কলকাতা, 24 জুলাই: গানে গানে সম্ভ্রান্ত পরিবারের মেয়ে গৌরী দেবীর সঙ্গে আলাপ হয়েছিল মহানায়কের। মহানায়কের জ্যাঠতুতো বোনের সঙ্গে গান শিখতেন গৌরী দেবী। একদিন তাঁদের বাড়িতে এসে মহানায়কের গান শুনতে পান গৌরী দেবী। চেঁচিয়ে বন্ধুকে ডাকেন। তখন গৌরী দেবীর গলাপৌঁছয় মহানায়কের কাছে। উঁকি মেরে দেখতে পান অসম্ভব সুন্দরী গৌরীকে। এরপর তাঁদের প্রেম জমে এবং গল্প এগোয় বিয়ে পর্যন্ত। সেই মহানায়ক ব্যক্তিগত জীবনে জড়িয়েছেন নানা বিতর্কে ৷ সেই সব কিছু নিয়ে খোলাখুলি কথা বললেন উত্তম কুমারের ভাইঝি তথা মহানায়কের মেজ ভাই বরুণ কুমার চট্টোপাধ্যায়ের মেয়ে মৌসুমী দত্ত ৷
মহানায়কের ভাইঝি বলেন, "আমাদেরকে এমন প্রশ্নের মুখোমুখি অনেক সময়েই হতে হয়েছে যে জ্যাঠা আমাদের বাড়িতে থাকেন নাকি ময়রা স্ট্রিটে সুপ্রিয়া চৌধুরীর বাড়িতে থাকেন। আমাদের পরিবার খুব রক্ষণশীল। ফলে, কোনও ব্যাপারেই কথা বলার স্বাধীনতা আমাদের ছিল না। তাই আমাদের মুখ বন্ধই থাকত।"
উত্তম কুমার থেকে তখন তিনি হয়েছেন বাংলা সিনেমার মহানায়ক। সকলের গুরু। কিন্তু লোকমুখে শোনা যায়, তাঁর এই পেশাকে নাকি কখনওই ভাল চোখে দেখতেন না গৌরীদেবী। ইন্ডাস্ট্রির প্রায় সকলেই বলেন, মহানায়কের সাফল্য নিয়ে নাকি তেমন মাথাব্যথাই ছিল না তাঁর। বাড়িতে কোনও প্রযোজক এলে, তাঁর একটাই প্রশ্ন, কত টাকা দিচ্ছেন। ব্যস ওইটুকুই! স্বামীর অভিনয়, অভিনয় জীবনে তাঁর হতাশা–এসব নিয়ে বিন্দুমাত্র বিচলিত ছিলেন না তিনি। যদিও তাঁর ভাইঝির কাছ থেকে জানা গিয়েছে উত্তম বাড়ি ফিরলেই তাঁকে নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়তেন গৌরী দেবী।
এরপর মহানায়কের ভাইঝি ফিরে যান তাঁর স্কুলজীবনে ৷ তিনি বলেন, "বন্ধুরা ভাবত আমরা মহানায়কের পরিবারের লোক বলে চপ কাটলেট খেয়েই থাকি সারাদিন। আমরা ভাত ডাল মাছ খাই না। আমি তাঁদের ভুল ভেঙে দিয়েছিলাম। আমরাও যে তাঁদের মতোই সাধারণ এবং ভেতো বাঙালি ওদের বুঝিয়ে বলে দিয়েছিলাম। জ্যাঠা আমার ঠাকুমার হাতের মাগুর মাছের ডালনা, কড়াইয়ের ডাল, আলু পোস্ত, ভেটকি মাছের কাটা ঝাল, চিংড়ি মাছের মালাইকারি খেতে খুব ভালোবাসতেন। শুধু খেতে নয়, খাওয়াতেও ভালোবাসতেন তিনি।"