কলকাতা, 26 জুলাই: অবশেষে রাহুল মুখোপাধ্যায়কে নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত এল ৷ পরিচালকের স্থানই বহাল থাকছে রাহুল মুখোপাধ্যায়ের। তাঁর উপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নিল ডিরেক্টর্স গিল্ড। শুটিং ফ্লোরে বজায় থাকবে তাঁর 'লাইট-সাউন্ড-ক্যামেরা-অ্যাকশন' আওয়াজ ৷
কী বলছেন সুদেষ্ণা রায় ?
'ডিরেক্টর্স অ্যাসোসিয়েশন অফ ইস্টার্ন ইন্ডিয়া'র সেক্রেটারি সুদেষ্ণা রায় ইটিভি ভারতকে বলেন, "আমরা নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিলাম ৷ এবার আমরাই নিষেধাজ্ঞা তুলে নিলাম ৷" সুদেষ্ণার পাশাপাশি ফেডারেশনের সভাপতি স্বরূপ বিশ্বাসের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, "এই ব্যাপারে প্রেস বিজ্ঞপ্তি রাতে দেওয়া হবে ৷"
এত সবের পরেও একেবারে চুপ রাহুল মুখোপাধ্যায় ৷ তাঁর সঙ্গে কোনওভাবেই যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি ৷ 'ডিরেক্টর্স অ্যাসোসিয়েশন অফ ইস্টার্ন ইন্ডিয়া'র বৈঠকে হাজির হলেও কোনও কথা তিনি বলেননি সাংবাদিকদের সঙ্গে ৷
কী বলেছিল ফেডারেশন ?
এর আগে 'প্রোডাকশন নম্বর 171'-এর পরিচালকের বদলে ক্রিয়েটিভ প্রোডিউসার হিসাবে থাকবেন রাহুল মুখোপাধ্যায়, বলে জানিয়েছিল ফেডারেশন। পরিচালনা করবেন সৌমিক হালদার। আর ক্যামেরার দায়িত্বে থাকবেন অনিমেষ ঘড়ুই। ফেডারেশনের সঙ্গে 'ডিরেক্টরস অ্যাসোসিয়েশন অফ ইস্টার্ন ইন্ডিয়া'র দীর্ঘ আলোচনার পর সুদেষ্ণা রায় জানান, রাহুল ক্রিয়েটিভ প্রোডিউসার থাকছেন ৷ শুটিং শুরু হবে 27 জুলাই থেকে ৷ কাজ চলবে।"
- ফেডারেশনের যুবসচিব সুজিত হাজরা বলেন, "আমাদের এগজিকিউটিভ কমিটির দীর্ঘ আলোচনার পর সিদ্ধান্ত হল রাহুল কাজ করবেন ক্রিয়েটিভ প্রোডিউসার হিসেবে। টেলি অ্যাকাডেমির চেয়ারম্যান তথা মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস, অভিনেতা প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায় এবং প্রযোজক শ্রীকান্ত মোহতা ছিলেন সেই দীর্ঘ আলোচনায়। আমরা বাংলা চলচ্চিত্রের শিল্পের স্বার্থেই এই সিদ্ধান্ত নিলাম। সৌমিক হালদার পরিচালনা করবেন, অনিমেষ ঘড়ুই চিত্রগ্রাহক, রাহুল ক্রিয়েটিভ প্রোডিউসার থাকবেন।"
- ফেডারেশনের সভাপতি স্বরূপ বিশ্বাস বলেন, "আমাদের মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন আলোচনা চলবে, কিন্তু কাজ বন্ধ হবে না। তাই আমাদের ওয়ার্কিং কমিটি এবং এগজিকিউটিভ কমিটি এই সিদ্ধান্তে এসেছে। তবে রাহুলের উপর থেকে নিষেধাজ্ঞা উঠবে কি না, সেই বিষয়টি ফেডারেশন আপাতত ডিরেক্টরস গিল্ডের উপরেই ছেড়ে দিয়েছে। 27 জুলাই থেকে ছবিটির শুটিং শুরু হবে।"
- স্বরূপ বিশ্বাস আরও বলেন, "টেকনিশিয়ানদের জন্য ফেডারেশনের লড়াই জারি থাকবে। রাহুল যে কাজ করেছেন প্রত্যেকটা গিল্ড তাঁর মেম্বারের এহেন কাজের উপর কড়া সিদ্ধান্ত নেয়। আর রাহুলের ব্যাপারে যে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে তা ইসি'র (এগজিকিউটিভ কমিটি) সিদ্ধান্ত। আর সেটা ডিরেক্টর্স গিল্ড প্রয়োগ করেছে। দিনের পর দিন গুপি শুটিং-এর নামে যে অত্যাচার চলছে তা মেনে নেওয়া যাচ্ছে না। তাই আজ থেকে আড়াই তিন বছর আগেই এই সিদ্ধান্তে আসা হয়েছে।"
প্রসঙ্গত, বৃহস্পতিবার বিকেলে রাহুলকে নিয়ে 'ডিরেক্টর্স অ্যাসোসিয়েশন অফ ইস্টার্ন ইন্ডিয়া'র আলোচনায় যোগ দেন সুদেষ্ণা রায়, অঞ্জন দত্ত, রাজ চক্রবর্তী, ইন্দ্রাশিস আচার্য, দেবালয় ভট্টাচার্য, মানসী সিনহা, তথাগত মুখোপাধ্যায়, পরমব্রত চট্টোপাধ্যায়, অভিজিৎ গুহ-সহ টলিপাড়ার একাধিক পরিচালক ৷ উপস্থিত ছিলেন রাহুল স্বয়ং ৷ সেই বৈঠকের শেষে অবশ্য সাংবাদিকদের কিছুই জানাননি কেউ ৷ বলা হয়, যা জানানোর ফেডারেশনে আলোচনার পর জানানো হবে । আর সেই মতোই সবটা সামনে আসে ৷
তবে, এই বৈঠক থেকে বেরিয়ে রাজ চক্রবর্তী বলেন, "রাহুল কাজ তো করবেই ৷" বাকিরা বলেন, "যা হবে ভালোই হবে ৷" এরপর, 'ডিরেক্টর্স অ্যাসোসিয়েশন অফ ইস্টার্ন ইন্ডিয়া' সংস্থার প্রেসিডেন্ট সুব্রত সেন এবং সেক্রেটারি সুদেষ্ণা রায় ফেডারেশন কর্তাদের সঙ্গে বৈঠকে বসেন ৷ আর সেখানেই সিদ্ধান্ত হয় রাহুল সৃজনশীল প্রযোজক হিসেবে ছবিতে কাজ করতে পারবেন ৷