কলকাতা, 13 জানুয়ারি: প্রবাদপ্রতিম চলচ্চিত্র পরিচালক শক্তি সামন্তর আজ অর্থাৎ সোমবার 99তম জন্মবার্ষিকী। 1926 সালের 13 জানুয়ারি বর্ধমানে জন্ম। সুদীর্ঘ কর্মজীবন। 1957 সালে তৈরি করেন 'শক্তি ফিল্মস' নামে একটি প্রযোজনা সংস্থা। প্রযোজনা করেন 'বালিকা বধূ' এবং 'অচেনা অতিথি'।
'আরাধনা' থেকে শুরু করে 'আনন্দ আশ্রম', 'অমানুষ' তাঁরই সৃষ্টি। পাশাপাশি যে ছবিগুলি আজও দর্শক হৃদয়ে অমর হয়ে আছে সেগুলির মধ্যে অন্যতম 'কাটি পতঙ্গ', 'চায়না টাউন', 'কাশ্মীর কি কলি', 'হাওড়া ব্রিজ', 'অমর প্রেম', 'বরসাত কি এক রাত' (বাংলায় 'অনুসন্ধান')। আছে আরও একগুচ্ছ জনপ্রিয় এবং হিট ছবি।
বাঙালি ছেলে বছরের পর বছর ধরে কাঁপিয়ে গিয়েছেন বলিউড। বানিয়েছেন একাধিক হিন্দি এবং দ্বিভাষী সিনেমা। উল্লেখ্য, আজ কোনও ছবি সিনেমা হলে পঁচিশ দিন চললে, পঞ্চাশ দিন চললে সেলিব্রেশন মেতে ওঠার খবর প্রকাশিত হয়। 1969 সালে শর্মিলা ঠাকুর এবং রাজেশ খান্না অভিনীত ব্লকবাস্টার সিনেমা 'আরাধনা' 50 সপ্তাহ টানা চলেছিল প্রেক্ষাগৃহে। তবে, সেই সময় 50 সপ্তাহ ধরে একটি ছবি বা সিনেমা হলে চলা মুখের কথা ছিল না।
সেই ইতিহাস সৃষ্টি করে রাজেশ খান্না ও শর্মিলা ঠাকুরের অসামান্য রসায়ণ। যাঁর বুনন ছিল শক্তি সামন্তর। মজার কথা হল, এই সিনেমায় প্রথমে শর্মিলা ঠাকুরকে নায়িকা হিসাবে বেছে নেননি পরিচালক শক্তি সামন্ত। এক সাক্ষাৎকারে শর্মিলা ঠাকুর জানিয়েছিলেন শক্তি সামন্ত তাঁকে 'বন্দনা বর্মা'র চরিত্রে চাননি। পরিচালকের যুক্তি ছিল ওই চরিত্রের জন্য যে বয়সটা দরকার শর্মিলার বয়স তার চেয়ে বেশ খানিকটা কম। তাই প্রাথমিকভাবে পতৌদি ঘরণীকে বাতিল করেন শক্তি সামন্ত।
সেদিন শর্মিলা ঠাকুর গিয়ে অনুরোধ করলেও মানেননি পরিচালক। অনেক জলঘোলার পর শর্মিলাকে নিতে রাজি হন শক্তি সামন্ত। আর সেই ছবিই টানা পঞ্চাশ সপ্তাহ সিনেমা হল দখল করে নিয়েছিল। শুধু তাই নয়, আজও এই ছবি মানুষের হৃদয়ে আসীন। নতুন প্রজন্মও একবার দেখলেই ভালোবাসার অন্য মানে খুঁজে পায়। 'মেরে সপনো কি রানি কব আয়েগি তু' থেকে 'গুনগুনা রহে হ্যাঁয় ভ্রমর...' বেঁচে থাকবে চিরকাল। গানের কথা লিখেছিলেন আনন্দ বক্সী ও সুরকার ছিলেন আরডি বর্মন ৷
17তম ফিল্মফেয়ার অনুষ্ঠানে সেরা ছবি, সেরা অভিনেত্রী (শর্মিলা ঠাকুর) ও সেরা পুরুষ কণ্ঠশিল্পী (কিশোর কুমার)-র পুরস্কার আসে ছবির ঝুলিতে ৷ 2009 সালের 9 এপ্রিল মুম্বইয়ের সান্তাক্রুজে 83 বছর বয়সে মারা যান তিনি। তাঁর সহকারী হিসেবে দীর্ঘকাল কাজ করেছেন বাংলার আরেক খ্যাতনামা চলচ্চিত্র পরিচালক প্রভাত রায়।