কলকাতা, 2 অক্টোবর: মুক্তির অপেক্ষায় সৃজিত মুখোপাধ্যায় পরিচালিত 'টেক্কা'। ছবিতে ইরার চরিত্রে স্বস্তিকা মুখোপাধ্যায়। যাঁর মেয়েকে অপহরণের মধ্য দিয়ে চিত্রনাট্যে টুইস্ট এনেছেন পরিচালক ৷ শহরের রাস্তায় ছবির পোস্টার নিয়েও কম জলঘোলা হয়নি। একদিকে, আরজি করের প্রতিবাদ অন্যদিকে পুজোর আবহে বাংলা সিনেমার মুক্তি, সঙ্গে বিতর্ক, সবকিছু নিয়ে ইটিভি ভারতের সঙ্গে খোলামেলা আড্ডায় স্বস্তিকা।
ইটিভি ভারত: 'টেক্কা' নিয়ে কতটা আশাবাদী?
স্বস্তিকা: খুবই। শিল্পী হিসেবে আশাবাদী তো বটেই। এটা একটা টিম ওয়ার্ক। অনেক মানুষ এর সঙ্গে জড়িত। পুজোর সময়ে 'টেক্কা' রিলিজ করছে। আর এবারের পুজো মন খারাপের পুজো ৷ আমাদের ছবি এই সময়ে দেখলে যদি তাদের ভালো লাগে আমাদের গোটা 'টেক্কা' পরিবার খুশি হবে।
ইটিভি ভারত: পোস্টার ঘিরে নানা বিতর্ক হয়েছে। অনেকে বলছে এইভাবেই তো হিট হয়ে যায় ছবি। আপনি কী বলবেন?
স্বস্তিকা: আমার তো মনে হয় একেবারেই এভাবে ছবি হিট হয় না। একটা মানুষ কাউকে সঙ্গে নিয়ে গিয়ে দেখবে, তাঁরা অন্য কাউকে বলবেন তারপর তিনি দেখবেন। এভাবের ছবি হিট হয়। কোনও ছবি শুরুতে সেভাবে সাড়া পায় না। পরে আস্তে আস্তে ভিড় বাড়ে সিনেমা হলে।
'ভূতের ভবিষ্যৎ'-এর কথাই যদি বলি, প্রথম দু'দিন সিনেমা হল একদম ফাঁকা ছিল। দ্বিতীয় দিন থেকে লোক আসতে শুরু করেছিল। আজও সবার কাছে সমান জনপ্রিয় এই ছবি। আজও কোথাও গেলে সবাই 'কদলি বালা' বলে। তার মানে কতটা জনপ্রিয় হয় ছবিটা। তবে, টেক্কার কথা যারা জানত না তারাও এই পোস্টার বিতর্কে জেনে গিয়েছে। আমাদের খারাপ করতে গিয়ে উলটে ভালো করে দিয়েছে তারা।
ইটিভি ভারত: প্রযোজক হিসেবে দেব কেমন?
স্বস্তিকা: দেব বুঝতেই দেয়নি যে ও প্রযোজক। একজন অভিনেতার মতোই ছিল ওঁর ব্যবহার। ওর টিম আমাদের খেয়াল রেখেছে। খাওয়াদাওয়া থেকে শুরু করে মেয়েদের জন্য ভালো বাথরুম, বসার জায়গা সবের ব্যবস্থা করা ছিল। এগুলো সাধারণত চাইতে হয়। কিন্তু দেবের এখানে চাইতে হয়নি। নারী সুরক্ষার বেসিক জিনিস এগুলো। সেগুলোর দিকে দেব পুরোমাত্রায় খেয়াল রেখেছে। অনেক মহিলা এই ছবির সঙ্গে যুক্ত ছিল নানান কাজে। এই রাজ্যেও এখন মেয়েদের সুরক্ষা চাইতে হচ্ছে, যেটা আমাদের চাওয়ার কথা নয়, এটা পাওয়া আমাদের অধিকার।
ইটিভি ভারত: সৃজিত মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে অনেকদিন পর এই কাজ। কতটা পালটে গিয়েছে?
স্বস্তিকা: শান্ত হয়ে গেছে। টিমটাও শান্ত দেখলাম। আগে যুদ্ধ হত। এখন শান্তিই শান্তি। আমাদের ডিওপি মধুরা পালিত। তাও কিছু কিছু জিনিস আমি সৃজিতকে দেখতে দেখলাম। টেকনিক্যালি স্ট্রং হয়ে গিয়েছে অনেক। খুব বড় ক্যানভাসে ছবি বানাতে পারে সৃজিত। অনেক সমৃদ্ধ সৃজিতকে পেলাম 'টেক্কা'র সেটে।
ইটিভি ভারত: কানাঘুষো যে সৃজিতের সঙ্গে ঘর বাঁধছেন স্বস্তিকা। কী বলবেন?
স্বস্তিকা: কোনওকিছুই বলব না। কথাগুলো ঠিক নাকি ভুল সেটা প্রমাণ করার দায় আমার নয়। যে খবর সহজে বেচা যায় মানুষ সেগুলোই বেচতে চায়। ভগবান বা আমার বাবা-মা কেউ আমায় দায়িত্ব দেয়নি সবার সব কথা ঠিক বা ভুল প্রমাণ করার। আমার সঙ্গে সৃজিতের সেই কমফর্ট লেভেলটা আছে যেটা দেখলে মনে হয় আমরা একসঙ্গে থাকি। কিন্তু সবার সব ভাবনা যে ঠিক তা তো নয়। আমরা ভালো বন্ধু। একটা সম্পর্কেরও ইতিহাস আছে। টেক্কার প্রচারে অনেক গল্প করেছি, অনেকটা সময় কাটিয়েছি। খুব ভালো লেগেছে। অনেক প্রশ্নের উত্তর দিয়েছি একসঙ্গে মজা করে। ওর বাড়িতে কুড়িটা সাপ আছে শুনেছি। দেখা হয়নি।
ইটিভি ভারত: পরের কোনও কাজের কথা হল সৃজিত মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে?
স্বস্তিকা: আমি সবসময়ই বলতে থাকি আমরা পরের কাজ কী করছি। জানি না কবে বাস্তবায়িত হবে। ওর অনেক গল্প ভাবনায় আছে, সেগুলো করতে চায়। তবে, আমার 'দুর্গাপুর জংশন', 'নিখোঁজ টু' আসছে। 'নিখোঁজ টু' নিয়ে মানুষের বিপুল উন্মাদনা। সেই কবে থেকে সবার জিজ্ঞাসা, কবে আসবে 'নিখোঁজ টু'। এবার আসবে।
ইটিভি ভারত: মহালয়া শোনা হয়?
স্বস্তিকা: শুনি না। মন খারাপ হয়। মা চলে যাওয়ার পর এক বছর শুনেছি। তারপর থেকে আর শুনি না। ওই যুদ্ধটা আমি নিতে পারি না।