হায়দরাবাদ, 27 ডিসেম্বর: মিডিয়া বিপ্লবের মশাল বাহক, সিনেমা জগতের চ্যাম্পিয়ন, বিনোদনের একজন উজ্জ্বল নক্ষত্র, উদ্যোগপতিদের জাদুকর - একই অঙ্গে এত রূপ ৷ রামোজি গ্রুপের প্রয়াত চেয়ারম্যান রামোজি রাও । তিনি বরাবর সংবাদপত্রের স্বাধীনতার পক্ষে দাঁড়িয়েছেন ৷ তিনি তাঁর প্রতিটি প্রচেষ্টায় রেখেছেন পেশাদারিত্বের ছাপ ৷
অমর এক আভিজাত্য
1936 সালের 16 নভেম্বর অন্ধ্রপ্রদেশের গুড়িভাদার কাছে পেদাপারুপুদি গ্রামে এক কৃষক পরিবারে জন্মগ্রহণ করেছিলেন রামোজি রাও ৷ সাদামাটাভাবে জীবন শুরু করে তিনি উঠেছিলেন উচ্চতার শিখরে । 2024 সালের আটই জুন 87 বছর বয়সে তাঁর জীবনাবসান হয় ৷ প্রতিটি উদ্যোগে অসামান্য অবদানের দ্বারা তিনি রেখে গিয়েছেন তাঁর বহুমুখী ও দীর্ঘস্থায়ী উত্তরাধিকার ৷
কয়েক দশক ধরে শ্রেষ্ঠত্বের আলোকবর্তিকা হয়ে ছিলেন রামোজি রাও, যিনি স্বপ্নকে বাস্তবে পরিণত করেছিলেন । সিনেমার জগতের একজন চ্যাম্পিয়ন হিসেবে তিনি হায়দরাবাদে প্রতিষ্ঠা করেছিলেন রাজকীয় রামোজি ফিল্ম সিটি, যা সিনেপ্রেমী ও ছুটি কাটাতে যাওয়া পর্যটকদের জন্য মাস্ট-ওয়াচ ৷ তিনি ছিলেন একজন প্রতিশ্রুতিবদ্ধ চলচ্চিত্র প্রযোজক, যিনি তারকাদের থেকেও ছবির গল্পকে বেশি গুরুত্ব দিয়েছেন ৷ তিনি একজন জনহিতৈষী, যাঁর সামাজিক দায়বদ্ধতার প্রতিও ছিল অটল অঙ্গীকার । কখনও নিজের শিকড় ভুলে যাননি এই কৃষকের সন্তান ৷ তিনি নানা সেবামূলক কাজ করেছেন ৷ তাঁর জন্ম যেই গ্রামে তাকে দত্তক নেন তিনি ।
আক্ষরিক অর্থেই একজন কর্মযোগী
আজীবন একজন সক্রিয় ও গতিশীল মানুষ ছিলেন রামোজি রাও ৷ বিভিন্ন ক্ষেত্রে তাঁর উদ্যোগের মাধ্যমে তিনি মিডিয়া, সিনেমা, আতিথেয়তা, আর্থিক নিরাপত্তা এবং খাদ্য শিল্পে লক্ষ লক্ষ মানুষের জীবন স্পর্শ করেছেন । তিনি একজন বিরল স্বপ্নদর্শী ছিলেন, যিনি স্বপ্নকে বাস্তবে রূপান্তর না করা পর্যন্ত কিছুতেই থামেননি । মিডিয়াতে তিনি ছিলেন একজন ট্রেন্ডসেটার, যিনি স্টিরিয়োটাইপ অর্থাৎ তথাকথিত ধারণাকে ভেঙেছেন এবং সেগুলিকে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছেন তাঁর সাহসী পদক্ষেপের মাধ্যমে ইনাড়ুর কোর্স তৈরি করে, সমস্ত অংশের পাঠকদের সেবা করে ।
চেরুকুরি রামোজি রাও পরিচিত ছিলেন রামোজি রাও নামে ৷ তাঁর বহুমুখী ব্যক্তিত্বের একটি উষ্ণ দিক রয়েছে । তাঁর কাছের লোকেদের কাছে তিনি একজন বন্ধু, দার্শনিক এবং পথপ্রদর্শক ছিলেন । রামোজি ফিল্ম সিটিতে তাঁর অন্ত্যেষ্টি ক্রিয়া হবে, কোথায় তাঁকে রাষ্ট্রীয় সম্মানের সঙ্গে সমাহিত করা হবে, সবকিছু তিনি আগে থেকেই ঠিক করে রেখেছিলেন ৷
বহুমুখী উদ্যোগপতি
