ETV Bharat / bharat

আজমেঢ়ের এই গ্রামে নিমের ডাল কাটাও অপরাধ, 700 বছরের ঐতিহ্য এখনও অটুট - NEEM VILLAGE OF RAJASTHAN

author img

By ETV Bharat Bangla Team

Published : Jun 30, 2024, 10:38 PM IST

Neem Village of Ajmer: আজমেঢ় জেলার পদমপুরা গ্রামে 15 হাজারেরও বেশি নিম গাছ রয়েছে। নিম কাটার কথা ছেড়ে দিন, এখানকার লোকেরা গত 700 বছর ধরে গাছটির ডাল-পাতাও ছেঁড়ে না। নিমকে এখানে ঈশ্বর মানা হয়। পদমপুরা গ্রাম পরিবেশ রক্ষার এক চমৎকার উদাহরণ ৷

Neem villages of Ajmer
এই গ্রামে নিমের ডাল কাটাও অপরাধ (নিজস্ব চিত্র)

আজমেঢ়, 30 জুন: বিশ্ব উষ্ণায়ন নিয়ে চিন্তিত আন্তর্জাতিক মহল ৷ পরিবেশগত ভারসাম্যহীনতার বিরূপ প্রভাব কখনও প্রাকৃতিক দুর্যোগের আকারেও দেখা যাচ্ছে ৷ তারপরও অবশ্য পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় বেশি করে বৃক্ষ রোপণ ও সংরক্ষণে সরকারি-বেসরকারি পর্যায়ে উদ্যোগ নেওয়া হলেও মানুষ তা গুরুত্বের সঙ্গে নিচ্ছে না বলেও অভিযোগ উঠছে ৷

এর মাঝেও ব্যতিক্রম এখনও আছে ৷ আজমেঢ় জেলার পদমপুরা গ্রাম এবং সেখানকার মানুষের থেকে অবশ্যই পরিবেশ সচেতনতার শিক্ষা নেওয়া উচিত বলেই মনে করছে পরিবেশপ্রেমীরা। কারণ, পরিবেশের জন্য পদমপুরা গ্রাম দেশের মধ্যে একটি উল্লেখযোগ্য উদাহরণ হয়ে উঠেছে ইতিমধ্যে। এই গ্রামে নিম গাছ কাটা অপরাধ হিসেবে বিবেচিত হয় ৷ তাও নতুন নয়, 705 বছর ধরে এই নিয়ম মেনে আসছে গ্রামের প্রতিটি মানুষ ৷ গ্রামের প্রতিটি মানুষ নিমকে নারায়ণ মনে করে রক্ষা করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ ৷

আজমেঢ় থেকে 18 কিলোমিটার দূরে আরাবল্লি পাহাড়ের কোলে অবস্থিত পদমপুরা গ্রামের ইতিহাস 705 বছরের পুরনো ৷ পাহাড়ের পাদদেশের এই গ্রামে রয়েছে ছোট দুর্গ ৷ যা এর প্রাচীন ইতিহাসের সাক্ষী। এই গ্রামটিকে অবশ্য আশপাশের গ্রামের মানুষ এক কথায় নিমওয়ালা গ্রাম নামেই চেনে। এর কারণ, গ্রামে হাজার হাজার নিম গাছ ৷

এই গ্রামে নিম গাছ কাটা তো দূর, নিমের ডাল ভাঙাও অপরাধ বলে গণ্য হয়। প্রায় 1200 লোকের জনসংখ্যা অধ্যুষিত পদমপুরা গ্রামে, নিম গাছ কেবল তাদের বিশ্বাসই নয়, এটি প্রাচীনদের কাছ থেকে প্রাপ্ত একটি ঐতিহ্যও ৷ যা এখানে সমান ভক্তির সঙ্গে আজও মেনে চলা হয় ৷ গ্রামের প্রাচীন ও জরাজীর্ণ দুর্গ থেকে গ্রামের দিকে তাকালে সবদিকে শুধু নিম গাছ দেখতে পাওয়া যায় ৷ এমন নয় যে নিম ছাড়া আর কোনও গাছ নেই, তবে এই গ্রাম এবং এখানে বসবাসকারী মানুষের কাছে নিম গাছই ঈশ্বর ৷

আজমেঢ়ের সাংবাদিক রোহিতাশ গুর্জার জানাচ্ছেন, পদম সিং যখন এই গ্রামে বসতি স্থাপন করেন, তখন থেকেই গ্রামবাসীরা প্রতিশ্রুতি নেয়, নিম গাছ কখনও কাটা হবে না ৷ এরপরই এটি কার্যত আইনে পরিণত হয়ে গিয়েছে ৷ গ্রামের জনসংখ্যার অধিকাংশই গুর্জর সম্প্রদায়ের। গুর্জর সম্প্রদায়ের উপাস্য দেবতা হলেন দেবনারায়ণ, যাকে ভগবান বিষ্ণুর অবতার বলে মনে করা হয়। আর এখানকার মানুষ নিম গাছকে দেবনারায়ণ বলেই মনে করেন ৷ রোহিতাশ বলেন, "গত কয়েক বছরে প্রকৃতিতে অনেক পরিবর্তন দেখা গিয়েছে। বিশেষ করে আবহাওয়ার পরিবর্তন হয়েছে। গোটা বিশ্বই এর কুফল ভোগ করছে। এর কারণ নির্বিচারে গাছ কাটা। বর্তমানে পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষার জন্য যতটা সম্ভব গাছ লাগানো ও সংরক্ষণ করা সবচেয়ে জরুরি।"

গ্রামের প্রধান যশরাজ গুর্জর জানান, ছোটবেলা থেকেই তিনি বড়দের কাছে শুনে আসছেন, নিমকে নারায়ণ বলে মনে করা হয় ৷ এমন অবস্থায় কাউকে গাছ কাটতে দেখেননি তিনি ৷ তিনি আরও জানান, গ্রামের মানুষ কৃষিকাজের পাশাপাশি পশুপালনও করেন ৷ তা সত্ত্বেও নিম পাতা ছিঁড়ে গবাদিপশুদের খাওয়ানো হয় না ৷

গ্রামের মানুষ স্বেচ্ছায় নিম রক্ষার যত্ন নেয়। কেউ যদি নিমের একটি ডালও ভেঙে দেয়, সে নিজে গ্রামে এসে স্বীকার করে, অথবা লোকে তাকে ধরে চৌপালে নিয়ে আসে ৷ এরপর গ্রামের প্রবীণরা তার জন্য আর্থিক শাস্তির সিদ্ধান্ত নেয়। যশরাজ গুর্জর বলেন, "নিম গাছ গ্রামের জন্য আশীর্বাদ। গ্রামের জলবায়ু পরিষ্কার এবং মানুষ সুস্থ রাখে ৷ এমনকী করোনার সময়েও গ্রামের একজনও করোনায় আক্রান্ত হননি ৷"

আজমেঢ়, 30 জুন: বিশ্ব উষ্ণায়ন নিয়ে চিন্তিত আন্তর্জাতিক মহল ৷ পরিবেশগত ভারসাম্যহীনতার বিরূপ প্রভাব কখনও প্রাকৃতিক দুর্যোগের আকারেও দেখা যাচ্ছে ৷ তারপরও অবশ্য পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় বেশি করে বৃক্ষ রোপণ ও সংরক্ষণে সরকারি-বেসরকারি পর্যায়ে উদ্যোগ নেওয়া হলেও মানুষ তা গুরুত্বের সঙ্গে নিচ্ছে না বলেও অভিযোগ উঠছে ৷

এর মাঝেও ব্যতিক্রম এখনও আছে ৷ আজমেঢ় জেলার পদমপুরা গ্রাম এবং সেখানকার মানুষের থেকে অবশ্যই পরিবেশ সচেতনতার শিক্ষা নেওয়া উচিত বলেই মনে করছে পরিবেশপ্রেমীরা। কারণ, পরিবেশের জন্য পদমপুরা গ্রাম দেশের মধ্যে একটি উল্লেখযোগ্য উদাহরণ হয়ে উঠেছে ইতিমধ্যে। এই গ্রামে নিম গাছ কাটা অপরাধ হিসেবে বিবেচিত হয় ৷ তাও নতুন নয়, 705 বছর ধরে এই নিয়ম মেনে আসছে গ্রামের প্রতিটি মানুষ ৷ গ্রামের প্রতিটি মানুষ নিমকে নারায়ণ মনে করে রক্ষা করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ ৷

