হায়দরাবাদ, 5 ডিসেম্বর : বিশ্বজুড়ে যে কোরোনা পরিস্থিতি আমরা দেখছি, তার ছড়িয়ে পড়া এবং প্রতিরোধে একটা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আমাদের চোখ । কোরোনা ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার অন্যতম প্রধান রুট হল মুখ বা নাক, যেখানে মিউকাস মেমব্রেন থাকে । একইরকমভাবে চোখের মাধ্যমে কোরোনা ছড়ানোর ঘটনাও দেখা গেছে । এনিয়ে বিশদে জানতে ইটিভি ভারতের সুখীভব কথা বলেছিল পুনের এইচভি দেসাই আই হসপিটালের ফেলো এবং মারগাঁওয়ের মাদার কেয়ার হাসপাতালের অপথ্যালমোলজিস্ট, ড. নিখিল এম কামাতের সঙ্গে ।
যখন কোনও কোরোনা আক্রান্ত ব্যক্তি কাশেন, হাঁচেন বা কথা বলেন, ভাইরাস কণা তাঁদের মুখ বা নাক থেকে আরেকজনের মুখে পৌঁছায় । সাধারণত আপনার মুখ বা নাকের মাধ্যমে এই ড্রপলেটগুলি প্রবেশ করে। কিন্তু এটা চোখের মধ্যে দিয়েও শরীরে ঢুকতে পারে। আরেকটা সম্ভাব্য পথ হল, ভাইরাস রয়েছে এমন কিছু- যেমন ডোরনব, টেবিল, এমনকী কোনও ফেসমাস্কে হাত দিয়ে, সেই হাত চোখে দেওয়া । বিশ্বজুড়ে স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মতে, করোনা ভাইরাস আক্রান্ত 1 থেকে 3 শতাংশ মানুষের কনজাংটিভাইটিস হতে পারে। আক্রান্ত ব্যক্তির চোখ থেকে বেরিয়ে আসা তরল বা চটচটে পদার্থ থেকে এই ভাইরাস ছড়িয়ে পড়তে পারে। চোখের মাধ্যমে ভাইরাস ছড়ানো আটকাতে, আমাদের সেইভাবেই চোখ রগরানোর মতো দৈনন্দিন কিছু অভ্যেস ছাড়তে হবে, যেভাবে আমরা সামাজিক দূরত্ব বিধির মানতে অভ্যস্ত হয়েছি । যদি চোখ চুলকোয় অথবা চশমাও ঠিক করতে হয়, সেক্ষেত্রে আঙুলের বদলে একটা টিস্যু ব্যবহার করা উচিত । চোখ শুকিয়ে গেলে বেশি চুলকোয়। সেক্ষেত্রে বার বার লুব্রিকেটিং ড্রপ ব্যবহার করাই ভালো এবং তার আগে অবশ্যই সাবান ও জল দিয়ে 20 সেকেন্ড ধরে হাত ধুতে হবে।
বার বার হাতধোওয়া এবং পরিচ্ছন্নতা নিশ্চিতভাবেই আপনার সংক্রমণের ঝুঁকি কমাবে। খাওয়ার আগে, শৌচাগার ব্যবহারের পর, হাঁচি-কাশি বা নাক ঝাড়ার সময় হাত ধোওয়া উচিত এবং বার বার মুখে হাত দেওয়া এড়িয়ে চলা উচিত । দেখা গেছে যে যাঁরা কনট্যাক্ট লেন্স ব্যবহার করেন, তাঁরা অন্যদের থেকে বেশিবার চোখে হাত দেন। কিছুদিনের জন্য লেন্সের বদলে চশমা ব্যবহার করলে চোখজ্বালাও কমবে এবং চোখে হাত দেওয়ার আগে আপনি থামতে বাধ্য হবেন। চশমা বা সেফটি গগলস আপনাকে নিরাপত্তার একটা স্তর দিতে পারে, যদি আপনি স্বাস্থ্যকর্মী হন, যদি কোরোনা রোগী বা কোরোনা আক্রান্ত হতে পারেন এমন মানুষের দেখাশোনা করেন । যদিও জনগণকে বাধ্যতামূলকভাবে চশমা পরতে বলার মতো যথেষ্ট তথ্য নেই, কারণ বেশিরভাগ সংক্রমণই নাক ও শ্বাসযন্ত্রের মাধ্যমে হচ্ছে ।