ETV Bharat / business

নতুন না পুরনো, কোন কর ব্যবস্থা আপনার জন্য কার্যকরী, জেনে নিন... - Income Tax

Income Tax: সম্প্রতি, নতুন কর ব্যবস্থা প্রবর্তনের মাধ্যমে দেশের কর ব্যবস্থায় বড় ধরনের পরিবর্তন এসেছে । এই পরিবর্তনটি অনেক ব্যক্তিকে বিভ্রান্ত করেছে ৷ অনেকেই বুঝতে পারছেন না যে পুরনো কর ব্যবস্থা ভালো, নাকি নতুন ব্য়বস্থা ৷

Income Tax
Income Tax
author img

By ETV Bharat Bangla Team

Published : Apr 11, 2024, 6:47 PM IST

নয়াদিল্লি, 11 এপ্রিল: দেশে এখন দুই ধরনের আয়কর ব্য়বস্থা রয়েছে ৷ 2020 সালের বাজেটে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমন নতুন আয়কর ব্যবস্থা চালু করার ঘোষণা করেন ৷ তার পর থেকে করদাতাদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে যে কোন ব্যবস্থায় আয়কর দিলে, তা লাভজনক হবে ৷

সরকার দুই ব্যবস্থার মধ্যে যেকোনও একটি বেছে নেওয়ার স্বাধীনতা করদাতাদের দিয়েছে ৷ এবার নয়া ব্যবস্থায় করের হার অনেক কম ৷ কিন্তু এখানে অনেক ছাড় পাওয়া যায় না ৷ আবার পুরনো ব্যবস্থায় করের হার বেশি হলেও বেশ কিছুক্ষেত্রে ছাড় পাওয়া যায় ৷ তাই আয়কর দেওয়ার আগে পুরো বিষয়টিই ভালো করে বুঝে নেওয়া প্রয়োজন ৷

নতুন কর ব্যবস্থা

কর কাঠামোর সরলীকরণ ও করদাতাদের বোঝা কমানোর জন্যই এই ব্যবস্থা চালু করে কেন্দ্রীয় সরকার ৷ পুরনো ব্যবস্থার থেকে করের হারে পরিবর্তন এবং ছাড় পাওয়ার মাপকাঠি নতুন ব্যবস্থার স্বতন্ত্রতা ৷ কিন্তু এখানে এইচআরএ, এলটিএ, 80সি, 80ডি ও আরও অনেক ক্ষেত্রে কর ছাড় পাওয়া যায় না ৷ সেই কারণে অনেক করদাতার কাছেই এটা গ্রহণযোগ্য হচ্ছে না ৷ এই পরিস্থিতিতে যাতে আরও বেশি করদাতা নতুন ব্যবস্থার সঙ্গে যুক্ত হয়, তার জন্য 2023-24 অর্থবর্ষে কিছু সংশোধনও করে সরকার ৷

Income Tax
আয়করের হার

করছাড়ের সীমা বৃদ্ধি: নতুন ব্যবস্থায় এখন সাত লাখ টাকা পর্যন্ত আয়ে আয়কর দিতে হয় না ৷ পুরনো ব্যবস্থায় এই সীমা 5 লক্ষ বার্ষিক আয়েই শেষ হয়ে যায় ৷ করের ধাপ সুবিন্যস্ত করা: কর ছাড়ের সীমা তিন লাখ টাকা পর্যন্ত বৃদ্ধি করা হয়েছে৷ যদিও এই বিস্তারিত তথ্য দেওয়া হয়নি ৷

পুরনো কর ব্যবস্থা

পুরনো ব্য়বস্থায় করদাতারা প্রায় 70 ধরনের ছাড় পান ৷ এর মধ্যে বাড়িভাড়া বা ছুটি নিয়ে বেড়াতে যাওয়ার ভাতায় করছাড় খুবই জনপ্রিয় ৷ এই ছাড়ের জেরে করদাতাদের করযোগ্য আয় কমে যায় ৷ অনেক ক্ষেত্রে করই দিতে হয় না ৷ বিশেষ করে 80সি-তে প্রায় দেড় লক্ষ টাকা পর্যন্ত ছাড় পাওয়া যায় ৷ বিনিয়োগের উপর এই ছাড় দেওয়া হয় ৷

