নয়াদিল্লি, 17 ডিসেম্বর: কেন্দ্রের বিজেপি সরকার দেশের প্রতিটি রাজ্যে অভিন্ন দেওয়ানি বিধি লাগু করবে ৷ মঙ্গলবার সন্ধ্যায় রাজ্যসভায় এই ঘোষণা করলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ ৷ এদিন সংবিধানের 75 বছর পূর্তিতে বিতর্কে অংশগ্রহণ করেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ৷ এই বিতর্কে আবারও সংবিধান নিয়ে কংগ্রেসকে তুলোধনা করেন বিজেপির অন্য়তম শীর্ষ নেতৃত্ব ৷
সংসদের উচ্চকক্ষে তিনি জানান, ভারত বিশ্বের পঞ্চম বৃহত্তম অর্থনৈতিক দেশ ৷ ব্রিটেনকেও ছাপিয়ে গিয়েছে ভারত ৷ সংবিধান সাজানোর প্রসঙ্গে তিনি নন্দলাল বোসের প্রসঙ্গ তোলেন ৷ শাহ বলেন, "কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সঙ্গে থাকতেন নন্দলাল বোস ৷ তিনি একজন বড়মাপের শিল্পী ছিলেন ৷ তিনি 4 বছর ধরে সংবিধানকে সাজানোর কাজ করেছিলেন ৷"
লোকসভার বিরোধী দলেতা রাহুল গান্ধির নামোল্লেখ না করলেও তাঁকে কটাক্ষ করে অমিত শাহ বলেন, "54 বছর বয়সি একজন নিজেকে তরুণ বলে দাবি করেন ৷ তিনি বলতে থাকেন, আমরা সংবিধান বদলে দেব ৷ আমি তাঁকে বোঝাতে চাই, সংবিধান বদলানোর ব্যবস্থা, সংবিধানের ধারা পরিবর্তনের ব্যবস্থা সংবিধানেরই 368 নম্বর ধারায় বলা আছে ৷"
এই প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, "বিজেপি দেশে 16 বছর রাজত্ব করেছে ৷ 6 বছর বাজপেয়িজি করেছেন, 10 বছর মোদি করেছেন এবং আরও 5 বছর মোদি করবেন ৷ আমরা এখনও পর্যন্ত 16 বছর শাসন করেছি ৷ 16 বছরে আমরা 22 বার সংবিধান বদলেছি ৷ কংগ্রেস 55 বছরের শাসনকালে 77 বার সংবিধানে পরিবর্তন করেছে ৷" সংবিধান বদলের উদ্দেশ্য নিয়ে কংগ্রেসকে কড়া আক্রমণ শানান কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ ৷
তাঁর দাবি, প্রথমবার সংবিধান সংশোধন হয় 18 জুন 1951 সালে ৷ সংবিধান সভাতেই এই সংশোধন হয় ৷ কারণ সংবিধান প্রণয়নের পর নির্বাচন পর্যন্ত অপেক্ষা করার ধৈর্য ছিল না কংগ্রেসের ৷ লোকসভা ও রাজ্যসভা ছিল না ৷ এর উদ্দেশ্য প্রসঙ্গে শাহ বলেন, "19এ ধারা যুক্ত হল ৷ অভিব্যক্তির স্বাধীনতায় রোধ করতে এই সংশোধন হয় ৷ সেই সময় প্রধানমন্ত্রী ছিলেন জওহরলাল নেহরু ৷" এরপরই সংসদে শোরগোল পড়ে যায় ৷ বিরোধী কংগ্রেস দলের সাংসদরা হইচই শুরু করেন ৷
শাহ আরও জানান, 1971 সালের 5 নভেম্বর 24তম সংশোধন হয় সংবিধানে ৷ তখন প্রধানমন্ত্রী ছিলেন ইন্দিরা গান্ধি ৷ নাগরিকদের মৌলিক অধিকার কম করার অধিকার দেওয়া হল সংসদকে ৷ এরপর 39তম সংবিধান সংশোধনের কথা বলেন অমিত শাহ ৷ তিনি বলেন, "এবার সব সীমা পেরিয়ে গেল ৷ দিনটা ছিল 1975 সালের 10 অগস্ট ৷ সেই সময় এলাহাবাদ হাইকোর্ট ইন্দিরা গান্ধির নির্বাচনকে অবৈধ বলে ঘোষণ করে ৷ এদিকে তিনি প্রধানমন্ত্রী পদাধিকারীর বিরুদ্ধে কোনও তদন্ত করা যাবে না, এই মর্মে সংশোধন করলেন ৷ এমনকী পুরনো মামলা থাকলেও তা খারিজ হয়ে যাবে বলে সংশোধন হল ৷"