নয়াদিল্লি, 4 ডিসেম্বর: মনরেগার বকেয়া অর্থ মেটানো নিয়ে পশ্চিমবঙ্গের সঙ্গে কোনও বৈষম্য করা হয়নি ৷ এর জন্য বাংলার সরকারকেই দুষলেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ৷ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিগত 2 বছরেরও বেশি সময় ধরে কেন্দ্রের কাছে বকেয়া একশো দিনের কাজের টাকা নিয়ে সরব হয়েছেন ৷ এর জন্য ধর্না অবস্থান করেছেন ৷ তৃণমূল সাংসদরা দিল্লি গিয়ে বিক্ষোভ প্রদর্শনও করেছেন ৷ এমনকী লোকসভা নির্বাচনে তৃণমূল কংগ্রেসের অন্যতম হাতিয়ার ছিল কেন্দ্রের বঞ্চনা ৷
এর জবাবে বুধবার কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রী শিবরাজ সিং চৌহান পরিষ্কার জানালেন, বাংলার মানুষ বিজেপি সরকারের এই টাকা পায়নি, কারণ এর নেপথ্যে রয়েছে কেন্দ্রের সঙ্গে তৃণমূল সরকারের অসহযোগিতা ৷ গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রকের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, কেন্দ্রীয় সরকারের নির্দেশ মানেনি পশ্চিমবঙ্গের মমতা সরকার ৷ তাই 2022 সালের মার্চ মাস থেকে মহাত্মা গান্ধি ন্যাশনাল রুরাল এমপ্লয়মেন্ট গ্যারান্টি স্কিম (এমজিএনআরইজিএস)-এর আওতায় বরাদ্দ অর্থ দেওয়া বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে ৷
কেন্দ্রীয় মন্ত্রী শিবরাজ সিং চৌহান বলেন, "পশ্চিমবঙ্গের গরিব, দুঃস্থ মানুষদের নিয়ে আমাদেরও দুশ্চিন্তা রয়েছে ৷ আমরা রাজ্যকে কিছু বিষয়ে মেনে চলতে বলেছিলাম ৷ রাজ্য যদি সেটা করত তাহলে বকেয়া মেটানোর বিষয়টাও ভেবে দেখা হত ৷" তিনি আরও জানান, প্রধানমন্ত্রী গ্রাম সড়ক যোজনা (পিএমজিএসওয়াই) প্রকল্পের আওতায় বাংলাকে অর্থ দেওয়া হয়েছে ৷
কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বলেন, "পশ্চিমবঙ্গ তো পিএম গ্রাম সড়ক যোজনায় টাকা পাচ্ছে ৷ সেখানে কোনও গণ্ডগোল হয়নি ৷ আমরা একটা উদ্দেশ্য পূরণের লক্ষ্যে টাকা দিই ৷ সেই উদ্দেশ্যই যদি না পূরণ হয়, প্রকল্পের নাম বদলে দেওয়া হয়, যাঁরা যোগ্য নন এমন ব্যক্তিরা সুবিধা পান, নিয়ম মেনে কাজ না হয়, আমরা কি এই অবস্থায় জবাব চাইতে পারি না ? আমরা শুধুই টাকা দিয়ে যাব ?" তাঁর অভিযোগ, পশ্চিমবঙ্গ সরকার কেন্দ্রীয় উন্নয়ন প্রকল্পে বরাদ্দ তহবিলের টাকা অযোগ্য মানুষদের পাইয়ে দিচ্ছে ৷ চৌহান বলেন, "কেন্দ্রের তদন্ত করার অধিকার আছে ৷ সেই তদন্ত হয়েছে ৷ গোলমাল ধরা পড়েছে ৷ তাই আমরা পদক্ষেপ করেছি ৷"
শুধু পশ্চিমবঙ্গ নয়, অন্য কোনও রাজ্যে এধরনের দুর্নীতি ধরা পড়লে সেক্ষেত্রে একই ব্যবস্থা নেওয়া হবে, সাফ জানালেন কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রী শিবরাজসিং চৌহান ৷ এর আগে মঙ্গলবার লোকসভায় কোয়েশ্চেন আওয়ার-এ তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় কেন্দ্রীয় সরকারের বিভিন্ন প্রকল্পে বকেয়া টাকা না পাওয়ার বিষয়টি উত্থাপন করেন ৷ তখন এর তীব্র বিরোধিতা করেছিলেন কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রী ৷