একজন জন্মগত উদ্যোগপতি ছিলেন রামোজি রাও ৷ সর্বদা পাঠক, চলচ্চিত্র প্রেমী, খাদ্য উৎসাহী, অর্থ সঞ্চয়কারী মানুষদের জন্য কিছু করতে নানা ভাবনা তাঁকে তাড়িয়ে বেড়াত ৷ তাঁর অসংখ্য মিডিয়া প্রকাশনার মাধ্যমে তিনি সমাজের সকল স্তরের কৃষক, মহিলা, শিশু, যুবক এবং চাকরিপ্রার্থীদের কাছে পৌঁছেছিলেন ।
তিনি 1962 সালে মার্গদর্শী চিট ফান্ড, 1974 সালে ইনাড়ু, 1980 সালে প্রিয়া ফুডস, 1980 সালে ডলফিন গ্রুপ অফ হোটেলস, 1983 সালে উষাকিরণ মুভিজ, 1995 সালে ইটিভি চ্যানেল, 1996 সালে রামোজি ফিল্ম সিটি, 2002 সালে রামাদেবী পাবলিক স্কুল এবং 2019 সালে ইটিভি ভারত প্রতিষ্ঠা করেন ।
সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতার লড়াইয়ে যোদ্ধা
1975 সালে 25 জুন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধির ঘোষিত জরুরি অবস্থার সময় প্রেসের সেন্সরশিপের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ান ইনাড়ুর প্রতিষ্ঠাতা রামোজি রাও । তাঁর নেতৃত্বে ইনাড়ু তার 50 বছরের সংগ্রামে ধারাবাহিকভাবে জনগণের পাশে দাঁড়িয়েছে । এই দৈনিক দৃঢ়ভাবে সত্য, ন্যায়পরায়ণতা এবং ন্যায়বিচারের পক্ষে সওয়াল করেছে এবং অপশাসন, দুর্নীতি ও গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানের প্রতি হুমকির বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়েছে । রামোজি রাও 80-এর দশকের শেষের দিকে এডিটরস গিল্ড অফ ইন্ডিয়ার সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন ।
মিডিয়া ব্যারন
পাঁচ দশকেরও বেশি সময় ধরে রামোজি রাও সংবাদপত্র, ম্যাগাজিন এবং ইলেকট্রনিক প্ল্যাটফর্মের এক বিরাট সাম্রাজ্য স্থাপন করেছিলেন । এর মধ্যে রয়েছে দৈনিক সংবাদপত্র ইনাডু তেলুগু, ইটিভি, ইটিভি ভারত, অন্নদাতা, বলভারথম, চতুরা এবং বিপুলা । 1974 সালে যাত্রা শুরু করেছিল ইনাড়ু দৈনিক, যা তেলুগু পাঠকদের হৃদয়কে নাড়িয়ে দিয়েছে ৷ এটি চলতি বছর সুবর্ণ জয়ন্তী উদযাপন করছে ।
রামোজি রাও নানা বিশিষ্ট ব্যক্তি, রাজনৈতিক নেতা, বুদ্ধিজীবী এবং সুশীল সমাজের নেতাদের কাছ থেকে প্রশংসা অর্জন করেছেন । প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি রামোজি রাওয়ের প্রচেষ্টার প্রশংসা করে বলেছেন যে, রামোজি গ্রুপের চেয়ারম্যান শুধুমাত্র ভারতীয় মিডিয়াতে বিপ্লব ঘটাননি, বরং দেশের উন্নয়নের জন্য তিনি ছিলেন একটি আবেগ । প্রধানমন্ত্রী এক্স-এ পোস্টে লিখেছিলেন, "আমি ভাগ্যবান যে, তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করার এবং তাঁর প্রজ্ঞা থেকে উপকৃত হওয়ার বেশ কয়েকটি সুযোগ পেয়েছি ৷"
Here is the English translation of my tribute to Ramoji Rao Garu.https://t.co/DA4uUnULQo
— Narendra Modi (@narendramodi) June 9, 2024
