ETV Bharat / health

তরুণদের মধ্যে ধৈর্য ও সহনশীলতা কমে যাচ্ছে - Youths Tolerance

author img

By ETV Bharat Bangla Team

Published : Jun 29, 2024, 3:10 PM IST

Patience and Tolerance: বর্তমান সময়ে তরুণদের মধ্যে ধৈর্য ও সহিষ্ণুতার অভাব প্রকট। সম্পর্ক হোক বা চাকরি, তাড়াহুড়ো হোক বা অধৈর্যতা সব কাজেই আজকালকার প্রজন্মের আচরণে দেখা যায়। বিশেষজ্ঞদের মতে, প্রযুক্তিগত অগ্রগতি, সামাজিক চাপ এবং দ্রুত পরিবর্তনশীল জীবনধারার কারণে তরুণদের মধ্যে এই ধৈর্যের অভাব দেখা দিয়ে থাকে ৷

Patience and Tolerance News
তরুণদের মধ্যে ধৈর্য (নিজস্ব চিত্র)

হায়দারাবাদ: বর্তমান সময়ে প্রযুক্তিগত অগ্রগতি, সামাজিক চাপ, কাজের প্রতি উচ্চপ্রত্যাশা, সম্পর্ক ছাড়াও জীবনে অনেক কারণ রয়েছে যা তরুণ প্রজন্মের মধ্যে ধৈর্যের অভাব সৃষ্টি করছে। আজকের প্রজন্মের বেশিরভাগ তরুণই সবকিছু প্রতিটি ফলাফল দ্রুত চায়।

আজকের সময়ে, প্রতিটি সুবিধার আইটেম, প্রতিটি ধরণের পছন্দের খাবার এমনকি ডেটিং পার্টনারও অ্যাপের মাধ্যমে সহজেই পাওয়া যায় ৷ যার ফলে জীবনে সুবিধা এবং বিকল্প দুটোই বেড়েছে। যা প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে পরিস্থিতির প্রতি ধৈর্য, সহনশীলতার অভ্যাস এবং প্রয়োজনীয়তা হ্রাস করে। মনোবিজ্ঞানীদের মতে, তরুণদের মধ্যে এই ক্রমবর্ধমান প্রবণতা শুধুমাত্র তাদের চিন্তাভাবনা বা কর্ম নয়, তাদের সম্পর্ককেও প্রভাবিত করে ।

কারণ ও প্রভাব (Cause and effect): উত্তরাখণ্ডের মনোবিজ্ঞানী ডঃ রেনুকা জোশি বলেন, "জীবনে ধৈর্য এবং সহনশীলতা শুধুমাত্র মানসিক শান্তির জন্যই প্রয়োজনীয় নয়, এটি জীবনের বিভিন্ন ক্ষেত্রে সাফল্যের পথও প্রশস্ত করে। বর্তমান যুগে সোশ্যাল মিডিয়া ও ডিজিটাল জগতের কারণে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ার অভ্যাস ও প্রযুক্তিগত অগ্রগতির কারণে এমনটা হয়ে থাকে ৷ এক ক্লিকে জিনিস এবং সম্পর্কের সহজলভ্যতা ছাড়াও আরও অনেক কারণ রয়েছে, যা কেবল তরুণ প্রজন্মকেই নয় প্রায় প্রতিটি প্রজন্মের মানুষকে প্রভাবিত করছে।" তিনি আরও জানান, অনেক কারণ রয়েছে যা যুবকদের মধ্যে ধৈর্যের অভাব এবং এর বৃদ্ধির ফল হতে পারে ।

কর্মজীবনে প্রতিযোগিতা এবং সামাজিক প্রত্যাশা: সমাজ ও পরিবারের প্রত্যাশার কারণে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব সাফল্য ও স্থিতিশীলতা অর্জনের প্রত্যাশা তরুণদের মধ্যে ধৈর্যের অভাব সৃষ্টি করতে পারে ।

সম্পর্কের মধ্যে তাৎক্ষণিক পরিতৃপ্তির আকাঙ্খা: ব্যক্তিগত সম্পর্কের কথা বলতে গেলে সম্পর্কের পাশাপাশি বোঝাপড়ার অভাব দেখা যায়। এছাড়াও প্রতিটি সমস্যার দ্রুত সমাধান বা তাৎক্ষণিক পরিতৃপ্তির আকাঙ্খা অনেক যুবকদের মধ্যেই দেখা যায় ৷ বিশেষত যারা মেট্রো বা বড় শহরে বসবাস করে, তাদের অনেকের মধ্যে সম্পর্ক নিয়ে নানা সমস্যা দেখা দেয় ৷ তারা বেশি কিছু না-ভেবেই সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেন ৷ অনেক সময় এই সিদ্ধান্তগুলি বা ছোটখাটো বিষয়গুলিও সম্পর্ক শেষ হওয়ার কারণ হয়ে দাঁড়ায়।

