হায়দরাবাদ, 7 জুলাই: রথের দড়িতে টান মানেই মর্ত্যে মা আসছেন ৷ বিশেষ এই দিনে দুর্গাপুজোকে ঘিরে যেমন খুঁটি পুজো হয় তেমনই অনেক বনেদি বাড়িতেও শুরু হয়ে যায় পুজোর তোড়জোড় ৷ ঠিক যেমনটা হয় জনপ্রিয় অভিনেত্রী তথা তরুণ কুমারের নাতবউ ত্বরিতা চট্টোপাধ্যায়ের গ্রামের বাড়িতে ৷ 350 বছরের পুরনো দুর্গাপুজোয় আজও নিয়ম মেনে মায়ের কাঠামোতে পড়ল মাটির প্রলেপ ৷ সোশাল মিডিয়ায় বিশেষ সেই মুহূর্তের ছবি শেয়ার করেছেন অভিনেত্রী স্বয়ং ৷
কলকাতা থেকে কিছুটা দূরে গ্রামের বাড়ি ত্বরিতার ৷ কামারপুকুর থেকে 10 মিনিটের দূরত্বে তাজপুরে পৌঁছে যে কাউকে চ্যাটার্জি বাড়ির পুজোর কথা জিজ্ঞাসা করলে রাস্তা বলে দেবেন সকলে ৷ ইটিভি ভারতের তরফে ত্বরিতার কাছে পুজোর বিশেষত্ব সম্পর্কে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, "এটা সাড়ে তিনশো বছরের পুরনো পুজো ৷ আমার দাদু বগলাগতি চট্টোপাধ্যায় যখন জমিদারি প্রথা পান তখন ধুমধাম করে পুজো শুরু হয় ৷ আসলে এই পুজো প্রথমে ভট্টাচার্য বাড়ির পুজো নামে পরিচিত ছিল ৷ তারপর আমার দাদু উপাধি পান চট্টোপাধ্যায় ৷ সেখান থেকেই চ্যাটার্জি বাড়ির পুজো বলে সাধারণ মানুষজন জানেন ৷"
তিনি আরও বলেন, "আমাদের পুজোর প্রধান বৈশিষ্ট্য সপ্তমীর দিন মাকে মাছভোগ দেওয়া হয় ৷ যেখানে অনেক জায়গায় নিরামিষ খাওয়ার ঠাকুররে নিবেদন করা হয়, সেখানে আমাদের বাড়ির প্রথা অনুযায়ী দেবীর জন্য ভোগে মাছ রান্না করা হয়৷ সেই মাছ আসে বাড়ির পুকুর থেকেই ৷ তবে সেটা শুধুমাত্র পুজোর জন্যই ৷ বাড়ির সকলে মহালয়া থেকেই দশমী পর্যন্ত নিরামিষ আহার করে থাকেন ৷ আর গ্রামের সকলকে ভোগ খাওয়ানো হয় সপ্তমীর দিনই ৷ এই দিন গ্রামের ছোট থেকে বড় সকলকেই বাড়িতে বসিয়ে খাওয়ানো হয় ৷
তিনি জানান, আগে যাত্রাপালার চল ছিল পুজোকে ঘিরে ৷ সেই যাত্রা আমিও দেখেছি ৷ তবে সেটা এখন হয় না ৷ আবার পঞ্চমীতে আর একটা প্রথার চল আছে পুজো উপলক্ষ্যে ৷ তা হল নাড়ু বানানো ৷ পুজোয় নাড়ু সব জায়গাতেই হয় ৷ তবে এখানে পুজোর প্রসাদ হিসাবে প্রচুর নাড়ু বানানো হয় ৷ প্রায় 50 জন মিলে পুজোর এই কয়েকদিন ব্যস্ত থাকেন ৷ পুজো দেখতে হলে প্রসাদ হিসাবে নাড়ু দেওয়া হয় সকলকেই ৷ এরপর দশমীর দিন পাশেই একটা ঘাট রয়েছে ৷ সেখানে দেবীর নিরঞ্জন হয় ৷
জানা গিয়েছে, প্রতিবারের মতো এই বারেও পুজোর সময় গ্রামের বাড়িতেই থাকবেন ত্বরিতা ও স্বামী সৌরভ বন্দ্যোপাধ্যায় ৷ রথের দিন কাঠামোতে মাটির প্রলেপ পড়েছে ৷ মহালয়ায় নিয়ম মেনে হবে দেবীর চক্ষুদান ৷ এরপর প্রতিপদে স্থাপিত হবে মায়ের ঘট ৷ তারপরেই নিয়ম মেনে শুরু হবে পুজো৷