অন্ধ্রপ্রদেশ সরকার আয়োজিত স্মরণসভায় ভাষণ দিতে গিয়ে সিনিয়র সাংবাদিক তথা হিন্দু পাবলিশিং গ্রুপের ডিরেক্টর এন রাম বলেছিলেন যে, কীভাবে রামোজি রাও ইনাড়ুকে সত্য ও ন্যায়ের পক্ষে একজন শক্তিশালী রক্ষকে পরিণত করেছেন ৷ এন রামের কথায়, "সরকারি বাড়াবাড়ি, দুর্নীতি এবং গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের প্রতি হুমকির বিরুদ্ধে ধারাবাহিকভাবে দাঁড়িয়েছেন ।"
রামোজি রাওয়ের উত্তরাধিকারকে স্মরণ করার জন্য, গ্রুপ ইনাডুর ম্যানেজিং ডিরেক্টর এবং রামোজি রাওয়ের বড় ছেলে চেরুকুরি কিরণের পক্ষ থেকে অন্ধ্রপ্রদেশের রাজধানী শহর অমরাবতী নির্মাণে 10 কোটি টাকা দান করা হয়েছে ।
রামোজি রাওয়ের ব্রেইনচাইল্ডের সুবর্ণ জয়ন্তী উদযাপন
মিডিয়া সংগঠন পরিচালনা করার সময় রামোজি রাও সাংবাদিকতা এবং গণযোগাযোগে অসংখ্য পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেছেন । তাঁর নেতৃত্বে ইনাড়ু তেলুগু সাংবাদিকতার গৌরব হয়ে ওঠে । পরবর্তী প্রজন্মের জন্য সাংবাদিকতা শেখানোর সুযোগ তৈরি করতে তিনি ইনাড়ু জার্নালিজম স্কুলও চালু করেছিলেন । তিনি তাঁর সাংবাদিকতার সেবার মাধ্যমে তরুণ-বৃদ্ধ, ছাত্র, শিশু, নারী, কৃষক প্রভৃতি লাখো মানুষের হৃদয় স্পর্শ করেছেন ।
জনসাধারণের স্বার্থরক্ষা ও ভালোর জন্য ইনাডু রামোজি রাওয়ের প্রতিশ্রুতির প্রতীক ৷ এই প্রতিষ্ঠান সরকারকে তাদের কর্মের জন্য দায়বদ্ধ করে । 2004 সালে ইনাডু দৈনিক ওয়াইএস রাজশেখর রেড্ডি সরকারের সময় দুর্নীতির বিষয়টি প্রকাশ করেছিল ৷ কীভাবে জনসাধারণের সম্পদগুলি ব্যক্তিদের সুবিধার জন্য ব্যবহার করা হয়েছিল তাও প্রকাশ করা হয় । তিনি বিশ্বাসযোগ্যতাকে অন্য সবকিছুর উপরে রেখেছিলেন, যার ফলে এই দৈনিক চালু হওয়ার চার বছরের মধ্যে তা সমস্ত তেলুগু সংবাদপত্রের মধ্যে শীর্ষ স্থান দখল করে । 1984 সালের গণতন্ত্রের পুনরুজ্জীবন আন্দোলনের মতো প্রতিটি জনগণের আন্দোলনের পিছনে ইনাড়ু ছিল । রামোজি রাওয়ের দৃষ্টিভঙ্গি স্পষ্ট হয় বহু ভারতীয় ভাষায় তাঁর ইটিভি চ্যানেল প্রতিষ্ঠায় ৷ এভাবে সারা দেশের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছিলেন তিনি । এছাড়াও, তিনি ইটিভি ভারত অ্যাপ তৈরি করেছেন, যা 13টি ভারতীয় ভাষায় 23টি নিউজ পোর্টালের একটি ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম ।
গণতন্ত্রের একজন চ্যাম্পিয়ন
1984 সালে যখন সংযুক্ত অন্ধ্রপ্রদেশের এনটিআর সরকারকে উৎখাত করা হয়, তখন রামোজি রাওয়ের নেতৃত্বাধীন ইনাড়ু দৃঢ়ভাবে অগণতান্ত্রিক আইনের বিরোধিতা করে এবং জনগণের আন্দোলনে অত্যন্ত প্রয়োজনীয় মনোবল জোগায়, যা অবশেষে রাজ্যকে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের দিকে পরিচালিত করে । দৈনিকটি চালু হওয়ার পর থেকে সর্বদা জনগণের পালস বুঝে কাজ করেছে ।
দুর্যোগে দুর্গতদের জন্য একটি সাহায্যকারী হাত
