কলকাতা, 11 ডিসেম্বর: 30তম কলকাতা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে উঠে এল সেকাল-একাল নিয়ে নানা কথা ৷ শিশিরমঞ্চে আয়োজন করা হয় হয়েছিল ফেস্টিভ্যালের একাল-সেকাল নিয়ে এক আলোচনা সভার ৷ বক্তা ছিলেন জুডি গ্ল্যাডস্টোন, ভিকে চেরিয়ান, আমুধান আর পি, এন বিদ্যাশঙ্কর, সুপ্রাণ সেন, প্রযোজক বিক্রমজিৎ রায়। সঞ্চালনায় স্বপন মল্লিক।
"চলচ্চিত্র উৎসবে সবার আগে ভালো সিনেমা দেখানো প্রয়োজন।" মঞ্চে উঠে শুরুতে এমন কথাই বলেন 'বেঙ্গালুরু চলচ্চিত্র উৎসব'-এর প্রতিষ্ঠাতা এন বিদ্যাশঙ্কর। তিনি আরও বলেন, "চলচ্চিত্র উৎসবে সমসাময়িক সিনেমার উপর জোর দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু পুরনো ছবিও দেখানোর প্রয়োজন আছে। আমি 1982-র কলকাতা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব দেখেছি। মনে আছে, গোদার বা ইলমাজ গুনের ছবি দেখতে সেবার বহু মানুষের ঢল নেমেছিল।"
প্রযোজক বিক্রমজিৎ রায় বলেন, "এখনকার বড় বড় চলচ্চিত্র উৎসবগুলিতে মার্কেটের যে উপস্থিতি তা আগে ছিল না। "
চলচ্চিত্র পরিচালক তথা মাদুরাই চলচ্চিত্র উৎসবের প্রতিষ্ঠাতা আমুধান আরপি বলেন, "আমরা খুব ছোট পরিসরে চলচ্চিত্র উৎসব করি। আমরা এমন সব ছবি দেখাই যা বড় উৎসবগুলো নানান প্রতিবন্ধকতার কারণে দেখাতে পারে না।"
'ফিল্ম ফেডারেশন অফ ইন্ডিয়া'র মুখ্য সচিব সুপ্রাণ সেন বলেন, "সত্যজিৎ রায় একবার আমন্ত্রিত বিদেশি ডেলিগেটদের উদ্দেশ্যে চলচ্চিত্র উৎসবে বলেছিলেন, কলকাতায় এলে আপনারা কোথাও দেখবেন লোডশেডিং, কোথাও রাস্তা খারাপ, অহরহ লোডশেডিং, কখনও বা টেলিফোন কাজ করছে না ৷ কিন্তু এখানেই আপনারা পাবেন ভালো ভালো সিনেমা। যা দেখতে বহু মানুষের ভিড় জমে।"
গোয়ায় IFFI-এর চলচ্চিত্র উৎসব নিয়ে বেশ দুঃখিত ভিকে চেরিয়ান। তাঁর মতে, "কলকাতা চলচ্চিত্র উৎসব বা কেরালা চলচ্চিত্র উৎসবের মান এখন অনেক বেশি উন্নত।" জুডি গ্ল্যাডস্টোন বলেন, "সময় পাল্টে গিয়েছে। তার সঙ্গে সঙ্গে চলচ্চিত্র উৎসবের চরিত্রও পাল্টেছে। অনেক ভুয়ো চলচ্চিত্র উৎসব উদ্বেগজনকভাবে বাড়ছে।" তিনি আরও বলেন, "দিন দিন বিষয়কেন্দ্রিক ফিল্ম ফেস্টিভ্যালের সংখ্যা বাড়ছে। এটা স্বস্তি দেয় আমাকে।"
ভি.কে চেরিয়ান এদিন কলকাতা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবের ভূয়সী প্রশংসা করেন। একইসঙ্গে 1952 সালে ভারতের প্রথম চলচ্চিত্র উৎসবের সূত্র টেনে বলেন, "সেই বার একদিকে দেখানো হচ্ছে 'বাইসাইকেল' অন্যদিকে রাজ কাপুরের 'আওয়ারা'। দিনগুলো ছিল সোনার মতো উজ্জ্বল।"