চাকরিতে প্রত্যাশা: বর্তমান যুগে চাকরির ক্ষেত্রেও তরুণদের প্রত্যাশা অনেক বেশি। তারা চাকরির শুরু থেকেই পদোন্নতি ও উচ্চ বেতন চান। কিন্তু প্রত্যাশা পূরণ না-হলে দ্রুত হতাশ হয়ে পড়েন ৷ ফলে ঘনঘন চাকরি পরিবর্তন করতে শুরু করেন। কর্মজীবনে দ্রুত অগ্রগতির আকাঙ্খা ও ধৈর্যের অভাবে কাজের গুণমানে প্রভাব ফেলে।

ডঃ রেনুকা জোশি আরও ব্যাখ্যা করেন, ধৈর্যের অভাব একটি আচরণগত সমস্যা ৷ যা ধীরে ধীরে বাড়তে থাকে ৷ কখনও কখনও মানসিক এই অস্থিরতা চাপের কারণ হয়ে দাঁড়ায়। শৈশব থেকেই পরিবারে এমন একটি পরিবেশ তৈরি করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, যেখানে শিশুরা কঠোর পরিশ্রমের প্রয়োজনীয়তা, কাজ বা সম্পর্কের স্থিতিশীলতা বুঝতে শিখবে ৷ পাশাপাশি যে কোনও কাজের জন্য কঠোর পরিশ্রম ও ধৈর্য এবং পারস্পরিক সম্প্রীতির প্রয়োজন, তা যেন তারা বুঝতে পারে।

তিনি আরও জানান, ধৈর্যের অভাবে যে সব সমস্যা দেখা যায়, তা এড়াতে কিছু অভ্যাস গড়ে তোলা দরকার ৷ সেগুলি নিয়মিত অনুশীলনে পরিস্থিতির উন্নতি করা যেতে পারে।

যেমন, পরিষ্কার এবং বাস্তবসম্মত লক্ষ্য নির্ধারণ করে এবং সেগুলির প্রতি মনোনিবেশ করে ধৈর্য বাড়ানো যেতে পারে। ধাপে ধাপে কঠোর পরিশ্রমের সুফল বুঝুন এবং কাজ যাইহোক না কেন, শর্টকাট নেবেন না ৷ বরং পছন্দসই ফলাফল পেতে সঠিক পথ বেছে নিন । এতে কাজের অভিজ্ঞতা বাড়বে।

বর্তমান যুগে তাৎক্ষণিক সাফল্য, সম্পর্ক এবং বিনোদন-সহ অনেক বিষয়ে সোশাল ও ডিজিটাল মিডিয়ায় এমন জিনিস এবং গল্প প্রচারিত হয় যা মনোযোগে চিড় ধরায় । ছোট বা বড় পর্দায় দেখা এসব গল্প বাস্তবের সঙ্গে একেবারেই আলাদা।

হায়দারাবাদ: বর্তমান সময়ে প্রযুক্তিগত অগ্রগতি, সামাজিক চাপ, কাজের প্রতি উচ্চপ্রত্যাশা, সম্পর্ক ছাড়াও জীবনে অনেক কারণ রয়েছে যা তরুণ প্রজন্মের মধ্যে ধৈর্যের অভাব সৃষ্টি করছে। আজকের প্রজন্মের বেশিরভাগ তরুণই সবকিছু প্রতিটি ফলাফল দ্রুত চায়।

আজকের সময়ে, প্রতিটি সুবিধার আইটেম, প্রতিটি ধরণের পছন্দের খাবার এমনকি ডেটিং পার্টনারও অ্যাপের মাধ্যমে সহজেই পাওয়া যায় ৷ যার ফলে জীবনে সুবিধা এবং বিকল্প দুটোই বেড়েছে। যা প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে পরিস্থিতির প্রতি ধৈর্য, সহনশীলতার অভ্যাস এবং প্রয়োজনীয়তা হ্রাস করে। মনোবিজ্ঞানীদের মতে, তরুণদের মধ্যে এই ক্রমবর্ধমান প্রবণতা শুধুমাত্র তাদের চিন্তাভাবনা বা কর্ম নয়, তাদের সম্পর্ককেও প্রভাবিত করে ।

