ইসলামাবাদ, 5 ফেব্রুয়ারি: পাকিস্তানের সাধারণ নির্বাচনে এবার অংশ নিতে চলেছে নতুন একটি রাজনৈতিক দল ৷ এই দলের নাম পাকিস্তান মারকাজি মুসলিম লিগ ৷ সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত খবর অনুযায়ী, এই রাজনৈতিক দলের নেপথ্যে রয়েছে 2008 সালে মুম্বইয়ে হওয়া সন্ত্রাসাবাদী হামলার মূলচক্রী হাফিজ সঈদ ৷
হাফিজ সঈদের লস্কর-ই-তইবা, জামাত-উদ-দাওয়া বা মিল্লি মুসলিম লিগ আগেই নিষিদ্ধ হয়েছে ৷ কিন্তু এই সংগঠনগুলির সঙ্গে বিভিন্ন সময় যাঁরা জড়িত ছিলেন, তাঁরাই পাকিস্তানের বিভিন্ন প্রদেশ থেকে এই পাকিস্তান মারকাজি মুসলিম লিগের প্রার্থী হয়েছেন, এমনই একটি প্রতিবেদনে দাবি করেছে বিবিসি উর্দু ৷ তাদের আরও দাবি, প্রার্থীদের মধ্যে হাফিজ সঈদের ছেলে, জামাই-সহ একাধিক আত্মীয়ও রয়েছেন ৷
হাফিজ সঈদ এখন জেলে ৷ তাকে পাকিস্তানের সন্ত্রাসবাদ বিরোধী আদালত 31 বছরের কারাদণ্ড দিয়েছে ৷ লাহোরের জেলে বন্দি এই সঈদকে 2008 সালের 10 ডিসেম্বর ‘বিশ্ব সন্ত্রাসবাদী’ বা গ্লোবাল টেরোরিস্ট হিসেবে ঘোষণা করে রাষ্ট্রসংঘ ৷ উল্লেখ্য, এই ঘোষণার কয়েকদিন আগেই, 26 নভেম্বর মুম্বইয়ে সন্ত্রাসবাদী হামলা হয় ৷ যে হামলার মূলচক্রী ছিল এই হাফিজ সঈদ ৷
শুধু মুম্বই হামলা নয়, ভারতে আরও একাধিক জঙ্গি হামলার সঙ্গে নাম জড়িয়ে রয়েছে হাফিজের ৷ তাঁকে ভারতীয় তদন্তকারী সংস্থাগুলি হেফাজতে নিতে চায় ৷ সেই কারণে গত 29 ডিসেম্বর তাঁকে প্রত্যর্পণ করানোর জন্য পাকিস্তানকে বলেছিল ভারত ৷ যদিও সেই বিষয়ে এখনও ফলপ্রসূ কোনও সমাধানসূত্র বের হয়নি ৷
অন্যদিকে, আগামী বৃহস্পতিবার হতে চলা পাকিস্তানের সাধারণ নির্বাচনে সঈদের ছেলে হাফিজ তালহাও ভোটে লড়ছে ৷ তাকে লস্কর-ই-তইবার দ্বিতীয় শীর্ষনেতা হিসেবে ধরা হয় ৷ তার ভোটে লড়ার বিষয়টিও ভারতের নজরে রয়েছে ৷ ভারত মনে করছে যে এই বিষয়টি নতুন নয় ৷ পাকিস্তান বরাবর সন্ত্রাসবাদে মদত দিয়ে এসেছে ৷ হাফিজ তালহাও মারকাজি মুসলিম লিগের হয়েই ভোটে লড়ছেন ৷ যদিও দলের মুখপাত্র এই রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সন্ত্রাসবাদী কোনও সংগঠনের কোনোরকম যোগ থাকার কথা অস্বীকার করেছেন ৷
এর আগে 2018 সালেও রাজনৈতিক দলের আড়ালে হাফিজ সঈদের সহযোগীরা ভোটে লড়ার চেষ্টা করেছিল ৷ কিন্তু সেবার পাকিস্তানের নির্বাচন কমিশন মিল্লি মুসলিম লিগ নামে ওই রাজনৈতিক দলকে নিষিদ্ধ করে দেয় ৷ কারণ, ওই সংগঠনের বেশ কয়েকজন নেতাকে আগেই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র নিষিদ্ধ করেছিল ৷ ফলে সেবার তাদের প্রচেষ্টা সফল হয়নি ৷ কিন্তু এবার ভোটে লড়ার প্রচেষ্টা অন্তত সফল হয়েছে ৷ যদিও 2018 সালের অন্য একটি রাজনৈতিক দলের হয়ে তারা ভোটে লড়েছিল ৷
সন্ত্রাসবাদী সংগঠনের সঙ্গে যোগ রয়েছে, এমন রাজনৈতিক দলকে কিভাবে নির্বাচনে অংশ নিতে দেওয়া হচ্ছে ? বিবিসির তরফে এই প্রশ্ন করা হয়েছিল পাকিস্তানের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের তথ্যমন্ত্রী মুর্তাজা সোলাঙ্গিকে ৷ তিনি অবশ্য পুরো ঘটনার দায় চাপিয়েছেন নির্বাচন কমিশনের উপরে ৷ তাঁর দাবি, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের নীতি তৈরি করার কোনও এক্তিয়ার নেই ৷ তাই এখানে তাঁদের সরকারের কোনও কিছু করণীয় নেই ৷ এই বিষয়ে পাকিস্তানের নির্বাচন কমিশনের তরফে কোনও প্রতিক্রিয়া দেওয়া হয়নি ৷
সংবাদসংস্থা - পিটিআই
আরও পড়ুন: