হায়দরাবাদ, 2 নভেম্বর: কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের 'একলা চলো রে' গান নিয়ে ব্য়ঙ্গ ৷ সোশাল মিডিয়ায় গর্জে ওঠেন কবি-লেখক শ্রীজাত বন্দ্যোপাধ্যায় ৷ আইনি পদক্ষেপ নেওয়ার হুঁশিয়ারিও দেন তিনি ৷
কপিল শর্মার শোয়ের অন্যতম কমেডিয়ান ক্রুষ্ণা অভিষেক একটি পর্বে রবি ঠাকুরের গান বিকৃতভাবে উপস্থাপনা করেন ৷ তারপরেই ওঠে নিন্দার ঝড় ৷ এক মিডিয়া রিপোর্ট অনুযায়ী, এই ঘটনায় ক্ষমা চেয়েছেন ক্রুষ্ণা ৷ জানিয়েছেন, কারোর ভাবাবেগে আঘাত করা উদ্দেশ্য ছিল না তাঁর ৷
শ্রীজাতর পোস্টে তীব্র সমালোচনার ঝড় ওঠে ৷ ক্রুষ্ণার মন্তব্যের নিন্দা করেন অনেকেই ৷ এই ঘটনার পর রাতের দিকে আরও একটি পোস্ট শ্রীজাত করেন ৷ সেখানে তিনি জানান, তাঁর অভিযোগ ও আপত্তির কথা পৌঁছেছে ক্রুষ্ণার কাছে ৷ শ্রীজাত পোস্টে লেখেন, "কাউকে আঘাত করা নয়, কেবল বিনোদনই ছিল তাঁর উদ্দেশ্য। আমার অভিযোগের উত্তরে জানালেন কৌতুকাভিনেতা কৃষ্ণ অভিষেক। এ-বিষয়ে 'দ্য গ্রেট ইন্ডিয়ান কপিল শো'-এর নেপথ্যে থাকা ক্রিয়েটিভ টিমের সঙ্গেও কথা বলবেন তিনি।"
শুক্রবার সোশাল মিডিয়ায় দীর্ঘ পোস্ট করেন শ্রীজাত ৷ তিনি জানান, রবীন্দ্রনাথের একটি গানকে মস্করার সরঞ্জাম হিসেবে বেছে নেওয়া হয়েছে ৷ কদর্য উপস্থাপনার বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ ও আপত্তি জানালাম। যে বা যাঁরা ওই কৌতুকদৃশ্য রচনায়, উপস্থাপনায়, অনুমোদনে ও সম্প্রচারে জড়িত থাকলেন, তাঁদের সকলের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানালাম। স্পষ্ট ভাষায়, দ্ব্যর্থ উচ্চারণে।
তিনি আরও লেখেন, "কৌতুক আর তামাশা’র মধ্যে একটা সূক্ষ্ম রেখা আছে, সেটা ঝাপসা হয়ে এলেই বিপদ। কী বলছি, কাকে নিয়ে বলছি, কতটুকু বলছি, এসব না-ভেবে কেবল লোক-হাসানো টিআরপি-র জন্য নিবেদিতপ্রাণ হতে হতে মানুষ এক সময়ে নিজের সীমা বিস্মৃত হয়। তখন তাকে মনে করিয়ে দিতে হয়, এই চৌকাঠ পেরনো তোমার উচিত হয়নি। আমি সেটুকুই করছি। বাঙালি মনীষীদের নাম বা কাজ নিয়ে ইচ্ছেমতো হাসিঠাট্টা করাই যায়, ভারতের অন্যান্য অংশের কিছু বাসিন্দাদের এমনটাই ধারণা। বাংলা ভাষা থেকে সংস্কৃতি, সবটাই তাঁদের কাছে খোরাক। ঠিক যে-কারণে অমোঘ লীলা দাস বিবেকানন্দকে নিয়ে মস্করা করার স্পর্ধা পান। পরে বিরোধের স্বর চড়লে ক্ষমা চাইতে বাধ্য হন। কিন্তু ভারতের নানা অংশে ঘুরে দেখেছি, বাঙালিদের সবকিছু নিয়ে একটু ঠাট্টা-ইয়ার্কি অনেকেরই মজ্জাগত।"