ভাবের আদানপ্রদানে কণ্ঠস্বর আমাদের দৈনন্দিন জীবনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে । এটা আমাদের কাছে এক অনন্য উপহার । তাই এর গুরুত্বকে স্বীকৃতি দিতে, এ ব্যাপারে সচেতনতা বাড়াতে প্রতিবছর 16 এপ্রিল পৃথিবীজুড়ে বিশ্ব কণ্ঠস্বর দিবস পালিত হয় । এবছরের থিম, ‘এক বিশ্ব, বহু স্বর ।’
এই দিনটা শুরুতে 1999 সালের 16 এপ্রিল ব্রাজিলিয়ান ভয়েজ ডে হিসেবে পালন করা শুরু করে ব্রাজিলিয়ান সোসাইটি অফ ল্যারিঙ্গোলজি অ্যান্ড ভয়েজ, যেটির চেয়ারম্যান ছিলেন ড. নেদিও স্টেফান ।পরে 2002 সালে আমেরিকান অ্যাকাডেমি অফ অটোল্যারিঙ্গোলজি—হেড অ্যান্ড নেক সার্জারি (এএও-এইচএনএস) এই দিনটিকে বিশ্বজুড়ে পালন করার সিদ্ধান্ত নেয়, এবং দিনটি বিশ্ব কণ্ঠস্বর দিবস হিসেবে পরিচিত হয় ।
- কণ্ঠস্বরের সমস্যার কারণ
আমেরিকার ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অন ডেফনেস অ্যান্ড আদার কমিউনিকেশন ডিজঅর্ডার (এনআইডিসিডি)-এর মতে, নিম্নলিখিত কারণগুলোর জন্য কণ্ঠস্বরের সমস্যা হতে পারে-
- আপার রেসপিরেটরি ইনফেকশন
- গ্যাসট্রোঅ্যাসোফেগাল রিফ্লাক্সের জেরে তৈরি ইনফ্লেমেশন
- কণ্ঠস্বরের অপব্যবহার ও অতিব্যবহার
- ভোকাল ফোল্ডে গ্রোফ, যেমন ভোকাল নডিউল বা ল্যারিঞ্জিয়াল প্যাপিলোম্যাটোসিস
- ল্যারিংসের ক্যান্সার
- স্নায়বিক সমস্যা (যেমন স্প্যাজমোডিক ডিসফোনিয়া বা ভোকাল ফোল্ড প্যারালিসিস)
- মানসিক ট্রমা
কণ্ঠস্বরের বেশিরভাগ সমস্যাই অভ্যাসগত চিকিৎসা বা অস্ত্রোপচারের নানা পদ্ধতির মাধ্যমে সেরে যায় ।
সমস্যাকে দূরে রাখার উপায়
- সাইনুসাইটিস, শ্বাসপ্রশ্বাসে সমস্যা হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন ৷
- অ্যালকোহল এড়িয়ে চলুন এবং ধূমপান ছাড়ুন ৷
- হঠাৎ তাপমাত্রার পরিবর্তন থেকে দূরে থাকুন । যদি আপনি ঠান্ডা জায়গা থেকে বাইরে গরমে বেরোন, একটু অপেক্ষা করে যান ৷
- কণ্ঠস্বর ভাল রাখতে সরাসরি পাখা বা কুলারের নিচে ঘুমোবেন না ৷
- খাদ্য ও পানীয় সঠিক এবং স্বাস্থ্যকর হওয়া দরকার । অনিয়মিত রুটিন এবং অস্বাস্থ্যকর খাওয়াদাওয়ার জেরে রিফ্লাক্সের মতো সমস্যা হতে পারে ৷
- খুব সর্দিকাশি, গুরুতর অ্যালার্জি বা নাকে-গলায় সংক্রমণ থাকলে, কণ্ঠস্বর সংক্রান্ত কোনওকিছু অভ্যাস করবেন না। টানা 45 মিনিটের বেশি কথা না বলার চেষ্টা করুন ।
- শারীরিক ও মানসিক স্ট্রেস আমাদের কণ্ঠস্বরের উপর প্রভাব ফেলে । তাই রাতে ভালভাবে ঘুমোন এবং নিজেকে রিল্যাক্স করুন ৷
- জোরে কথা বলা এবং চিৎকার করা এড়িয়ে চলুন ৷
কণ্ঠস্বর নিয়ে সমস্যা হলে বা কণ্ঠস্বর বদলে গেলে ডাক্তারের কাছে যান ৷
আরও পড়ুন : টিকাকরণের পর সংক্রমণ ও রোগ ছড়িয়ে পড়া
সুতরাং, কণ্ঠস্বরের মাধ্যমে আমাদের ভাবনা ও অনুভূতি অন্যের কাছে পৌঁছে দেওয়ার ক্ষমতা মানুষ হিসেবে আমাদের সবথেকে বড় প্রাপ্তি । অস্বাস্থ্যকর জীবনযাত্রা এবং খাওয়ার অভ্যেস কণ্ঠস্বরের নানা সমস্যার জন্ম দেয় । তাই সঠিক কণ্ঠস্বর বজায় রাখতে স্বাস্থ্যকর অভ্যেসক বজায় রাখাটা গুরুত্বপূর্ণ ।