কলকাতা, 13 সেপ্টেম্বর: মা দুর্গার মর্ত্যে আগমন হতে আর বেশিদিন বাকি নেই ৷ তবে একমাস আগে ঘটে যাওয়া আরজি কর হাসপাতালের নারকীয় ঘটনা ভুলতে পারে রাজ্যবাসী ৷ ডাক্তারি পড়ুয়ার ধর্ষণ-খুনের ঘটনায় অধরা ন্যায়বিচার ৷ তারমাঝেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের 'উৎসবে ফেরা'র আহ্বানে ক্ষেপেছেন আপামর জনতা ৷ সরব হয়েছেন সাধারণ মানুষ থেকে একাধিক তারকা ৷ আন্দোলনকে সমর্থন করে অভিনেতা দেবও জানিয়েছেন উৎসবে ফেরা উচিত ৷ উৎসব মানেই প্রতিবাদ করা হচ্ছে না এমন নয় ৷
অভিনেতা দেব বলেন, "উৎসব প্রতিবাদের একটা জায়গা ৷ উৎসব তোমার-আমার একার নয় ৷ এই উৎসব প্রত্যেকটা মানুষের ৷ উৎসব কিছু মানুষের রোজকারের জায়গা ৷ কত ঢাকিরা আসেন গ্রাম থেকে, কত বামন আসেন গ্রাম থেকে ৷ তাঁদের উৎসবের এই পাঁচদিনের টাকায় পাঁচমাস চালাতে হয় ৷ ওনারা তো পুজো উপভোগ করেন না ৷ ওনারা 24 ঘণ্টা কাজ করেন ৷ তাঁদের বেঁচে থাকার সম্বল এটা ৷ আমাদের কাছে পুজো মানে সেলফি, মণ্ডপে ঘোরা, ভালো খাওয়া-দাওয়া ৷ কিন্তু অনেক মানুষের কাছে এটা রুজি-রোজকারের জায়গা ৷"
'এই সরকার গেলে অন্য সরকার আসবে...'- আরজি কর আবহে কী চাইছেন দেব?
অভিনেতা এরপর বলেন, "আজ আমি উৎসবে ফিরছি না বললে কতগুলো মানুষের ক্ষতি হবে ৷ যেমন-অনেক প্রেক্ষাগৃহ থেকে আমাকে ফোন করা হয়েছে ছবির মুক্তি করছি কি না, তার জন্য ৷ তাঁরা বলছেন, নির্বাচনের আগে থেকে ছবি চলছে না ৷ একমাত্র ছবি চলেছে তা হল 'স্ত্রী 2' ৷ তাও তো তা বেশিরভাগ মাল্টিপ্লেক্সে চলেছে ৷ সব প্রেক্ষাগৃহে তো হিন্দি ছবির দর্শক নেই ৷ যেখানে বাংলার দর্শক রয়েছেন সেখান থেকে ফোন আসছে আমার কাছে ৷ এক একটা প্রেক্ষাগৃহে 10-20 জন কাজ করেন ৷ আমার একটা ছবির মুক্তি মানে সেই মানুষগুলো বা সেই পরিবারের কাছে পৌঁছনো ৷ তাঁদের রোজকারের জায়গা করতে পারছি ৷"
দেব আরও বলেন, "আমার কোনও অধিকার নেই তাঁদের রোজকার মেরে দেওয়ার ৷ আমার লড়াই বাংলার সরকারের সঙ্গে হতে পারে কিন্তু বাংলার মানুষের সঙ্গে নয় ৷ ইতিহাস ঘাটলে দেখতে পাবে উৎসব মানেও কিন্তু প্রতিবাদ করা, অন্যান্য মানুষকে এক করা ৷ ফলে যারা খেঁটে খাওয়া মানুষ তাঁদের পেটে লাথি মারতে পারব না ৷ উৎসবে ফিরছি মানে এই নয় যে প্রতিবাদ করছি না ৷ তাই সকলের কাছে আমার একটাই অনুরোধ, উৎসবও করুন, প্রতিবাদও করুন ৷"