে বাধ্য করা হয়েছে । যদিও, এদের মধ্যে 19 জনকে পরে তাদের কাজে পুনর্বহাল করা হয়েছিল বলে রিপোর্টে বলা হয়েছে। সজিব সরকার আরও জানান যে, ধর্মীয় ও জাতিগত সংখ্যালঘুরাও এই সময়ে একাধিক হামলা শিকার হয়েছেন ৷ তাঁদের উপর লুটপাট, মহিলাদের উপর হামলা, মন্দিরে ভাংচুর, বাড়িঘর ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে অগ্নিসংযোগ এমনকি সংখ্যালঘুদের হত্যার মতো ঘটনাও ঘটেছে ।
গত মাসে হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর বাংলাদেশ হিন্দু, বৌদ্ধ ও খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের সদস্যদের বিরুদ্ধে হামলার বেশ কয়েকটি ঘটনা ঘটেছে। সরকারি চাকরিতে বিতর্কিত কোটা ব্যবস্থা নিয়ে নজিরবিহীন সরকার বিরোধী ছাত্র-নেতৃত্বাধীন বিক্ষোভ, আন্দোলনের পর হাসিনা পদত্যাগ করে ভারতে চলে আসেন ।
নোবেল বিজয়ী মুহাম্মদ ইউনূস, যিনি অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হিসাবে নেতৃত্ব দিচ্ছেন, তিনি গত সপ্তাহে আয়োজিত একটি সংবর্ধনায় দেশটির হিন্দু সম্প্রদায়ের নেতাদের সঙ্গে দেখা করেন । ইউনূস ধর্মীয় সম্প্রীতির পরিবেশ উন্নীত করার প্রতিশ্রুতি দেন ৷ তিনি বলেন যে তিনি এমন একটি বাংলাদেশ গড়তে চান, যেখানে প্রত্যেকে নির্ভয়ে তাদের ধর্ম পালন করতে পারেন এবং যেখানে কোনও মন্দির পাহারা দিতে হবে না ।
বাংলাদেশ হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ এবং বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের সংগঠনগুলির সংকলিত তথ্য অনুযায়ী, হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকারের পতনের পর থেকে সে দেশের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের সদস্যরা 52টি জেলায় অন্তত 205টি হামলার ঘটনা ঘটেছে । হাসিনা সরকারের পতনের পর সারাদেশে হিংসার ঘটনায় বাংলাদেশে 230 জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন ৷ জুলাইয়ের মাঝামাঝি সময় থেকে কোটা বিরোধী বিক্ষোভ শুরু হওয়ার পর থেকে সে দেশের মৃতের সংখ্যা 600-এরও বেশি।