হায়দরাবাদ, 7 অগস্ট: জন্মদিন উদযাপন অধরা থেকে বার্থডে উইশ বা গান ছাড়া ৷ প্রিয় বন্ধু বা কাছের মানুষের বিশেষ এই দিন সেলিব্রেশনে বাজাতেই হয় 'হ্যাপি বার্থডে টু ইউ' গান ৷ দীর্ঘ সময় ধরে চলে আসা এই গান কোথা থেকে এসেছে কখনও জানার চেষ্টা করেছেন ৷ কিংবা এই গানে সুর কে দিয়েছেন জানেন? চলুন বিশেষ এই প্রতিবেদনে জেনে নেওয়া যাক বার্থডে গানের নানা রোমহর্ষক জার্নির কথা ৷
সময়টা 19 শতক ৷ আমেরিকায় দুই বোন থাকতেন ৷ তাঁদের নাম প্যাট্টি ও মিলড্রেড হিল ৷ তাঁরা দুজনে মিলে একটা গান তৈরি করে যার নাম 'গুড মর্নিং টু অল' ৷ তাঁরা কিন্ডারগার্গেন বাচ্চাদের জন্য এই গান তৈরি করেন ৷ তবে ইংরেজি ভাষায় সবচেয়ে জনপ্রিয় গান হিসাবে তাঁদের এই সৃষ্টি যে স্বীকৃতি পাবে কে জানত! 20 শতকের গোড়ার দিকে গানটি জন্মদিনের শুভেচ্ছা হিসেবে জনপ্রিয়তা লাভ করে। গানের কথাগুলোকে 'হ্যাপি বার্থডে টু ইউ'তে পরিবর্তন করা হয় ৷ তারপর বাকিটা ইতিহাস!
হিল বোনদের গল্প শুরু হয় লুইসভিলে, আমেরিকার কেনটাকিতে ৷ যেখানে তাঁরা সঙ্গীত ব্যবহার করে উদ্ভাবনী শিক্ষার পদ্ধতি তৈরি করেছিল। 1893 সালে, তাঁরা একটি গানের বই প্রকাশিত করেন ৷ যেখানে পরিচিত গানের কথা তুলে ধরা হয় ৷ 1901 সালে 'হ্যাপি বার্থডে টু ইউ' লিরিক্স প্রথম ছাপার অক্ষরে প্রকাশিত হয় ৷ 1911 সালে প্রথমবার গানের সঙ্গে সুর দিয়ে গাওয়া হয় ৷ 1930 সাল নাগাদ গানটি জনপ্রিয়তা লাভ করে ৷ তবে সামনে আসে কপিরাইটের সমস্যা ৷
প্যাটি হিল এবং তার পরিবার বিভিন্ন ক্ষেত্রে গানের ব্যবহারকে চ্যালেঞ্জ করে মামলা দায়ের করে। তাঁরা শেষ পর্যন্ত কপিরাইট সুরক্ষিত করতে সক্ষম হন ৷ এরপর বেশ কয়েকবার মালিকানায় বদল এসে ওয়ার্নার কমিউনিকেশনস 1988 সালে গানের অধিকারের স্বত্ত্ব অর্জন করে। এরপর গানের লাইসেন্স ফিসের ব্যবস্থা করা হয় ৷ সকলেই এই গানকে নিজের মতো করে নতুনভাবে তৈরি করতে থাকেন ৷
এরপর 2016 সালে শেষ হয় আইনি লড়াই ৷ ওয়ার্নার মিউজিক গ্রুপ মামলায় হেরে যায় ৷ 14 মিলিয়ন ডলার দিতে হয় এই মিউজিক গ্রুপকে ৷ তারপর পাবলিক ডোমেইনে গানটি সামনে আসে ৷ কোভিড 19 ভাইরাসের কারণে অতিমারির কারণে হাত ধোয়ার রুটিনের অংশ হিসেবে 'হ্যাপি বার্থডে টু ইউ' নতুন করে জনপ্রিয়তা অর্জন করে। ভাইরাস প্রতিরোধে হাত ধোঁয়ার ভিডিয়োতে গানটিকে অন্যরকমভাবে ব্যবহার করা হয় ৷
এমনকী, 1962 সালে মেরিলিন মনরো গানটির সামান্যতম পরিবর্তন করে রাষ্ট্রপতি জন এফ কেনেডির 45তম জন্মদিন উপলক্ষ্যে গেয়েছিলেন ৷ বর্তমানে জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানানোর জন্য একাধিক গান থাকলেও হ্যাপি, হ্যাপি বার্থডে বেবি, সুইট সিক্সটিন, হ্যাপি বার্থডে ডার্লিং আলাদা জায়গা তৈরি করে নিয়েছে ৷ এই গানের জন্য টোয়ারিং সং অ্যাওয়ার্ড থেকে শুরু করে হল অফ ফেম অ্যাওয়ার্ডে সম্মানিত হয়েছেন মিলড্রেড-প্যাট্টি ৷