শ্রীনগর, 21 অক্টোবর: সোনমার্গের গান্দরবলের নির্মীয়মান এক সুড়ঙ্গে জঙ্গি হামলায় এক চিকিৎসক-সহ প্রাণ হারিয়েছেন 7 জন ৷ হামলার দায় স্বীকার করেছে পাক মদতপুষ্ট জঙ্গি সংগঠন লস্কর-ই-তোইবার শাখা টিআরএফ ৷ সংবাদসংস্থা আইএএনএস-এর খবর অনুযায়ী, এই হামলার মাস্টারমাইন্ড তথা টিআরএফ প্রধান সাজ্জাদ গুল পাকিস্তানে বসে পুরো ঘটনার ছক কষেছিল ৷ সংগঠনের স্থানীয় মডিউল রবিবার সন্ধ্যায় হামলা চালায় ৷ তদন্ত শুরু করেছে এনআইএ ৷
2-3 জন সদস্যকে এই হামলায় ব্যবহার করা হয় বলে দাবি সংগঠনের ৷ এর জন্য গত একমাস ধরে ঘটনাস্থলের রেইকি করা হয় বলেও জানা গিয়েছে ৷ মূলত, গত দেড় বছর ধরে কাশ্মীরি পণ্ডিত, শিখ ও কাশ্মীরের বাসিন্দা নয়, এমন ব্যক্তিদের নিশানা করে হামলা চালিয়েছে পাকিস্তানের এই জঙ্গি সংগঠনটি ৷ তবে এই প্রথম সে পথ থেকে সরে এসে নির্মীয়মান এক সুড়ঙ্গে হামলা চালিয়েছে তারা ৷ এই ঘটনায় এক চিকিৎসক-সহ 6 শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে ৷
হামলার দায় স্বীকার করে নেওয়ার পর পাকিস্তানের কড়া অক্রমণ করেছেন জম্মু-কাশ্মীরের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তথা ন্যাশনাল কনফারেন্স সভাপতি ফারুক আবদুল্লা ৷ তিনি বলেন, "সাধারণ নিরস্ত্র মানুষের উপর হামলা চালিয়ে পাকিস্তান মোটেই ঠিক করছে না ৷ এরপর তারা আলোচনা করতে চাইলে কেউ সহমত হবে না ৷ তারা যদি ভেবে থাকে এই ধরণের হামলা চালিয়ে, ভয় দেখিয়ে কাশ্মীরকে দখল করবে, তাহলে ভুল ভাবছে ৷ কাশ্মীর কখনই পাকিস্তান হবে না ৷"
ঠিক কী হয়েছিল ?
রবিবারের হামলায় 1 জন স্থানীয় চিকিৎসক-সহ 7 জনের মৃত্যু হয়েছে ৷ আহত হয়েছেন 10 জনেরও বেশি ৷ ঘটনার তীব্র নিন্দা করেছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ, জম্মু-কাশ্মীরের মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লা-সহ অনেকে ৷ উল্লেখ্য, গান্দরবল জেলার গগনগীর এলাকায় শ্রীনগর-লে জাতীয় সড়কের উপর একটি টানেল তৈরি করা হচ্ছে কেন্দ্রের তরফে ৷ রবিবার সেই টানেলের কাজ সেরে নিজেদের ক্যাম্পে ফিরছিলেন শ্রমিকরা ৷ সেই সময় তাঁদের উপর অতর্কিত হামলা চালায় জঙ্গিরা ৷ কোনও কিছু বোঝার আগে এলোপাথারি গুলি চালাতে শুরু করে তারা ৷ ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় দুই পরিযায়ী শ্রমিকের ৷ বাকি 4 শ্রমিক ও চিকিৎসককে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে সেখানে মৃত্যু হয় তাঁদের ৷
মৃত শ্রমিকরা হলেন ফাইম নাজির, কালিম, মহম্মদ হানিফ, শশী আবরোল, অনিল শুক্লা এবং গুরমিত সিং ৷ এদের মধ্যে প্রথম 3 জন বিহারের বাসিন্দা, শশী জম্মুর বাসিন্দা, অনিল মধ্যপ্রদেশের বাসিন্দা এবং গুরমিত পঞ্জাবের বাসিন্দা ৷ জানা গিয়েছে, মৃত চিকিৎসক হলেন ডাঃ শাহনওয়াজ ৷ তিনি জম্মু-কাশ্মীরের বুদগামের বাসিন্দা ৷ ক্যাম্পে শ্রমিক ও আধিকারিকদের চিকিৎসার দায়িত্বে নিযুক্ত ছিলেন তিনি ৷
হামলার তীব্র নিন্দা করেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ, কেন্দ্রীয় সড়ক ও পরিবহন মন্ত্রী নীতিন গড়করি, লেফট্যানেন্ট গভর্নর মনোজ সিনহা এবং জম্মু-কাশ্মীরের মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লা ৷
I strongly condemn the horrific terror attack on innocent laborers in Gagangir, Sonamarg, Jammu & Kashmir, who were engaged in a vital infrastructure project.
— Nitin Gadkari (@nitin_gadkari) October 20, 2024
I offer my humble tribute to the martyred laborers and extend my deepest condolences to their families during this…
সাধারণ নাগরিকের উপর এই হামলাকে 'কাপুরুষতার' নিদর্শন বলে অভিহিত করেছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ৷ এক্স হ্যান্ডেলে লেখা পোস্টে তিনি বলেন, "এই ঘৃণ্য হামলার সঙ্গে জড়িতদের কোনও ভাবেই রেহাই দেওয়া হবে না ৷ দেশের নিরাপত্তা বাহিনী এই হামলার মোক্ষম জবাব দেবে ৷ নিহতদের পরিবারের প্রতি আমার গভীর সমবেদনা ৷ আহতদের দ্রুত আরোগ্য কামনা করছি ৷"
The dastardly terror attack on civilians in Gagangir, J&K, is a despicable act of cowardice. Those involved in this heinous act will not be spared and will face the harshest response from our security forces. At this moment of immense grief, I extend my sincerest condolences to…
— Amit Shah (@AmitShah) October 20, 2024
এক দশক পর নয়া মুখ্যমন্ত্রী পেয়েছে জম্মু-কাশ্মীর ৷ কয়েকদিন আগেই মুখ্যমন্ত্রীর পদে শপথ নিয়েছেন ন্যাশনাল কনফারেন্স নেতা ওমর আবদুল্লা ৷ এদিনের এই হামলার তীব্র নিন্দা করে এক্স হ্যান্ডেলে পোস্ট করেন তিনি ৷
Very sad news of a dastardly & cowardly attack on non-local labourers at Gagangir in Sonamarg region. These people were working on a key infrastructure project in the area. 2 have been killed & 2-3 more have been injured in this militant attack. I strongly condemn this attack on…
— Omar Abdullah (@OmarAbdullah) October 20, 2024