কলকাতা, 2 মে: চলছে 'সোনার কেল্লা'র 50 বছর । 1974 সালের 27 ডিসেম্বর মুক্তি পায় 'সোনার কেল্লা'। রাজস্থানের জয়সলমীরে গল্প দানা বেঁধেছে এই ছবির । জয়সলমীরের মতো একটা শুষ্ক এলাকাতেও শুটিং করা যায় তা দেখিয়েছিলেন সত্যজিৎ রায় । তাঁকে জয়সলমীরের ভাস্কো দা গামা বলেন সেখানকার মানুষজন ৷ এ কথা জানালেন সোনার কেল্লার মুকুল কুশল চক্রবর্তী ৷
সিদ্ধার্থ চট্টোপাধ্যায়ের বই প্রকাশে এসে কুশল চক্রবর্তী বলেন, "এই ছবি বেশ কয়েক হাজার মানুষের জীবিকা তৈরি করে দিয়েছিল । রাজস্থানের একটা রিমোট জায়গার অর্থনীতিকে প্রভাবিত করেছিল 'সোনার কেল্লা'। আমি জয়সলমীরের মানুষদের মুখে শুনেছি, সত্যজিৎ রায় তাঁদের ভাস্কো দা গামা । আলাদা একটা জায়গা আবিষ্কার করেছিলেন উনি । জয়সলমীরে কিচ্ছুটি নেই । সেই জায়গায় শুটিং করেন সত্যজিৎ রায় । ওখানকার মানুষ বলেন, ওপরে ভগবান, নীচে বালি আর মাঝখানে আছেন সত্যজিৎ রায় । ওখানকার প্রত্যেকটা দোকানে সত্যজিৎ রায়ের ছবি । বাবুদা (সন্দীপ রায়) আমার সঙ্গে গিয়েছিল । বাবুদা সেই সব ছবি দেখে অবাক হয়ে বলেছিল, আমার কাছে তো এই সব ছবি নেই ! মানুষ ওখানে এতটাই শ্রদ্ধা করেন সত্যজিৎ রায়কে ।"
'সোনার কেল্লা' নিয়ে আড্ডায় উঠে আসে আরেক তথ্য । কাকে মাথায় রেখে এই ছবি তৈরি হয়েছিল জানেন ? কাকে এই ছবিতে প্রথম কাস্টিং করেছিলেন সত্যজিৎ রায় ? সবটা কিংবদন্তি পরিচালকের 103তম জন্মদিনের প্রাক্কালে মেলে ধরলেন তাঁর সুযোগ্য পুত্র সন্দীপ রায় । তিনি 'ফেলুদার প্রথম তোপসে' শীর্ষক বইপ্রকাশ অনুষ্ঠানে এসে বলেন, "সোনার কেল্লা ছবির প্রথম কাস্টিং ছিল মুকুল । মুকুল হিসেবে ছোট্ট কুশল চক্রবর্তীকে বাবার এত পছন্দ ছিল যে, তখনই তিনি সোনার কেল্লা বানানোর কথা ভাবেন । মুকুলকে মাথায় রেখেই সেই সময়ে তৈরি হয় 'সোনার কেল্লা'। আর সবশেষে কাস্টিং করা হয়েছিল ফেলুদাকে । সেই চরিত্রে সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় । ফেলুদাতে বাবার সবথেকে পছন্দের চরিত্র জটায়ু । মুকুলের সঙ্গে সঙ্গেই জটায়ুকে কাস্টিং করে ফেলেছিলেন তিনি ।"
মুকুল থুড়ি কুশল চক্রবর্তী এ দিন বলেন, "সোনার কেল্লা একটা ম্যাজিক । পঞ্চাশ বছর পরেও মানুষ এই ছবি দেখে । টিভিতে চলতে থাকলে আমার মনে হয়, যাঁর সেই সময়ে কাজ নেই তিনি সোনার কেল্লা দেখেন । ছবির ডায়লগ, লোকেশন, মিউজিক, অভিনয় সব অমর হয়ে আছে ।"
সত্যজিৎ রায় প্রসঙ্গে কুশল চক্রবর্তী ইটিভি ভারতকে বলেন, "জয়সলমীরের লোকেদের কাছে ফেলুদা, জটায়ু কেউ নয় । শুধু সোনার কেল্লা, সত্যজিৎ রায় আর মুকুলকেই চেনেন ওঁরা । আমি যে বয়সে মুকুল হয়েছি, সেই বয়সে সত্যজিৎ রায়কে চেনার কথা নয় । পরে চিনেছি । উনি সকলকে নিজের বয়সি করে নিয়ে কাজ করতেন । বাচ্চাদেরকে বাচ্চা হিসেবে মনে করতেন না । সেভাবেই শেখাতেন । তাই ওঁর ছবিতে বাচ্চারা নানা সময়ে অত ভালো অভিনয় করেছে ।"
আরও পড়ুন: