নয়াদিল্লি, 28 অগস্ট: আরজি কর কাণ্ডে প্রতিবাদে নেমেছেন ডাক্তার থেকে শুরু করে ছাত্ররা ৷ তাঁদের পাশে দাঁড়িয়েছেন সমাজের সর্বস্তরের মানুষ ৷ তারপরেও অপরাধীরা প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে ৷ এই ঘটনা মেনে নেওয়া যায় না ৷ আরজি করে ডাক্তার-পড়ুয়া ধর্ষণ ও হত্যাকাণ্ড প্রসঙ্গে এমনটাই জানালেন রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু ৷
সংবাদসংস্থা পিটিআই’কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে রাষ্ট্রপতি জানিয়েছেন, নির্ভয়ার ঘটনার পর 12 বছ পর কেটে গিয়েছে। এর মধ্যে ধর্ষণের বহু ঘটনা মানুষ ভুলে গিয়েছে ৷ এই সম্মিলিত স্মৃতিভ্রংশ সমাজের পক্ষে ক্ষতিকর ৷ সাম্প্রতিক অতীতে এই সমস্যা ক্রমাগত হচ্ছে ৷ এটি একটি সামাজিক ব্যাধি ৷ যা নির্মূল করতে এর গোড়া পর্যন্ত পৌঁছতে হবে ৷ কলকাতায় চিকিৎসক-পড়ুয়ার ধর্ষণ-খুনের নৃশংসতা গোটা দেশকে নাড়িয়ে দিয়েছে ৷ তিনি এই ঘটনার ভয়াবহতা শুনে আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন ৷ এই ঘটনা একেবারেই বিচ্ছিন্ন নয়। মহিলাদের বিরুদ্ধে ক্রমাগত অত্যাচার হচ্ছে ৷ প্রাপ্তবয়স্ক শুধু নয়, শিশুরাও রেহাই পাচ্ছে না ৷ সবচেয়ে আতঙ্কের কথা, অপরাধীরা যত্রতত্র ঘুরে বেড়াচ্ছে ৷
রাষ্ট্রপতি মুর্মু বলেন, "গত বছর নারীদিবসে আমি নারীদের ক্ষমতায়নের বিষয়ে লিখেছিলাম ৷ সাম্প্রতিককালে বিভিন্ন ক্ষেত্রে নারীরা নিজেদের মেলে ধরেছেন ৷ তা দেখে আমিও সমাজে নারীদের অবস্থা আরও উন্নততর হবে বলে আশাবাদী ছিলাম ৷ আমি নিজেকে নারী ক্ষমতায়নের অন্যতম উদাহরণ বলে মনে করি ৷ কিন্তু এই ঘটনা ক্রমশ আমাদের চিন্তা বাড়াচ্ছে ৷"
সম্প্রতি রাষ্ট্রপতি ভবনে রাখি উদযাপন করতে আসা কিছু স্কুল ছাত্র তাঁকে জিজ্ঞাসা করেছিল, ভবিষ্যতে নির্ভয়ার মতো ঘটনা আর ঘটবে না তো ? জবাবে তিনি বলেছিলেন, দেশের প্রতিটি নাগরিককে সুরক্ষা দিতে আমরা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ ৷ তবে তাঁদের শক্তিশালী করতে সকলের জন্য, বিশেষ করে মেয়েদের জন্য আত্মরক্ষা এবং মার্শাল আর্টের প্রশিক্ষণ অপরিহার্য ।
এছাড়াও তার আগে যা প্রয়োজন তা হল সৎ এবং নিরপেক্ষ আত্মদর্শন ৷ সময় এসেছে যখন একটি সমাজ হিসেবে আমাদের নিজেদেরকে কিছু কঠিন প্রশ্ন করতে হবে । আমরা কোথায় ভুল করেছি ? আমরা সমস্যাগুলি উৎখাত করতে পারছি কি না ? সেই প্রশ্নের উত্তর খুঁজে না-পেলে আমাদের জনসংখ্যার অর্ধেক মানুষ বাকি অর্ধেকের মতো স্বাধীনভাবে বাঁচতে পারবে না ৷ আমাদের সংবিধান সকলকে সমক্ষমতা প্রদান করেছে ৷ বিশ্বের অনেক দেশে এটি আদর্শ, তারা ভাবছে সমাজে কীভাবে এই আদর্শ প্রতিষ্ঠা করা যায়। আমাদের দেশ তখন বিভিন্ন পরিকল্পনা ও উদ্যোগের মাধ্যমে এটিকে প্রতিষ্ঠিত করছে । সুশীল সমাজ এগিয়ে আসছে ৷
রাষ্ট্রপতির এই মন্তব্যে পালটা মন্তব্য করেছেন কুণাল ঘোষও ৷ এক্স পোস্টে তৃণমূল নেতা লিখেছেন, ‘‘আরজি কর নিয়ে রাষ্ট্রপতির কথা শুনলাম ৷ তাঁকে সম্মান করি । উন্নাও, হাথরস, বিলকিস, মণিপুরের সময় বুক কেঁপে ওঠেনি মাননীয়া ? ওড়িশা, মহারাষ্ট্র, উত্তরাখণ্ড দেখতে পেলেন না ? সাক্ষী মালিকদের মত সোনার মেয়েদের প্রতিবাদের সময় আপনি চুপ করেছিলেন কেন ? বিজেপির বিরুদ্ধে বলতে কষ্ট হয় ?’’