মৌলিক ছাড়ের সীমা: নতুন কর ব্যবস্থার অধীনে প্রবীণ নাগরিক-সহ সকলের জন্য মৌলিক করছাড়ের সীমা অপরিবর্তিত থাকবে । এর অর্থ হল নতুন ব্যবস্থা বেছে নেওয়ার ফলে প্রবীণ এবং অতি-প্রবীণ নাগরিকদের জন্য অতিরিক্ত কর ছাড় দেওয়া হবে না ।

কর বিধির পরিবর্তন ও তা বর্ধিত করা

স্ট্যান্ডার্ড ডিডাকশন: 50 হাজার টাকার স্ট্যান্ডার্ড ডিডাকশন যা আগে শুধুমাত্র পুরনো কর ব্যবস্থার অধীনে পাওয়া যেত, তা নতুন কর ব্যবস্থাতেও বাড়ানো হয়েছে । এর অর্থ হল করদাতারা তাঁদের আয় থেকে 50 হাজার টাকার একটি স্ট্যান্ডার্ড ডিডাকশন চাইতে করতে পারেন ৷ এর ফলে তাঁদের করযোগ্য আয় কমবে ৷ নতুন ব্যবস্থার অধীনে বিভিন্ন ছাড়-সহ সাড়ে সাত লক্ষ টাকা পর্যন্ত আয় কর মুক্ত করা যাবে ৷

পারিবারিক পেনশনে ছাড়: যিনি পারিবারিক পেনশন পান, তিনি 15 হাজার টাকা বা পেনশনের এক তৃতীয়াংশ (দুইয়ের মধ্যে কম যেটা) পর্যন্ত ছাড় চাইতে পারেন ৷ এর ফলে করযোগ্য পেনশন করের আওতার বাইরে চলে যায় ৷

উচ্চ আয়ের ক্ষেত্রে কমেছে সারচার্জ: 5 কোটি টাকার বেশি আয় যাঁরা করেন, তাঁদের সারচার্জের হার 37 শতাংশ থেকে কমিয়ে 25 শতাংশ করা হয়েছে ৷ এর ফলে তাঁদের করের হার 42.74 শতাংশ থেকে কমে 39 শতাংশ হবে ৷ যা অত্যন্ত স্বস্তিদায়ক সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের কাছে ৷

ছুটি নগদীকরণে ছাড়: বেসরকারি কর্মীদের জন্য ছুটি নগদীকরণের (ছুটির বিনিময়ে টাকা) ছাড়ের সীমা বাড়ানো হয়েছে । আগে 3 লক্ষ টাকা নির্ধারিত ছিল ৷ এখন তা বাড়িয়ে 25 লক্ষ করা হয়েছে ৷ ফলে আট গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে ৷ এই উচ্চতর ছাড়ের সীমা বেসরকারী কর্মীদের ছুটির নগদ অর্থের বিনিময়ে আরও করছাড়ের সুবিধা দিচ্ছে ৷

স্বাভাবিক কর ব্যবস্থা: 2023-24 আর্থিক বছর থেকে নতুন আয়কর ব্যবস্থাকে ডিফল্ট করে দেওয়া হয়েছে ৷ অর্থাৎ এটাকেই স্বাভাবিক কর ব্যবস্থা করে দেওয়া হবে ৷ যদি করদাতারা পুরনো ব্যবস্থায় থাকতে চান, তাহলে তাঁদের ট্যাক্স রিটার্ন দাখিল করার সময় একটি ফর্ম জমা দিতে হবে । প্রতি বছর প্রয়োজনে তাঁরা এই এক কর ব্যবস্থা থেকে অন্যটি বেছে নিতে পারেন ৷

