কলকাতা, 28 জুন: বাংলাদেশের একটি রান্নার শো'তে ঈদের আবহে গোমাংস রান্না নিয়ে ট্রোলের শিকার সঞ্চালক সুদীপা চট্টোপাধ্যায় । সামাজিক মাধ্যমে তীব্র কটাক্ষের মুখে পড়তে হয়েছে তাঁকে ৷ তবে এবার সেই ঘটনাকে কেন্দ্র করে সোশালে আক্রমণ করা হল তাঁর একরত্তি আদিদেবকেও ৷ এর বিরুদ্ধে কলকাতা পুলিশের দ্বারস্থ হবেন বলে জানালেন সুদীপার প্রযোজক-পরিচালক স্বামী অগ্নিদেব চট্টোপাধ্যায় ।
ঘটনার সূত্রপাত ওপার বাংলায় । সেখানে একটি রান্নার শোয়ে উপস্থিত ছিলেন সঞ্চালক সুদীপা চট্টোপাধ্যায় এবং ওপারের জনপ্রিয় নায়িকা তারিন জাহান । এপার এবং ওপার বাংলার নানা পদ নিয়ে তাঁরা ছিলেন ঢাকার জনপ্রিয় রান্নার অনুষ্ঠান 'রাঁধুনী এপার ওপারের রান্না'-তে । সেখানে এপারের প্রতিনিধি সুদীপা আর ওপারের তারিন । ঈদের সময় মুসলিম দর্শকদের কথা মাথায় রেখে গোমাংসের একটি পদ রান্নার করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় একটি এপিসোডে । সেই অনুযায়ী দর্শককে ওই রান্না করে দেখানো হয় । রান্নাটি করেন তারিন ।
তারিন জাহানের দাবি, তিনি ওই অনুষ্ঠানে সরাসরি সুদীপাকে গোমাংস খেতে বলেননি । সুদীপা যখন তাঁকে জিজ্ঞেস করেন, "আজ আমাকে কী খাওয়াচ্ছ ?" তখন তারিন বলেন, "সবার জন্য আজ আমি গোমাংসের রেসিপি নিয়ে এসেছি । সুদীপা ধরেননি, রাঁধেনওনি এমনকী খাননি । আর সেটার প্রমাণ ভিডিয়োতেও আছে ।"
তবুও এই শো সম্প্রচারিত হওয়ার পর থেকেই সুদীপা চট্টোপাধ্যায়কে ট্রোলের মুখে পড়তে হচ্ছে বলে খবর । নানাভাবে কটাক্ষ করা হচ্ছে তাঁকে । কটাক্ষ এতটাই মাত্রা ছাড়ায় যে জনৈক মধুপা তাঁকে প্রকাশ্যে লিখেছেন, "আপনার সন্তানের মৃত্যু আপনাকে চোখে দেখতে হোক, এটাই চাই ।" এই কমেন্ট পাওয়ার পর আর চুপ করে বসে থাকেনি সুদীপার পরিবার ৷ সেই কমেন্টটির স্ক্রিনশট তুলে তা সামাজিক মাধ্যমে সামনে আনেন সুদীপার স্বামী অগ্নিদেব চট্টোপাধ্যায় । সেই অচেনা ব্যক্তিকে তিনি যোগ্য জবাবও দেন । ওই সোশাল মিডিয়া ব্যবহারকারীর বিরুদ্ধে আইনি পথে হাঁটার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তাঁরা ।
এ ব্যাপারে ইটিভি ভারতের তরফে তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে অগ্নিদেব চট্টোপাধ্যায় বলেন, "এঁরা আসলে কারা আমি জানি না । একজন মায়ের উদ্দেশে একজন মহিলা এরকম লিখতে পারেন, তাও ভাবনার অতীত । যা বলার সুদীপাকে বলা হোক । ছেলেকে নিয়ে টানাটানি কেন ? আমরা সাইবার সেলে জানিয়েছি । কলকাতা পুলিশেও জানাব । আমরা এর বিচার চাই । শাস্তি চাই মধুপা নামের ওই মহিলার ।"
তিনি আরও বলেন, "সুদীপা গোমাংস সেদিন ধরেনি, রাঁধেনি, খায়নি । তাও ওকে নানাভাবে কটাক্ষ করা হচ্ছে । এই প্ল্যাটফর্মটা এমন একটা জায়গা হয়ে গিয়েছে যে, যাঁকে যা খুশি বলা যাচ্ছে । মধুপা নামের ওই মহিলা সনাতন ধর্ম বাঁচানোর জন্য নাকি এরকম লিখেছেন, তাই জানিয়েছেন পোস্টে । সুদীপা নাকি সনাতন ধর্মকে অপমান করেছে । ওর মতো মানুষদের নাকি এরকমই শাস্তি হওয়া দরকার । আমার মতে, এটা সনাতন ধর্ম বাঁচানোর প্রক্রিয়া ?"
অগ্নিদেব চট্টোপাধ্যায় জানালেন, সুদীপা যে ওইদিন গোমাংস ধরা, রান্না করা বা খাওয়া কোনওটাই করেননি সেই ব্যাপারটি সকলকে জানানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে সংশ্লিষ্ট চ্যানেলের তরফ থেকে ।