কলকাতা, 9 ডিসেম্বর: ভারতের বিভিন্ন প্রান্তের আনাচে কানাচে লুকিয়ে রয়েছে এমন কিছু পুরনো বিশ্বাস বা সংস্কৃতি যা সময়ের সঙ্গে বয়ে চলেছে আজও ৷ ছটপুজোয় অনেকেই দেখে থাকেন যে ঘাগরা পরা অনেক রমণী নেচে চলেছেন ব্যান্ডপার্টির সঙ্গে ৷ একটু ভালো করে খেয়াল করলে জানা যায় তার মধ্যেই অনেকেই রূপান্তরকামী ৷ বিহারি ভাষায় 'লউন্ডা' ৷
পরিবারে সৌভাগ্য আসবে এই আশায় বিহারে বহুল প্রচলিত লউন্ডা নাচ এবার সিনেমার পর্দায় ৷ বিহারের বিভিন্ন জায়গায় এই লউন্ডা নাচ ভীষণ জনপ্রিয় ৷ প্রদীপের নীচে অন্ধকারের মতো মেয়ে সেজে নাচ করা ছেলেদের জীবনে থাকে অজানা ব্যথা ৷ সমাজের সেই বাস্তব চিত্র রূপোলি পর্দায় তুলে ধরেছেন পরিচালক নবীন চন্দ্র গণেশ। ছবির নাম 'ঝঞ্ঝারপুর' ৷
বিহারের এক জ্বলন্ত সমস্যা নিয়ে জীবনের প্রথম ফিচার ফিল্ম বানালেন পরিচালক। গল্পের কেন্দ্রে অরুণ নামের এক দলিত যুবক। যার বিয়ে হয় রেশমা নামের একটি বাচ্চা মেয়ের সঙ্গে। অরুণ একজন নৃত্যশিল্পী। আর রেশমা ছেলের সাজে নাচে। অরুণের চরিত্রে গৌরব আম্বারে এবং রেশমার ভূমিকায় ঐশ্বরিয়া মনোহর।
বিহারের লোকশিল্প ও তাকে জড়িয়ে মানুষের জীবনযাত্রার করুণ কাহিনি উঠে এসেছে এই ছবিতে। অরুণ সামাজিক, মানসিক এবং শারীরিকভাবে সমস্যায় ভোগে। তার জীবনে অনেক যুদ্ধ রয়েছে। পরিচালক বলেন, "এই ছবি আত্মসম্মান বাঁচানোর, অস্তিত্ব রক্ষার। বিহারে লউন্ডা ডান্সের উপর ভিত্তি করে এই ছবি।" 'লউন্ডা' ডান্স হল যেখানে এক জন পুরুষ এক জন মহিলা সেজে নাচ করেন। কারণ মহিলাদের নাচ করার অনুমতি ছিল না বিহারে। ওদিকে যে পুরুষরা মেয়ে সেজে নাচ করতেন, তাঁদের সমকামী বলে ধরে নেওয়া হত।
এই ছবিতে একটি গুরুত্বপূর্ণ চরিত্র একজন নেতার। তিনি বিধায়ক। তাঁর অর্থ ক্ষমতা দুইই আছে। তিনি সবাইকে হাতের মুঠোয় রাখতে চান। পাশাপাশি তিনি উঁচু জাতের। তাই নিজেকে এক প্রকার ঈশ্বর ভাবেন তিনি। এই চরিত্রে সুহাস বনসোদ। এমনই এক গল্প নির্ভর করে হিন্দি ছবি 'ঝঞ্ঝারপুর'।
গৌরব এবং ঐশ্বরিয়ার মাতৃভাষা মারাঠি হলেও তাঁরা বিহারী-ভোজপুরি উপভাষার প্রভাবের সঙ্গে হিন্দিতে খাপ খাইয়ে নিয়েছেন। গৌরব লখনউতে ভারতেন্দু নাট্য আকাডেমিতে প্রশিক্ষণের আগে নাগপুরের থিয়েটার গ্রুপগুলির সঙ্গে অভিনয় করেছেন। ঐশ্বরিয়া নাগপুরের ভিএমভি কলেজের থিয়েটার বিভাগের ছাত্রী ছিলেন।