নতুন কর ব্যবস্থায় কর ছাড়ে কিছু বদল করা হয়েছে ৷ সেটাই দেখে নেওয়া যাক একনজরে -

যেগুলিতে ছাড় পাওয়া যাচ্ছে না: এলটিএ, এইচআরএ, 50 হাজার টাকার স্ট্যান্ডার্ড ডিডাকশন (2023-24 অর্থবর্ষে বেতনভোগীদের জন্য উপলব্ধ এই ছাড়), 80টিটিএ/টিটিবি-তে ছাড়, বিনোদন ভাতায় ছাড় ও প্রফেশনাল ট্যাক্স (সরকারি কর্মীদের জন্য), ধারা 24 এর অধীনে স্ব-অধিকৃত বা খালি সম্পত্তির জন্য হোম লোনের প্রদত্ত সুদের উপর কর ছাড়, ছাঁটাই সংক্রান্ত ক্ষতিপূরণ এবং অধ্যায় VI-A-এর অধীনে কর-সঞ্চয় বিনিয়োগ কাটছাঁট (80সি, 80ডি, 80ই, 80সিসিসি, 80সিসিডি, 80ডিডি, 80ডিডিবি, 80ইই, 80ইইএ, 80ইইবি, 80জি, 80জিজি, 80জিজিএ, 80জিজিসি, 80আইএ, 80-আইএবি, 80-আইএসি, 80-আইবি, 80-আইবিএ ৷ ধারা 80সিসিডি(2), 80জেজেএ, এবং 80সিসিএইচ-এর অধীনে ছাড় ব্যতীত) ৷

যেগুলিতে ছাড়গুলি পাওয়া যাবে: জীবন বীমা থেকে আয়, শিক্ষা সংক্রান্ত জন্য বৃত্তি, অবসরে নগদ অর্থে ছাড়, কৃষি থেকে আয়, ভাড়ার আয়ের উপর স্ট্যান্ডার্ড ডিডাকশন এবং বেতনভোগী ব্যক্তি ও পেনশনভোগীদের জন্য 50 হাজার টাকা এবং ফ্যামিলি পেনশনারদের জন্য 15 হাজার টাকার স্ট্যান্ডার্ড ডিডাকশন (2024-25 অর্থবর্ষের পর), পারিবারিক পেনশন থেকে 15 হাজার টাকা ছাড় (2023-24 অর্থবর্ষ পর্যন্ত), স্বেচ্ছাবসরের ক্ষেত্রে 5 লক্ষ টাকা পর্যন্ত আয় এবং মৃত্যু সহ-অবসর সুবিধা ৷

এবার দুই ব্য়বস্থার করের তুলনা করে দেখে নেওয়া যাক -

যখন ছাড় 5 লক্ষ টাকা বা তার কম: এই ক্ষেত্রে, নতুন কর ব্যবস্থা আরও উপকারী হবে । নতুন ব্যবস্থায় করের হার কম ৷ তাই পুরনোর ব্যবস্থার ছাড়ের তুলনায় এটা ভালো হবে ৷

পুরো ছাড় যখন 3.75 লক্ষের বেশি: যদি মোট ছাড়ের পরিমাণ 3.75 লক্ষ টাকার বেশি হয়, তাহলে পুরনো কর ব্যবস্থা গ্রহণ করাই কার্যকরী হবে ৷ পুরনো ব্যবস্থায় থাকা একাধিক কর ছাড় করযোগ্য আয়কে কমিয়ে দিতে পারে এক্ষেত্রে ৷

যখন ছাড় দেড় লক্ষ থেকে 3.75 লক্ষের মধ্যে থাকে: এক্ষেত্রে সিদ্ধান্ত নেওয়া কঠিন ৷ তবে সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে আয়ের পরিমাণ, সুনির্দিষ্ট ছাড় ও কী কী ছাড় পাওয়া যাবে, তা ভালো করে আগে জানা উচিত ৷ তার পর কোন কর ব্যবস্থায় যাওয়া হবে, তা ঠিক করা উচিত ৷

দুই কর ব্যবস্থায় পার্থক্য অনেক ৷ তাই বেছে নেওয়ার আগে যেকোনও করদাতাকে নিজের অবস্থার কথা আগে বিবেচনা করা উচিত ৷ কারণ, নতুন ব্যবস্থায় করের হার কম হলেও অনেক ছাড় পুরনো ব্যবস্থার মতো পাওয়া যায় না ৷ আবার নতুন কর ব্যবস্থা পুরনোটির মতো এত জটিলও নয় ৷ তাই যে কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে দীর্ঘমেয়াদী লাভের কথা আগে বিবেচনা করা উচিত ৷

আর পড়ুন:

