এনওয়াইইউ গ্রসম্যান স্কুল অফ মেডিসিন এবং কলাম্বিয়া ইউনিভার্সিটির গবেষকরা দেখেছেন যে, সার্স -কোভ-2 ভাইরাসের সংক্রমণ পরোক্ষভাবে ঘ্রাণজনিত রিসেপ্টরের ওপর বড় প্রভাব ফেলে ৷ নাকের ভিতরের পৃষ্ঠতলে যে সমস্ত স্নায়ুকোষগুলি থাকে যা বিভিন্ন গন্ধকে চিহ্নিত করতে পারে, সেই প্রোটিনগুলির প্রভূত পরিবর্তন ঘটিয়ে দেয় ৷ বিভিন্ন পরীক্ষায় দেখা গিয়েছে, নাকের ঘ্রাণজনিত টিস্যুতে যে স্নায়ুকোষ বা নিউরনগুলি থাকে, তার খুব কাছাকাছি ভাইরাসের উপস্থিতি রোগ প্রতিরোধক কোষ, মাইক্রোগ্লিয়া এবং টি কোষগুলির ওপরেও প্রভাব ফেলে ৷ যারা ভাইরাসের সঙ্গে লড়াই করে ৷ তবে গবেষকরা বলছেন, এই ধরনের কোষগুলি সাইটোকাইন নামক প্রোটিন নিঃসরণ করে যা ঘ্রাণজনিত স্নায়ু কোষের জেনেটিক কার্যকলাপকে পরিবর্তন করে দেয় ৷ তবে এই কোষগুলিকে ভাইরাস সংক্রমিত করতে পারে না ৷
এনওয়াইইউ ল্যাঙ্গোন হেলথের মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের অধ্যাপক বেঞ্জামিন বলেন, "আমাদের গবেষণা প্রথম এই বিষয়টির এই আভিধানিক ব্যাখা দেয় যে, করোনা সংক্রমণে কেন ঘ্রাণ ক্ষমতা হারিয়ে যায় ৷" (Researchers find why covid patients lose their sense of smell) তিনি আরও বলেন, "আমাদের অনুসন্ধান এটাও দেখায় এই ভাইরাস, যা মানুষের শরীরের 1 শতাংশেরও কম কোষকে আক্রমণ করে, তা কতখানি মারাত্মক ক্ষতি করতে পারে ৷ " করোনার বিশেষ উপসর্গটি হল গন্ধ না পাওয়া, নাহলে সাধারণ সর্দি কাশির সঙ্গে এর তেমন কোনও বড় পার্থক্য নেই ৷ এক্ষেত্রে সাধারণত কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই ফের ঘ্রাণ ক্ষমতা ফিরে আসে ৷ তবে 12 শতাংশ ক্ষেত্রে রোগীর এও দেখা গিয়েছে যে, হয় তাঁদের ঘ্রাণ ক্ষমতা ক্রমাগত হ্রাস পেতে পেতে হাইপোসমিয়ার মত রোগে পরিণত হয়েছে, নয়তো প্য়ারোসমিয়ায় অর্থাৎ গন্ধ চিহ্নিত করার ক্ষেত্রে পরিবর্তন ঘটে গিয়েছে ৷
কোভিড ভাইরাস ঘ্রাণের ক্ষেত্রে ঠিক কতখানি প্রভাব ফেলে তা পরীক্ষা করতে 23 জন করোনায় মৃত গ্লোডেন হ্য়ামস্টার (ইঁদুর জাতীয় প্রাণী) এবং 23 জন মানুষের ঘ্রাণীয় টিস্যু থেকে নেওয়া স্যাম্পেল পরীক্ষা করে দেখেছে এই গবেষক দলটি ৷ দেখা গিয়েছে যে, ঘ্রাণজ রিসেপ্টরকে সক্রিয় রাখতে সাহায্য করতে যে ক্রোমোজোমগুলি থাকে, তার ডিএনএ চেইনগুলির বড় ক্ষতিসাধন করে করোনার সংক্রমণ ৷ গবেষক দলটি আরও দেখেছে যে, হ্যামস্টার হোক বা মানুষ, উভয়ের ক্ষেত্রেই ঘ্রাণজ রিসেপ্টরগুলির ক্ষমতা অনেকখানি কমে গিয়েছে ৷
আরও পড়ুন : যৌনতার সমস্য়া থেকে মুক্তি দিতে পারে ব্যায়াম, বলছে গবেষণা
পরবর্তীক্ষেত্রে কিছু হ্যামস্টারের ওপর আরও পরীক্ষা করে দেখা গিয়েছে, ঘ্রাণ ক্ষমতা হারিয়ে যাওয়ার বিষয়টি যে সবক্ষেত্রে সাময়িক তা কিন্তু নয় ৷ কোনও কোনও ক্ষেত্রে ঘ্রাণ ক্ষমতার বড় পরিবর্তন ঘটেছে সঠিক গন্ধ চিহ্নিত করার ক্ষেত্রে ৷ এটাই বলে দেয় কোভিড জিনগত এবং ক্রোমাসোমাল রেগুলেশনের ক্ষেত্রে দীর্ঘস্থায়ী পরিবর্তন ঘটাতে পারে ৷