কলকাতা, 10 ডিসেম্বর: মধ্যমগ্রাম পৌরসভার অনুষ্ঠানে যখন রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যার গান গাওয়া নিয়ে প্রতিবাদের ঝড় তখন খোদ কলকাতা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবের একতারা মুক্ত মঞ্চে পরিবেশিত হল বাংলাদেশের জাতীয় সঙ্গীত 'আমার সোনার বাংলা আমি তোমায় ভালোবাসি'। তার সঙ্গে নৃত্যশিল্পীদের ছন্দময় নৃত্যে এই গান যেন বাংলার প্রতি ভালোবাসার প্রতীক হয়ে উঠল এক নিমেষে। সমগ্র অনুষ্ঠান সঞ্চালনায় ছিলেন রেশমি বাগচি।
এদিনের সন্ধ্যায় বরেণ্য শিল্পীদের প্রতি সম্মাননা জ্ঞাপন করা হয় একতারা মুক্ত মঞ্চে। পরিবেশনায় 'সিনে ডান্স অ্যাসোসিয়েশন অফ ওয়েস্ট বেঙ্গল'। 'বাংলা আমার মা' গানটির মাধ্যমে পশ্চিমবঙ্গের ঐতিহ্য, গ্রামবাংলার প্রকৃতি, সংস্কৃতির আবহ ফুটে ওঠে। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের 'বীরপুরুষ' কবিতাটির নৃত্য পরিবেশন দর্শকের মনে অভিনবত্বের ছোঁয়া দেয়।
এদিন শ্রদ্ধাজ্ঞাপন করা হয় সত্যজিৎ রায়, ঋত্বিক ঘটক, মৃণাল সেনের মতো পরিচালকদের। মার্লন ব্র্যান্ডো এবং মার্সেলো মাস্ত্রোইয়ান্নিকে জন্মশতবর্ষের বিশেষ শ্রদ্ধার্ঘ নিবেদন করা হয়৷ ব্র্যান্ডোর 'গডফাদার' এবং মাস্ত্রোইয়ান্নির 'লা ডলসে ভিটা'র বিশেষ মুহূর্তগুলো তুলে ধরেন দক্ষ শিল্পীরা। সুরস্রষ্টাদের স্মরণ করে নেওয়া হয় এদিন। সুরস্রষ্টা সায়গল, এস ডি বর্মন, মান্না দে, হেমন্ত মুখোপাধ্যায়, সলিল চৌধুরী, আরডি বর্মণ থেকে শুরু করে অজয় দাস, শ্যামল মিত্রদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয় এদিন।
'মোর স্বপ্নের সাথী তুমি কাছে এসো' থেকে 'তারে বলে দিও', 'পৃথিবী বদলে গেছে', 'ধিতসং ধিতাং বোলে'-কালজয়ী সব গান এদিন মাতিয়ে তোলে উপস্থিত দর্শকদের। এপার বাংলা-অপার বাংলাকে ঘিরে অস্থির পরিবেশের মধ্যে 30তম কলকাতা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে বাংলাদেশের জাতীয় সঙ্গীতের বেজে ওঠা যেন শোনালো সৌভ্রাতৃত্বের সুর ৷