কারণ ও প্রভাব (Cause and effect): উত্তরাখণ্ডের মনোবিজ্ঞানী ডঃ রেনুকা জোশি বলেন, "জীবনে ধৈর্য এবং সহনশীলতা শুধুমাত্র মানসিক শান্তির জন্যই প্রয়োজনীয় নয়, এটি জীবনের বিভিন্ন ক্ষেত্রে সাফল্যের পথও প্রশস্ত করে। বর্তমান যুগে সোশ্যাল মিডিয়া ও ডিজিটাল জগতের কারণে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ার অভ্যাস ও প্রযুক্তিগত অগ্রগতির কারণে এমনটা হয়ে থাকে ৷ এক ক্লিকে জিনিস এবং সম্পর্কের সহজলভ্যতা ছাড়াও আরও অনেক কারণ রয়েছে, যা কেবল তরুণ প্রজন্মকেই নয় প্রায় প্রতিটি প্রজন্মের মানুষকে প্রভাবিত করছে।" তিনি আরও জানান, অনেক কারণ রয়েছে যা যুবকদের মধ্যে ধৈর্যের অভাব এবং এর বৃদ্ধির ফল হতে পারে ।

কর্মজীবনে প্রতিযোগিতা এবং সামাজিক প্রত্যাশা: সমাজ ও পরিবারের প্রত্যাশার কারণে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব সাফল্য ও স্থিতিশীলতা অর্জনের প্রত্যাশা তরুণদের মধ্যে ধৈর্যের অভাব সৃষ্টি করতে পারে ।

সম্পর্কের মধ্যে তাৎক্ষণিক পরিতৃপ্তির আকাঙ্খা: ব্যক্তিগত সম্পর্কের কথা বলতে গেলে সম্পর্কের পাশাপাশি বোঝাপড়ার অভাব দেখা যায়। এছাড়াও প্রতিটি সমস্যার দ্রুত সমাধান বা তাৎক্ষণিক পরিতৃপ্তির আকাঙ্খা অনেক যুবকদের মধ্যেই দেখা যায় ৷ বিশেষত যারা মেট্রো বা বড় শহরে বসবাস করে, তাদের অনেকের মধ্যে সম্পর্ক নিয়ে নানা সমস্যা দেখা দেয় ৷ তারা বেশি কিছু না-ভেবেই সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেন ৷ অনেক সময় এই সিদ্ধান্তগুলি বা ছোটখাটো বিষয়গুলিও সম্পর্ক শেষ হওয়ার কারণ হয়ে দাঁড়ায়।

চাকরিতে প্রত্যাশা: বর্তমান যুগে চাকরির ক্ষেত্রেও তরুণদের প্রত্যাশা অনেক বেশি। তারা চাকরির শুরু থেকেই পদোন্নতি ও উচ্চ বেতন চান। কিন্তু প্রত্যাশা পূরণ না-হলে দ্রুত হতাশ হয়ে পড়েন ৷ ফলে ঘনঘন চাকরি পরিবর্তন করতে শুরু করেন। কর্মজীবনে দ্রুত অগ্রগতির আকাঙ্খা ও ধৈর্যের অভাবে কাজের গুণমানে প্রভাব ফেলে।

ডঃ রেনুকা জোশি আরও ব্যাখ্যা করেন, ধৈর্যের অভাব একটি আচরণগত সমস্যা ৷ যা ধীরে ধীরে বাড়তে থাকে ৷ কখনও কখনও মানসিক এই অস্থিরতা চাপের কারণ হয়ে দাঁড়ায়। শৈশব থেকেই পরিবারে এমন একটি পরিবেশ তৈরি করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, যেখানে শিশুরা কঠোর পরিশ্রমের প্রয়োজনীয়তা, কাজ বা সম্পর্কের স্থিতিশীলতা বুঝতে শিখবে ৷ পাশাপাশি যে কোনও কাজের জন্য কঠোর পরিশ্রম ও ধৈর্য এবং পারস্পরিক সম্প্রীতির প্রয়োজন, তা যেন তারা বুঝতে পারে।

তিনি আরও জানান, ধৈর্যের অভাবে যে সব সমস্যা দেখা যায়, তা এড়াতে কিছু অভ্যাস গড়ে তোলা দরকার ৷ সেগুলি নিয়মিত অনুশীলনে পরিস্থিতির উন্নতি করা যেতে পারে।

যেমন, পরিষ্কার এবং বাস্তবসম্মত লক্ষ্য নির্ধারণ করে এবং সেগুলির প্রতি মনোনিবেশ করে ধৈর্য বাড়ানো যেতে পারে। ধাপে ধাপে কঠোর পরিশ্রমের সুফল বুঝুন এবং কাজ যাইহোক না কেন, শর্টকাট নেবেন না ৷ বরং পছন্দসই ফলাফল পেতে সঠিক পথ বেছে নিন । এতে কাজের অভিজ্ঞতা বাড়বে।

বর্তমান যুগে তাৎক্ষণিক সাফল্য, সম্পর্ক এবং বিনোদন-সহ অনেক বিষয়ে সোশাল ও ডিজিটাল মিডিয়ায় এমন জিনিস এবং গল্প প্রচারিত হয় যা মনোযোগে চিড় ধরায় । ছোট বা বড় পর্দায় দেখা এসব গল্প বাস্তবের সঙ্গে একেবারেই আলাদা।

ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.