  1. আপনি চাকুরিজীবী ? আয়কর বাঁচাতে 31 মার্চের মধ্যেই সারুন এই ছোট্ট কাজ
  2. নতুন না পুরনো, কোন আয়কর ব্যবস্থা আপনার জন্য উপযুক্ত?
  3. 'নির্বাচনী' বাজেটে মহিলাদের জন্য একগুচ্ছ ঘোষণা, অপরিবর্তিতই রইল আয়কর

নয়াদিল্লি, 11 এপ্রিল: দেশে এখন দুই ধরনের আয়কর ব্য়বস্থা রয়েছে ৷ 2020 সালের বাজেটে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমন নতুন আয়কর ব্যবস্থা চালু করার ঘোষণা করেন ৷ তার পর থেকে করদাতাদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে যে কোন ব্যবস্থায় আয়কর দিলে, তা লাভজনক হবে ৷

সরকার দুই ব্যবস্থার মধ্যে যেকোনও একটি বেছে নেওয়ার স্বাধীনতা করদাতাদের দিয়েছে ৷ এবার নয়া ব্যবস্থায় করের হার অনেক কম ৷ কিন্তু এখানে অনেক ছাড় পাওয়া যায় না ৷ আবার পুরনো ব্যবস্থায় করের হার বেশি হলেও বেশ কিছুক্ষেত্রে ছাড় পাওয়া যায় ৷ তাই আয়কর দেওয়ার আগে পুরো বিষয়টিই ভালো করে বুঝে নেওয়া প্রয়োজন ৷

নতুন কর ব্যবস্থা

কর কাঠামোর সরলীকরণ ও করদাতাদের বোঝা কমানোর জন্যই এই ব্যবস্থা চালু করে কেন্দ্রীয় সরকার ৷ পুরনো ব্যবস্থার থেকে করের হারে পরিবর্তন এবং ছাড় পাওয়ার মাপকাঠি নতুন ব্যবস্থার স্বতন্ত্রতা ৷ কিন্তু এখানে এইচআরএ, এলটিএ, 80সি, 80ডি ও আরও অনেক ক্ষেত্রে কর ছাড় পাওয়া যায় না ৷ সেই কারণে অনেক করদাতার কাছেই এটা গ্রহণযোগ্য হচ্ছে না ৷ এই পরিস্থিতিতে যাতে আরও বেশি করদাতা নতুন ব্যবস্থার সঙ্গে যুক্ত হয়, তার জন্য 2023-24 অর্থবর্ষে কিছু সংশোধনও করে সরকার ৷

Income Tax
আয়করের হার

করছাড়ের সীমা বৃদ্ধি: নতুন ব্যবস্থায় এখন সাত লাখ টাকা পর্যন্ত আয়ে আয়কর দিতে হয় না ৷ পুরনো ব্যবস্থায় এই সীমা 5 লক্ষ বার্ষিক আয়েই শেষ হয়ে যায় ৷ করের ধাপ সুবিন্যস্ত করা: কর ছাড়ের সীমা তিন লাখ টাকা পর্যন্ত বৃদ্ধি করা হয়েছে৷ যদিও এই বিস্তারিত তথ্য দেওয়া হয়নি ৷

পুরনো কর ব্যবস্থা

পুরনো ব্য়বস্থায় করদাতারা প্রায় 70 ধরনের ছাড় পান ৷ এর মধ্যে বাড়িভাড়া বা ছুটি নিয়ে বেড়াতে যাওয়ার ভাতায় করছাড় খুবই জনপ্রিয় ৷ এই ছাড়ের জেরে করদাতাদের করযোগ্য আয় কমে যায় ৷ অনেক ক্ষেত্রে করই দিতে হয় না ৷ বিশেষ করে 80সি-তে প্রায় দেড় লক্ষ টাকা পর্যন্ত ছাড় পাওয়া যায় ৷ বিনিয়োগের উপর এই ছাড় দেওয়া হয় ৷

মৌলিক ছাড়ের সীমা: নতুন কর ব্যবস্থার অধীনে প্রবীণ নাগরিক-সহ সকলের জন্য মৌলিক করছাড়ের সীমা অপরিবর্তিত থাকবে । এর অর্থ হল নতুন ব্যবস্থা বেছে নেওয়ার ফলে প্রবীণ এবং অতি-প্রবীণ নাগরিকদের জন্য অতিরিক্ত কর ছাড় দেওয়া হবে না ।

