কাঠমান্ডু, 2 জুলাই: নেপালের রাজনীতিতে নয়া সমীকরণ তৈরি হল ৷ সেখানে হাত মেলালো নেপালি কংগ্রেস ও সিপিএন-ইউএমএল ৷ সেখানকার প্রধানমন্ত্রী পুষ্প কুমার দহল ওরফে প্রচণ্ডকে সরানোর উদ্দেশ্যেই এই জোট তৈরি হয়েছে ৷
নেপালি কংগ্রেসের কেন্দ্রীয় সদস্য তথা নেপালের প্রাক্তন বিদেশমন্ত্রী নারায়ণ প্রকাশ সৌদ জানিয়েছেন, সোমবার মধ্যরাতে নেপালি কংগ্রেসের প্রেসিডেন্ট শের বাহাদুর দেউবা ও কমিউনিস্ট পার্টি অফ নেপাল-ইউনিফায়েড মার্কিস্ট লেনিনিস্ট (সিপিএন-ইউএমএল) এর চেয়ারম্যান ও নেপালের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা ওলি জোট তৈরির বিষয়টি নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেন ৷
নেপালের হাউজ অফ রিপ্রেজেন্টেটিভে নেপালি কংগ্রেসের 89 জন সদস্য় রয়েছেন ৷ সিপিএন-ইউএমএল এর সদস্য সংখ্যা 78 ৷ এই দুই দলের সম্মিলিত শক্তি 167 ৷ নেপালের হাউজ অফ রিপ্রেজেন্টেটিভে মোট সদস্য সংখ্যা 275 ৷ সেখানে সরকার গড়ার জন্য প্রয়োজনীয় সংখ্যা 138 ৷ ফলে এই দুই দল সহজেই নেপালে সরকার গড়ে নেবে ৷
এতদিন সিপিএন-ইউএমএল এর কেপি শর্মা ওলি প্রচণ্ডর সঙ্গে ছিলেন ৷ গত চারমাস ধরে তাঁর সমর্থনেই প্রচণ্ডর সরকার চলেছে নেপালে ৷ তিনি সমর্থন তুলে নেওয়ার পরই নেপালি কংগ্রেসের সঙ্গে সিপিএন-ইউএমএল এর আলোচনা শুরু হয় ৷ গত শনিবার থেকে শুরু হয় এই আলোচনা ৷ তার পরই সোমবার জোটের বিষয়টি চূড়ান্ত হয় ৷
নেপালের বর্তমান সংসদের অবশিষ্ট সময়ের প্রথম পর্যায়ে কেপি শর্মা ওলির নেতৃত্বেই সরকার চলবে ৷ তিনি দেড় বছর প্রধানমন্ত্রী পদে থাকবেন ৷ পরবর্তী দেড় বছরে প্রধানমন্ত্রী হবেন নেপালি কংগ্রেসের শের বাহাদুর দেউবা ৷ এমনটাই জানিয়েছেন নারায়ণ প্রকাশ সৌদ ৷
নেপালের রাজনৈতিক অস্থিরতা গত দেড় দশক ধরে বারবার দেখা গিয়েছে ৷ গত 16 বছরে ভারতের প্রতিবেশী এই দেশে 13 বার সরকার বদল হয়েছে ৷ সেই ধারাই কি এবারও বজায় থাকবে ? নাকি সরকার বাঁচাতে সম্ভব হবেন প্রচণ্ড ৷ তাঁর দল সিপিএন-মাওইস্ট সেন্টারের সূত্রে খবর, কেপি শর্মার ওলির সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছেন প্রচণ্ড ৷ ফলে এখনই কিছু আন্দাজ করা উচিত নয় বলেই দাবি করেছেন সিপিএন-মাওইস্ট সেন্টারের সম্পাদক গণেশ শাহ ৷ সেখানকার সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর, সরকার বাঁচাতে ওলিকে প্রধানমন্ত্রী করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে প্রচণ্ডর তরফে ৷ কিন্তু সেই প্রস্তাব ওলি ফিরিয়ে দিয়েছেন বলে খবর ৷
যদিও নেপালি কংগ্রেস ও সিপিএন-ইউএমএল সরকার গঠন নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছে বলে খবর ৷ কোন দলের কাছে কোন মন্ত্রক যাবে, সেই সিদ্ধান্তও হয়ে গিয়েছে ৷ পাশাপাশি কোন দল কোন প্রদেশে সরকার গড়বে, সেই সিদ্ধান্তও হয়ে গিয়েছে বলে জানা গিয়েছে ৷
গত দেড় বছরে প্রচণ্ড তিনবার আস্থাভোটের সম্মুখীন হয়েছেন৷ এবারও তিনি পদত্যাগে নারাজ ৷ আস্থাভোটের মুখোমুখি হতে তিনি প্রস্তুত বলে দলের অন্দরে জানিয়ে দিয়েছেন প্রচণ্ড ৷ আর সেটা হলে সরকার বাঁচানোর জন্য আরও তিরিশ দিন সময় পাবেন নেপালের প্রধানমন্ত্রী ৷ সেই দেশের সংবিধানে তেমনই নিয়ম করা রয়েছে ৷