ঢাকা, 18 জুলাই: চাকরিতে সংরক্ষণের বিরুদ্ধে আন্দোলনে আজও উত্তাল বাংলাদেশ ৷ এদিন আন্দোলনকারী ছাত্র-যুবদের ডাকে দেশজুড়ে ধর্মঘটের মধ্যেই নতুন করে হিংসা ছড়িয়েছে ৷ এই পরিস্থিতিতে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে আলোচনায় বসার ইচ্ছেপ্রকাশ করেছে শেখ হাসিনার সরকার ৷ এরই মধ্যে হিংসায় কমপক্ষে 18 জনের প্রাণ চলে গিয়েছে বলে জানিয়েছে সংবাদ সংস্থা পিটিআই।
সরকারি সংবাদ সংস্থা বিএসএস জানিয়েছে, আইনশৃঙ্খলা রক্ষার জন্য প্রশাসন রাজধানী ঢাকা-সহ সারা দেশে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের কর্মীদের মোতায়েন করেছে । সাংবাদিক সম্মেলন করে সে দেশের আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেন, সরকার আন্দোলনরত পড়ুয়াদের সঙ্গে আলোচনায় বসার সিদ্ধান্ত নিয়েছে এবং তাঁকে ও শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরীকে আলোচনার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে । তাঁর কথায়, "যখনই তাঁরা (আন্দোলনকারীরা) রাজি হবে, আমরা বসব...এটি আজও (বৃহস্পতিবার) হতে পারে ৷"
এক প্রেস ব্রিফিংয়ে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, "সরকার সংরক্ষণ সংস্কারপন্থীদের সঙ্গে আলোচনায় রাজি হয়েছে ।" বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সুপ্রিম কোর্টে বিচারাধীন সংরক্ষণ সংক্রান্ত মামলার দ্রুত শুনানির জন্য আইনমন্ত্রীকে উদ্যোগ নিতে বলেছেন বলেও জানান আনিসুল হক । তিনি জানান যে, তিনি ইতিমধ্যেই অ্যাটর্নি জেনারেলকে এ বিষয়ে উদ্যোগ নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন এবং এজি মামলার দ্রুত শুনানির জন্য রবিবার সুপ্রিম কোর্টে আপিল করবেন ।
হিংসার ঘটনায় চার শিক্ষার্থী-সহ অন্তত সাতজনের প্রাণহানির ঘটনার তদন্তে হাইকোর্টের বিচারপতি খান্দকার দিলীরুজ্জামানের নেতৃত্বে একটি বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ সরকার । প্রধান বিচারপতির অনুমোদন সাপেক্ষে কমিটি গঠন করা হবে । আইনমন্ত্রী আন্দোলনকারীদের কাছে তাঁদের বিক্ষোভ শেষ করতে বা স্থগিত রাখতে অনুরোধ করেছেন ৷ কারণ সরকার আলোচনা করতে প্রস্তুত ।
বৃহস্পতিবার বাংলাদেশে হাজার হাজার শিক্ষার্থী দেশব্যাপী ধর্মঘট কার্যকর করার চেষ্টা করলে নতুন করে হিংসা ছড়ায় ৷ সংবাদমাধ্যম এবং প্রত্যক্ষদর্শীরা বলেন যে, বিক্ষোভকারীরা পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে লিপ্ত হন ৷ এই ঘটনায় অনেকে আহত হয়েছেন ৷ এই পরিস্থিতিতে নাগরিকদের বাড়ির ভিতরে থাকতে অনুরোধ করা হয়েছে । মালিকরা আজ শপিং মলগুলি বন্ধই রাখেন ৷
টিভি ফুটেজে দেখা গিয়েছে, পুলিশ বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে রাবার বুলেট এবং কাঁদানে গ্যাস ছোড়ে ৷ প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বিক্ষোভকারীরা ঢাকার রামপুরা এলাকায় রাষ্ট্র পরিচালিত বাংলাদেশ টেলিভিশন ভবন অবরোধ করে রাখেন এবং তার সামনের অংশ ক্ষতিগ্রস্ত করেন ৷ যার ফলে সেখানে আটকে পড়েন সাংবাদিক-সহ প্রায় 1,200 কর্মী ৷
বৃহস্পতিবার অনেক অফিস তাঁদের কর্মীদের এদিন বাড়ি থেকে কাজ করতে বলে । ঢাকা এবং দেশের বাকি অংশের মধ্যে বাস পরিষেবাও বন্ধ করে দেওয়া হয় ৷ ঢাকার গাবতলী ও সায়েদাবাদ বাস টার্মিনালের বিভিন্ন বাস কাউন্টারের কর্মীরা দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, বাস মালিকরা তাঁদের রাস্তায় কোনও বাস না চালাতে বলেছেন । আধাসামরিক বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি), রায়ট পুলিশ এবং এলিট অ্যান্টি ক্রাইম র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) ঢাকা ও অন্যান্য বড় শহরের রাস্তায় টহল দেওয়ার কারণে সরকারি অফিস এবং ব্যাংক খোলা ছিল ৷ কিন্তু সীমিত পরিবহণের কারণে উপস্থিতি ছিল কম ।