কর বিধির পরিবর্তন ও তা বর্ধিত করা

স্ট্যান্ডার্ড ডিডাকশন: 50 হাজার টাকার স্ট্যান্ডার্ড ডিডাকশন যা আগে শুধুমাত্র পুরনো কর ব্যবস্থার অধীনে পাওয়া যেত, তা নতুন কর ব্যবস্থাতেও বাড়ানো হয়েছে । এর অর্থ হল করদাতারা তাঁদের আয় থেকে 50 হাজার টাকার একটি স্ট্যান্ডার্ড ডিডাকশন চাইতে করতে পারেন ৷ এর ফলে তাঁদের করযোগ্য আয় কমবে ৷ নতুন ব্যবস্থার অধীনে বিভিন্ন ছাড়-সহ সাড়ে সাত লক্ষ টাকা পর্যন্ত আয় কর মুক্ত করা যাবে ৷

পারিবারিক পেনশনে ছাড়: যিনি পারিবারিক পেনশন পান, তিনি 15 হাজার টাকা বা পেনশনের এক তৃতীয়াংশ (দুইয়ের মধ্যে কম যেটা) পর্যন্ত ছাড় চাইতে পারেন ৷ এর ফলে করযোগ্য পেনশন করের আওতার বাইরে চলে যায় ৷

উচ্চ আয়ের ক্ষেত্রে কমেছে সারচার্জ: 5 কোটি টাকার বেশি আয় যাঁরা করেন, তাঁদের সারচার্জের হার 37 শতাংশ থেকে কমিয়ে 25 শতাংশ করা হয়েছে ৷ এর ফলে তাঁদের করের হার 42.74 শতাংশ থেকে কমে 39 শতাংশ হবে ৷ যা অত্যন্ত স্বস্তিদায়ক সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের কাছে ৷

ছুটি নগদীকরণে ছাড়: বেসরকারি কর্মীদের জন্য ছুটি নগদীকরণের (ছুটির বিনিময়ে টাকা) ছাড়ের সীমা বাড়ানো হয়েছে । আগে 3 লক্ষ টাকা নির্ধারিত ছিল ৷ এখন তা বাড়িয়ে 25 লক্ষ করা হয়েছে ৷ ফলে আট গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে ৷ এই উচ্চতর ছাড়ের সীমা বেসরকারী কর্মীদের ছুটির নগদ অর্থের বিনিময়ে আরও করছাড়ের সুবিধা দিচ্ছে ৷

স্বাভাবিক কর ব্যবস্থা: 2023-24 আর্থিক বছর থেকে নতুন আয়কর ব্যবস্থাকে ডিফল্ট করে দেওয়া হয়েছে ৷ অর্থাৎ এটাকেই স্বাভাবিক কর ব্যবস্থা করে দেওয়া হবে ৷ যদি করদাতারা পুরনো ব্যবস্থায় থাকতে চান, তাহলে তাঁদের ট্যাক্স রিটার্ন দাখিল করার সময় একটি ফর্ম জমা দিতে হবে । প্রতি বছর প্রয়োজনে তাঁরা এই এক কর ব্যবস্থা থেকে অন্যটি বেছে নিতে পারেন ৷

নতুন কর ব্যবস্থায় কর ছাড়ে কিছু বদল করা হয়েছে ৷ সেটাই দেখে নেওয়া যাক একনজরে -

যেগুলিতে ছাড় পাওয়া যাচ্ছে না: এলটিএ, এইচআরএ, 50 হাজার টাকার স্ট্যান্ডার্ড ডিডাকশন (2023-24 অর্থবর্ষে বেতনভোগীদের জন্য উপলব্ধ এই ছাড়), 80টিটিএ/টিটিবি-তে ছাড়, বিনোদন ভাতায় ছাড় ও প্রফেশনাল ট্যাক্স (সরকারি কর্মীদের জন্য), ধারা 24 এর অধীনে স্ব-অধিকৃত বা খালি সম্পত্তির জন্য হোম লোনের প্রদত্ত সুদের উপর কর ছাড়, ছাঁটাই সংক্রান্ত ক্ষতিপূরণ এবং অধ্যায় VI-A-এর অধীনে কর-সঞ্চয় বিনিয়োগ কাটছাঁট (80সি, 80ডি, 80ই, 80সিসিসি, 80সিসিডি, 80ডিডি, 80ডিডিবি, 80ইই, 80ইইএ, 80ইইবি, 80জি, 80জিজি, 80জিজিএ, 80জিজিসি, 80আইএ, 80-আইএবি, 80-আইএসি, 80-আইবি, 80-আইবিএ ৷ ধারা 80সিসিডি(2), 80জেজেএ, এবং 80সিসিএইচ-এর অধীনে ছাড় ব্যতীত) ৷

