হায়দরাবাদ, 13 জানুয়ারি: অবসাদে ভুগছিলেন ৷ হাতে বেশ কিছু সময় কাজ ছিল না ৷ অবসাদের চিকিৎসাও চলছিল ৷ শেষ পর্যন্ত একলা ঘরেই মিলেনিয়াম পথের দিকে পাড়ি দিলেন 'ফসিলস' ব্যান্ডের বেস গিটারিস্ট চন্দ্রমৌলি বিশ্বাস ৷
সোশাল মিডিয়ায় আজও 'আরও একবার', 'হাসনুহানা', 'বিষাক্ত মানুষ'-এর মতো গান গুনগুন করে ওঠেন শ্রোতারা ৷ সেই গানে রূপম ইসলামের সঙ্গে ব্যাকগ্রাউন্ড ভোকালের পাশাপাশি চন্দ্রমৌলি বেস গিটার বাজাতেন ৷ এখন গিটারটা ঘরের একপ্রান্তে রাখা ৷ রূপম ইসলামকে কথা দিয়েছিলেন নতুন প্রোজেক্টে একসঙ্গে কাজ করার ৷ কিন্তু সবকিছুই রয়ে গেল অধরা ৷ আর সেই কারণেই হয়তো বুকের ভিতর বেশি অভিমান জমেছে রূপমের ৷ তাই বন্ধুর 'মরা মুখ দেখবেন না' বলে সোশাল মিডিয়ায় জানিয়ে দিলেন ৷
চন্দ্রমৌলির মৃত্যুর খবর কল্যাণীতে অনুষ্ঠান করতে গিয়ে পান রূপম ৷ সেখানে বন্ধুকে উদ্দেশ্য করে বেশ কিছু কথা বলেন ৷ দর্শকদের জন্য গানও করেন ৷ তবে মন খারাপারে দলা পাকানো কথা গুলো ঠিকরে বেরিয়ে আসে সোমবার সোশাল মিডিয়ার পাতায় ৷ এদিন তিনি চন্দ্রর সঙ্গে শেষ কথার স্ক্রিনশট শেয়ার করেন ৷
রূপম লেখেন, "আমাদের মধ্যে ক্রিয়েটিভ বিষয় ও দার্শনিক বিষয় নিয়ে অনেক কথা হয়েছে ৷ আমি তোর জন্য আমার সবচেয়ে ক্রিটিক্যাল গান গুলো রেখেছিলাম ৷ কিন্তু তুই আদমের সন্তান ও আমি তোমায় ভালোবাসির মতো গানের প্রস্তাব ফিরিয়ে দিস ৷ গত বছরও গান নিয়ে আমরা আলোচনা করেছি ৷ আমি জানতাম একমাত্র তুইই পারতিস জ্যাস ও ক্ল্যাসিক্যালের সংমিশ্রণে সুর দিতে ৷ কিন্তু তুই সময় চেয়েছিলিস ৷ আমিও তোর জন্য ধৈর্য্য ধরে অপেক্ষা করেছি ৷"
রূপম এরপর লেখেন, "কিন্তু মনে হয় আমার এই প্রতীক্ষা আর শেষ হবে না ৷ আমার স্মৃতিতে তোকে সদা হাস্যময়, হৈ-চৈ করা মুখটাই মনে রাখতে চাই ৷ আমি মৃতদেহের মুখে তোকে দেখব না ৷ তোকে চিনবা না এভাবে ৷ আমি ভেবেছিলাম তুই আবার গানের স্রোতে ফিরে আসবি ৷ মনে হচ্ছে তোকে নিয়ে আমার অভিজ্ঞতায় একটা গোটা বই লিখে ফেলতে পারি ৷ হয়তো কোনও দিন করব ৷"
12 জানুয়ারি মধ্য কলকাতার ইন্ডিয়ান মিরর স্ট্রিটে তাঁর ভাড়া বাড়ি থেকেই উদ্ধার হয় ঝুলন্ত দেহ। প্রাথমিক তদন্তের পর পুলিশ জানায়, মানসিক অবসাদে ভুগছিলেন চন্দ্রমৌলি। চিকিৎসা চলছিল তাঁর ৷ ভুগছিলেন আর্থিক সংকটে ৷ তারপরেই রবিবার শিল্পীর চরম সিদ্ধান্তের খবর সামনে আসে ৷