1976 সালে যখন অন্ধ্রপ্রদেশে তিনটি পর পর ঝড় আঘাত হানে, তখন রাও সাধারণ মানুষের স্বার্থে এগিয়ে আসেন এবং 10,000 টাকা দিয়ে একটি ত্রাণ তহবিল শুরু করেন এবং মাত্র 2 বছর বয়সি ইনাড়ুর মাধ্যমে সবার কাছ থেকে সাহায্য চাওয়ার জন্য সচেতনতা প্রচার চালায় । তিনি 'ইনাড়ু রিলিফ ফান্ড'কে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেন । যদিও এই তহবিলকে তিনি স্কুল নির্মাণ, তাঁতিদের তাঁত প্রদান এবং তেলুগু রাজ্য, গুজরাত, ওড়িশা, তামিলনাড়ু ও কেরলে ঘূর্ণিঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত গ্রামগুলিতে বাড়ি নির্মাণে সহায়তায় প্রসারিত করেছিলেন ।
1977 সালের 19 নভেম্বর একটি প্রবল ঘূর্ণিঝড় এবং একটি ঝড় অন্ধ্রপ্রদেশের কৃষ্ণা জেলার দিভিসিমায় আঘাত হানে, যার ফলে প্রচুর জীবন ও সম্পত্তির ক্ষতি হয় । রামোজি রাও ইনাড়ু ত্রাণ তহবিলকে ফের জাগিয়ে তোলেন এবং 7.5 লক্ষ টাকা সংগ্রহ করেন ও ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় 112টি বাড়ি তৈরি করে দেন ।
2014 সালে ঘূর্ণিঝড় হুদহুদ বিপর্যয় ডেকে আনে অন্ধ্রপ্রদেশে । সেই সময় তিনি ইনাড়ু ত্রাণ তহবিল থেকে 3 কোটি টাকা দান করেন ৷ তাঁর দৈনিকের পাঠকরা তাঁর পাশে দাঁড়িয়ে ত্রাণ কাজের জন্য মোট 6.18 কোটি টাকা সংগ্রহ করে । রামোজি রাও 'হুদহুদ সাইক্লোন রিহ্যাবিলিটেশন কলোনি' তৈরি করেছিলেন এবং বিশাখাপত্তনম ও শ্রীকাকুলাম জেলার ক্ষতিগ্রস্তদের এই আবাসন প্রকল্পগুলির মাধ্যমে সাহায্য করা হয়েছিল ।
2018 সালে কেরলের বন্যায় রামোজি রাও 7.71 কোটি টাকার ত্রাণ তহবিল সংগ্রহ করেছিলেন ৷ এই অর্থ কালেক্টর কৃষ্ণ তেজার সহায়তায় আলাপুজা জেলায় 121টি বাড়ি নির্মাণে সহায়তা করেছে ।
রামোজি গ্রুপ প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্তদের সাহায্য করার জন্য সর্বদা এগিয়ে ছিল । পাকিস্তান সীমান্তে গুজরাত ভূমিকম্পে ধুলিসাৎ হয়ে যাওয়া কাভদা গ্রামটিকে তারা পুনর্নির্মাণ করেছে । তামিলনাড়ুর কুড্ডালোর ও নাগাপট্টিনামের সুনামি ক্ষতিগ্রস্তদের সাহায্য করা হয়েছে । ঘূর্ণিঝড় ও বন্যার কবলে পড়লে সংযুক্ত অন্ধ্রপ্রদেশ ও ওড়িশায় পুনর্বাসন কার্যক্রমও গ্রহণ করা হয় ।
রামোজি ফাউন্ডেশন - ট্রান্সফর্মিং সোসাইটি
রামোজি রাও রামোজি ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে গ্রুপের সিএসআর শাখা এখনও পর্যন্ত গ্রামীণ উন্নয়নের অধীনে বিভিন্ন উদ্যোগের জন্য 131 কোটি টাকা (40 কোটি টাকা ব্যয়ে জন্মগ্রাম পেদাপারুপুদি এবং নাগানপল্লি-সহ স্মার্ট গ্রাম ধারণার অধীনে দুটি গ্রাম দত্তক) খরচ করেছে । তিনি আবদুল্লাহপুরমেট, ইব্রাহিমপত্তনম এবং হায়াথনগর মণ্ডলে সরকারি ভবন নির্মাণের জন্য 13 কোটি টাকা খরচ করেছেন ৷ মানচেরিয়াল, ভদ্রাচলম