কলকাতা, 7 সেপ্টেম্বর: ডিরেক্টর্স গিল্ড থেকে সাসপেন্ড হলেন পরিচালক অরিন্দম শীল । জানা গিয়েছে, যৌন হেনস্তার অভিযোগ রয়েছে অভিনেতা-পরিচালকের বিরুদ্ধে। আর তাই এই সিদ্ধান্ত । তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ স্বীকার করে লিখিতভাবে ক্ষমাও চান তিনি। তবে তাতেও কাজের কাজ হয়নি । সূত্রের খবর, ইতিমধ্যেই তাঁকে নোটিশ পাঠানো হয়েছে।
অরিন্দম শীলের বিরুদ্ধে একাধিক অভিনেত্রীকে যৌন হেনস্তার অভিযোগ রয়েছে। অভিনেত্রী রূপালি ভট্টাচার্য (রূপা) তাঁর সামাজিক মাধ্যমে চিঠিটির বয়ান ভাগ করে নিয়ে লিখেছেন, "অন্যায়ের বিরুদ্ধে সমবেতভাবে রুখে দাঁড়ালে ফল পাওয়া যায়। আবার প্রমাণিত।" তিনি ইটিভি ভারতের কাছে বলেছিলেন, "থিয়েটারে কেউ এরকম কাজ করলে তাঁর সঙ্গে অন্য অভিনেতারা কাজ করেন না । সিনেমার জগতে কোনও পরিচালক কিংবা প্রযোজকের সঙ্গে এরকমটা হবে তো?"
তাঁর এই কথার পর 24 ঘণ্টা কাটতে না কাটতেই অরিন্দম শীলের কাছে পাঠানো হল নোটিশ। তাতে লেখা হয়েছে, তাঁর বিরুদ্ধে একটি নির্দিষ্ট অভিযোগ উঠেছে। সেই প্রেক্ষিতে গোটা বিষয়টি খতিয়ে দেখার পর ডিরেক্টর্স গিল্ড এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
যদিও অরিন্দমের কথায়, "আমাকে বলা হয়েছে, শট বোঝাতে গিয়ে আমি নাকি অভিনেত্রীর সঙ্গে অশালীন আচরণ করেছি । কিন্তু, সেই সময়ে চিত্রগ্রাহক থেকে শুরু করে সেটের বাকি সকলেই সেখানে হাজির ছিলেন । অভিনেতা সাহেব চট্টোপাধ্যায়ও ছিলেন । আমি শুক্রবার মহিলা কমিশনে গিয়ে কথা বলেছি । আমি বলেছি আমার অনিচ্ছাকৃত কোনও আচরণের জন্য অভিনেত্রী যদি অপমানিত বোধ করে থাকেন, তার জন্য আমি আন্তরিকভাবে ক্ষমাপ্রার্থী ।"
তিনি আরও বলেন, "আমাকে চিঠি থেকে অনিচ্ছাকৃত শব্দটি বাদ দিতে বলা হয়েছিল । আমার সহকারী পরিচালক ও ফোটোগ্রাফার এবং সুরিন্দর ফিল্মসের সদস্যরা সাক্ষী হিসেবে আছেন । কিন্ত ডিরেক্টর্স গিল্ড আমার সঙ্গে কথা না-বলেই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে ।”
বিনোদন দুনিয়ার সঙ্গে এই ধরনের হেনস্তার অভিযোগের সম্পর্কের ইতিহাস বেশ পুরনো। মাত্র কয়েক বছর আগে 'মি টু' আন্দোলন বলিউডের অনেক অজানা তথ্য প্রকাশ্যে নিয়ে এসেছিল । সম্প্রতি মলিউডেও এমন অভিযোগ উঠেছে। বাংলা ছবির অভিনেত্রী শ্রীলেখা মিত্র দাবি করেন, কয়েক বছর আগে মলিউডে কাজ করতে গিয়ে তাঁকে ভয়াবহ অভিজ্ঞতার মুখে পড়তে হয়েছিল।
শ্রীলেখার অভিযোগের জেরে কেরল চলচ্চিত্র অ্যাকাডেমির চেয়ারম্যানের পদ থেকে ইস্তফা দেন পরিচালক রঞ্জিত। শুধু তাই নয়, মলিউডে মহিলাদের সঙ্গে কী ধরনের ব্যবহার করা হয় তা নিয়ে একটি তদন্ত রিপোর্টও প্রকাশ্যে এসেছে সম্প্রতি। তার জেরে বেশ কয়েকজনকে বিভিন্ন পদ ছাড়তে হয়েছে । টলিউডেও একাধিকবার মহিলাদের যৌন হেনস্তা সংক্রান্ত অভিযোগ উঠেছে। এবার সাসপেন্ড হলেন অরিন্দম শীল।