বিট একটি সুপার ফুড যা শুধুমাত্র আপনার ডিনার প্লেটকে রঙিন করে না, অনেক অমূল্য স্বাস্থ্য উপকারিতাও প্রদান করে । গাঢ় লাল রঙের এই সবজিটি শরীরের জন্য পুষ্টিতে ভরপুর । আপনি এটি স্যালাডে, জুস হিসাবে পান করুন বা স্যুপে যোগ করুন, বিট ভীষণভাবে উপকারী । এর নিয়মিত খাওয়া আপনার ত্বককে শুধু উজ্জ্বল করে না, আপনার হার্ট ও মনকেও সুস্থ রাখে ।
মুম্বই-ভিত্তিক ডায়েটিশিয়ান এবং পুষ্টিবিদ রুশেল জর্জ বলেন, "বিট রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে, রক্তস্বল্পতা দূর করতে এবং হৃদরোগ প্রতিরোধে সাহায্য করতে পারে । এতে প্রচুর পরিমাণে নাইট্রেট থাকে ৷ যা শরীরে নাইট্রিক অক্সাইডে রূপান্তরিত হয় । এই নাইট্রিক অক্সাইড রক্তনালীগুলিকে প্রসারিত করে ৷ যা রক্ত সঞ্চালনকে উন্নত করে । এছাড়াও বিটে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট পাওয়া যায় । যা ফ্রি র্যাডিক্যালের কারণে হওয়া ক্ষতি থেকে শরীরকে রক্ষা করে । এটি ক্রীড়াবিদদের জন্য বিশেষভাবে উপকারী ৷ কারণ এটি স্ট্যামিনা বাড়াতে সাহায্য করে ।"
বিটে পাওয়া পুষ্টিগুণ:
তিনি বলেন, বিটে প্রচুর পরিমাণে অন্যান্য প্রয়োজনীয় পুষ্টিও পাওয়া যায় । যার কয়েকটি নিম্নরূপ ।
আয়রন: বিটে প্রচুর পরিমাণে আয়রন রয়েছে ৷ যা রক্ত বৃদ্ধি এবং রক্তাল্পতা প্রতিরোধে সাহায্য করে ।
ফোলেট (ভিটামিন B9): এই পুষ্টি কোষের বৃদ্ধি এবং মেরামতের জন্য অপরিহার্য, বিশেষ করে গর্ভবতী মহিলাদের জন্য ।
পটাসিয়াম: পটাশিয়াম হার্টবিটকে নিয়মিত রাখে এবং পেশীর জন্য উপকারী ।
ফাইবার: পরিপাকতন্ত্রকে সুস্থ রাখতে এবং ওজন নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে ।
ভিটামিন সি: এটি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা শক্তিশালী করে এবং ত্বককে উজ্জ্বল করে ।
অ্যান্টি-অক্সিডেন্টস (বেটালাইনস): শরীরকে ডিটক্স করতে সহায়তা করে ।
বিটের উপকারিতা: রুশেল জর্জ বলেন, 'নিয়মিত স্যালাড, স্যুপ, জুস বা অন্যান্য উপায়ে খাদ্যতালিকায় বিট অন্তর্ভুক্ত করলে অনেক স্বাস্থ্য উপকার পাওয়া যায় । যার কয়েকটি নিম্নরূপ ।
বিট রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে এবং হৃদরোগের ঝুঁকি কমায় ।
এতে প্রচুর পরিমাণে আয়রন এবং ফোলেট রয়েছে ৷ যা রক্ত বৃদ্ধি এবং রক্তাল্পতা প্রতিরোধে সাহায্য করে ৷
এতে বেটালাইনস নামক একটি অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট রয়েছে যা শরীরের প্রদাহ কমাতে সাহায্য করে এবং ক্যানসার এবং অন্যান্য অনেক রোগ থেকে রক্ষা করতেও সাহায্য করে ।
বিট শরীর থেকে টক্সিন দূর করতে কাজ করে যা লিভার ও কিডনিকে সুস্থ রাখে ।
বিট উপস্থিত ফাইবার পরিপাকতন্ত্রের উন্নতি করে ৷ কোষ্ঠকাঠিন্য থেকে মুক্তি দেয় এবং শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে ।
বিটের রস স্ট্যামিনা বাড়াতে এবং ক্লান্তি কমাতে সাহায্য করে । যাঁরা খেলাধুলা এবং ওয়ার্কআউট করেন তাঁদের জন্য এটি বিশেষভাবে উপযোগী ।
বিটে উপস্থিত অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট এবং ভিটামিন সি ত্বককে চকচকে ও চুলকে মজবুত করে ।
বিট খেলে মস্তিষ্কের কার্যকারিতা উন্নত করে এবং স্মৃতিশক্তি উন্নত করে ।
কাদের এটি খাওয়া উচিত নয় ?
তিনি বলেন, "ডায়াবেটিস, কিডনিতে পাথর এবং নিম্ন রক্তচাপে ভুগছেন এমন ব্যক্তিদের নিয়মিত খাদ্যতালিকায় বিট অন্তর্ভুক্ত করার আগে অবশ্যই একজন ডাক্তারের সঙ্গে পরামর্শ করা উচিত । প্রকৃতপক্ষে এটিতে একটি উচ্চ গ্লাইসেমিক সূচক রয়েছে যা বেশি পরিমাণে খাওয়া হলে, রক্তে শর্করার মাত্রা বৃদ্ধি করতে পারে এবং ডায়াবেটিস রোগীদের সমস্যা বাড়াতে পারে । এতে অক্সালেটও রয়েছে যা পাথরের রোগীদের সমস্যা বাড়িয়ে দিতে পারে ।
(বিশেষ দ্রষ্টব্য: এই প্রতিবেদনে উল্লেখিত তথ্য শুধুমাত্র ধারণা আর সাধারণ জ্ঞানের জন্যই লেখা হয়েছে ৷ এখানে উল্লেখিত কোনও পরামর্শ অনুসরণের আগে অবশ্যই বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের সঙ্গে যোগাযোগ করুন ৷ যদি আগে থেকেই কোনও স্বাস্থ্য সমস্যা থেকে থাকে, তা আগেই চিকিৎসককে জানাতে হবে ৷)