যেগুলিতে ছাড়গুলি পাওয়া যাবে: জীবন বীমা থেকে আয়, শিক্ষা সংক্রান্ত জন্য বৃত্তি, অবসরে নগদ অর্থে ছাড়, কৃষি থেকে আয়, ভাড়ার আয়ের উপর স্ট্যান্ডার্ড ডিডাকশন এবং বেতনভোগী ব্যক্তি ও পেনশনভোগীদের জন্য 50 হাজার টাকা এবং ফ্যামিলি পেনশনারদের জন্য 15 হাজার টাকার স্ট্যান্ডার্ড ডিডাকশন (2024-25 অর্থবর্ষের পর), পারিবারিক পেনশন থেকে 15 হাজার টাকা ছাড় (2023-24 অর্থবর্ষ পর্যন্ত), স্বেচ্ছাবসরের ক্ষেত্রে 5 লক্ষ টাকা পর্যন্ত আয় এবং মৃত্যু সহ-অবসর সুবিধা ৷

এবার দুই ব্য়বস্থার করের তুলনা করে দেখে নেওয়া যাক -

যখন ছাড় 5 লক্ষ টাকা বা তার কম: এই ক্ষেত্রে, নতুন কর ব্যবস্থা আরও উপকারী হবে । নতুন ব্যবস্থায় করের হার কম ৷ তাই পুরনোর ব্যবস্থার ছাড়ের তুলনায় এটা ভালো হবে ৷

পুরো ছাড় যখন 3.75 লক্ষের বেশি: যদি মোট ছাড়ের পরিমাণ 3.75 লক্ষ টাকার বেশি হয়, তাহলে পুরনো কর ব্যবস্থা গ্রহণ করাই কার্যকরী হবে ৷ পুরনো ব্যবস্থায় থাকা একাধিক কর ছাড় করযোগ্য আয়কে কমিয়ে দিতে পারে এক্ষেত্রে ৷

যখন ছাড় দেড় লক্ষ থেকে 3.75 লক্ষের মধ্যে থাকে: এক্ষেত্রে সিদ্ধান্ত নেওয়া কঠিন ৷ তবে সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে আয়ের পরিমাণ, সুনির্দিষ্ট ছাড় ও কী কী ছাড় পাওয়া যাবে, তা ভালো করে আগে জানা উচিত ৷ তার পর কোন কর ব্যবস্থায় যাওয়া হবে, তা ঠিক করা উচিত ৷

দুই কর ব্যবস্থায় পার্থক্য অনেক ৷ তাই বেছে নেওয়ার আগে যেকোনও করদাতাকে নিজের অবস্থার কথা আগে বিবেচনা করা উচিত ৷ কারণ, নতুন ব্যবস্থায় করের হার কম হলেও অনেক ছাড় পুরনো ব্যবস্থার মতো পাওয়া যায় না ৷ আবার নতুন কর ব্যবস্থা পুরনোটির মতো এত জটিলও নয় ৷ তাই যে কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে দীর্ঘমেয়াদী লাভের কথা আগে বিবেচনা করা উচিত ৷

আর পড়ুন:

  1. আপনি চাকুরিজীবী ? আয়কর বাঁচাতে 31 মার্চের মধ্যেই সারুন এই ছোট্ট কাজ
  2. নতুন না পুরনো, কোন আয়কর ব্যবস্থা আপনার জন্য উপযুক্ত?
  3. 'নির্বাচনী' বাজেটে মহিলাদের জন্য একগুচ্ছ ঘোষণা, অপরিবর্তিতই রইল আয়কর
ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.