আজমেঢ় থেকে 18 কিলোমিটার দূরে আরাবল্লি পাহাড়ের কোলে অবস্থিত পদমপুরা গ্রামের ইতিহাস 705 বছরের পুরনো ৷ পাহাড়ের পাদদেশের এই গ্রামে রয়েছে ছোট দুর্গ ৷ যা এর প্রাচীন ইতিহাসের সাক্ষী। এই গ্রামটিকে অবশ্য আশপাশের গ্রামের মানুষ এক কথায় নিমওয়ালা গ্রাম নামেই চেনে। এর কারণ, গ্রামে হাজার হাজার নিম গাছ ৷

এই গ্রামে নিম গাছ কাটা তো দূর, নিমের ডাল ভাঙাও অপরাধ বলে গণ্য হয়। প্রায় 1200 লোকের জনসংখ্যা অধ্যুষিত পদমপুরা গ্রামে, নিম গাছ কেবল তাদের বিশ্বাসই নয়, এটি প্রাচীনদের কাছ থেকে প্রাপ্ত একটি ঐতিহ্যও ৷ যা এখানে সমান ভক্তির সঙ্গে আজও মেনে চলা হয় ৷ গ্রামের প্রাচীন ও জরাজীর্ণ দুর্গ থেকে গ্রামের দিকে তাকালে সবদিকে শুধু নিম গাছ দেখতে পাওয়া যায় ৷ এমন নয় যে নিম ছাড়া আর কোনও গাছ নেই, তবে এই গ্রাম এবং এখানে বসবাসকারী মানুষের কাছে নিম গাছই ঈশ্বর ৷

আজমেঢ়ের সাংবাদিক রোহিতাশ গুর্জার জানাচ্ছেন, পদম সিং যখন এই গ্রামে বসতি স্থাপন করেন, তখন থেকেই গ্রামবাসীরা প্রতিশ্রুতি নেয়, নিম গাছ কখনও কাটা হবে না ৷ এরপরই এটি কার্যত আইনে পরিণত হয়ে গিয়েছে ৷ গ্রামের জনসংখ্যার অধিকাংশই গুর্জর সম্প্রদায়ের। গুর্জর সম্প্রদায়ের উপাস্য দেবতা হলেন দেবনারায়ণ, যাকে ভগবান বিষ্ণুর অবতার বলে মনে করা হয়। আর এখানকার মানুষ নিম গাছকে দেবনারায়ণ বলেই মনে করেন ৷ রোহিতাশ বলেন, "গত কয়েক বছরে প্রকৃতিতে অনেক পরিবর্তন দেখা গিয়েছে। বিশেষ করে আবহাওয়ার পরিবর্তন হয়েছে। গোটা বিশ্বই এর কুফল ভোগ করছে। এর কারণ নির্বিচারে গাছ কাটা। বর্তমানে পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষার জন্য যতটা সম্ভব গাছ লাগানো ও সংরক্ষণ করা সবচেয়ে জরুরি।"

গ্রামের প্রধান যশরাজ গুর্জর জানান, ছোটবেলা থেকেই তিনি বড়দের কাছে শুনে আসছেন, নিমকে নারায়ণ বলে মনে করা হয় ৷ এমন অবস্থায় কাউকে গাছ কাটতে দেখেননি তিনি ৷ তিনি আরও জানান, গ্রামের মানুষ কৃষিকাজের পাশাপাশি পশুপালনও করেন ৷ তা সত্ত্বেও নিম পাতা ছিঁড়ে গবাদিপশুদের খাওয়ানো হয় না ৷

গ্রামের মানুষ স্বেচ্ছায় নিম রক্ষার যত্ন নেয়। কেউ যদি নিমের একটি ডালও ভেঙে দেয়, সে নিজে গ্রামে এসে স্বীকার করে, অথবা লোকে তাকে ধরে চৌপালে নিয়ে আসে ৷ এরপর গ্রামের প্রবীণরা তার জন্য আর্থিক শাস্তির সিদ্ধান্ত নেয়। যশরাজ গুর্জর বলেন, "নিম গাছ গ্রামের জন্য আশীর্বাদ। গ্রামের জলবায়ু পরিষ্কার এবং মানুষ সুস্থ রাখে ৷ এমনকী করোনার সময়েও গ্রামের একজনও করোনায় আক্রান্ত হননি ৷"

ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.