এবং কুর্নুলে বৃদ্ধাশ্রম নির্মাণের জন্য 9 কোটি টাকা খরচ করেছেন । কোভিডের সময় রামোজি ফাউন্ডেশন দুই তেলুগু রাজ্যে 20 কোটি টাকা এবং বন্যা ত্রাণ কার্যক্রমের জন্য তামিলনাড়ুকে 3 কোটি টাকা দান করেছে । অন্যান্য অবদানের মধ্যে রয়েছে গ্রামীণ উন্নয়নের জন্য এপি কানেক্টে 10 কোটি টাকা, জিনোম ফাউন্ডেশন, এলভি প্রসাদ আই ইনস্টিটিউট, হাসপাতাল প্রতিষ্ঠা এবং গবেষণার জন্য ক্যান্সার ফাউন্ডেশনের মতো চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানে আট কোটি টাকা দান ।
তাঁর পদাঙ্ক অনুসরণ করে, তাঁর পরিবার জনহিতকর কাজ চালিয়ে যাচ্ছে ৷ দক্ষতা উন্নয়ন, শিল্প ও সংস্কৃতির প্রচার এবং খেলাধুলোর প্রচারে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে । এছাড়াও, ফাউন্ডেশন ইন্ডিয়ান স্কুল অফ বিজনেসকে একটি স্টেট অফ দ্য আর্ট অডিটোরিয়াম হিসেবে তৈরি করার জন্য, গ্লোবাল কনফারেন্স, রিসার্চ সেমিনার, এবং শেখার ও চিন্তার নেতৃত্বে শ্রেষ্ঠত্ব প্রচারের জন্য 30 কোটি টাকা প্রদান করেছে ।
রামোজি ফিল্ম সিটি (আরএফসি) - একটি স্বপ্নের প্রকল্প
রামোজি রাও একজন চলচ্চিত্র প্রযোজক, পরিবেশক এবং স্টুডিয়োর মালিক হিসাবেও দুর্দান্ত ছিলেন । ময়ূরী, প্রতিঘটানা, ছবিরাম এবং নুভবেকাভলির মতো তাঁর বার্তা-ভিত্তিক ছবিগুলি বক্স অফিসে ব্যাপক সাফল্য পেয়েছে । রামোজি ফিল্ম সিটি (আরএফসি) ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির একটি আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে, যেখানে বাহুবলী, গজনী, চন্দ্রমুখী, রোবট এবং পুষ্পা-সহ 3000-এরও বেশি চলচ্চিত্র তৈরি হয়েছে এবং এখনও হয়ে চলেছে ৷ আরএফসি বিনোদন ও মজার একটি প্রাণবন্ত কেন্দ্র হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে, যেখানে ছুটির দিন, উৎসব ও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের বিশেষ অনুষ্ঠানের সময় দর্শকদের বিনোদনের জন্য বিভিন্ন অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয় ৷
রামোজি রাওয়ের থেকে পাওয়া জীবনের কিছু শিক্ষা
- সর্বদা আগামিকালের কথা চিন্তা করুন । গতকালের কথা ভাববেন না ।
- পরিবর্তন এবং অগ্রগতি যমজের মতো । পরিবর্তনের মাধ্যমেই উন্নয়ন সম্ভব । আপনি যদি উন্নয়ন চান, নতুন চিন্তা নিয়ে আসুন ।
- আপনি যতই সমস্যায় পড়ুন না কেন, নিজের জীবন নিজে বাঁচুন । কারও সাহায্যের জন্য অপেক্ষা করবেন না ।
- শৃঙ্খলা ছাড়া সাফল্যের কোনও রহস্য নেই । এটি ছাড়া কোনও প্রতিভা বিকাশ করতে পারে না ।
- কোনও ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের প্রকৃত সম্পদ হল বিশ্বাসযোগ্যতা । আপনার চোখের মণির মতো এটিকে রক্ষা করুন !
- বাজেট কম ক্ষতি নেই, আকাশ সমান আয় এইসব ছবির