হায়দরাবাদ : প্রায় 30 শতাংশ পর্যন্ত প্রেগেনেন্সির শেষ পরিণতি হল গর্ভপাত ৷ গর্ভাবস্থার 20 সপ্তাহের আগে পর্যন্ত একে প্রেগেনেন্সি লস হিসাবে সংজ্ঞায়িত করা হয় । অর্ধেক ক্ষেত্রেই গর্ভপাত কেন হয় তা এখনও সামনে আসেনি ৷ তবে এই প্রেগেনেন্সি লস পরবর্তীতে কয়েকটি পরিচিত ঝুঁকির কারণ হয়ে দাঁড়ায় ৷ পোস্ট ট্রমাটিক স্ট্রেস ডিসঅর্ডার, বিষণ্ণতা এবং উদ্বেগের কারণও হতে পারে এই প্রেগেনেন্সি লস।
সম্প্রতি বোস্টন ইউনিভার্সিটি স্কুল অফ পাবলিক হেলথের গবেষকরা দেখতে চেয়েছিলেন গর্ভপাতের ক্ষেত্রে ঋতুগত কোনও প্রভাব রয়েছে কি না ? অর্থাৎ কোনও বিশেষ ঋতুতে ঝুঁকি বেশি থাকে কি না ? দেখা গিয়েছে উত্তর আমেরিকার গর্ভবতী মহিলাদের ক্ষেত্রে (গর্ভাবস্থার আট সপ্তাহের মধ্যে) আগস্টের শেষ দিকে অর্থাৎ গ্রীষ্মের মাসগুলিতে গর্ভপাতের ঝুঁকি প্রায় 44 শতাংশ বেশি থাকে ৷ শুধু অগস্টের শেষের দিকে নয় যদি আগস্ট মাসের যে কোনও একটি সপ্তাহের সঙ্গে ফেব্রুয়ারি যে কোনও সপ্তাহের গর্ভপাতের ঝুঁকি সংক্রান্ত একটি তুলনা করা হয় তাহলে দেখা যাবে আগস্টের যে কোনও সপ্তাহেই ঝুঁকির পরিমাণ 31 শতাংশ বেশি ৷ ভৌগলিকভাবে, ফলাফলগুলি দেখায় যে দক্ষিণ এবং মধ্য-পশ্চিমে যেখানে গরম সবচেয়ে বেশি থাকে সেখানে এই ঝুঁকি অনেকটাই বেশি (Can Heat Increase The Chances of Miscarriage)৷
গবেষণার প্রধান তথা অধ্যাপিকা ডক্টর অ্যামেলিয়া ওয়েসেলিঙ্ক বলেন, "আমরা দেখেছি যে গর্ভপাতের ঝুঁকি, বিশেষত 'প্রাথমিক' গর্ভপাতের ঝুঁকি (গর্ভধারণের আট সপ্তাহের আগে ), গ্রীষ্মকালে সবচেয়ে বেশি ছিল। এখন গ্রীষ্মে কী ধরনের এক্সপোজার বেশি হয় তা বোঝার জন্য আমাদের আরও বেশি গবেষণার প্রয়োজন ? এই এক্সপোজারগুলিই গর্ভপাতের ঝুঁকি বেড়ে যাওয়ার কারণ ব্যাখ্যা করতে পারবে ।"
এই গবেষণার জন্য সোসিওডেমোগ্রাফিক্স, লাইফস্টাইল এবং মেডিক্যাল হিস্ট্রি সমস্ত কিছু ওপর ভিত্তি করে গবেষকরা 6,104 জন অংশগ্রহণকারীকে বেছে নেন যাঁরা তালিকাভুক্তির 12 মাসের মধ্যে গর্ভধারণ করেছিলেন । এঁদের সঙ্গে প্রেগন্যান্সি স্টাডি অনলাইন বা PRESTO-এর মাধ্যমে যোগাযোগ করা হয় এবং তাঁরা গর্ভপাত এবং অন্যান্য সমস্ত জরুরী তথ্য গবেষকদের দেন ৷
আরও পড়ুন : অ্য়ালঝাইমার রোগের ঝুঁকি 40 শতাংশ কমাতে পারে ফ্লু ভ্যাকসিন
গবেষকদের অনুমান হল তাপ এই গর্ভপাতের বর্ধিত ঝুঁকির কারণ হতে পারে তবে ওয়েসলিঙ্কের মতে এই নিয়ে আরও গবেষণা প্রয়োজন ৷ তিনি বলেন,"কিছু গবেষণায় তাপ এবং গর্ভপাতের ঝুঁকির মধ্যে সম্পর্ক রয়েছে কি না, তা নিয়ে পরীক্ষা করা হয়েছে, তাই এটি অবশ্যই একটি বিষয় যা নিয়ে আরও গবেষণা প্রয়োজন ৷" গবেষক ওয়েসলিঙ্ক এও মনে করেন যে এই বিষয়ে পরিবেশবিদদের সঙ্গে নিয়ে সরকারি নীতি নির্ধারণ জরুরি ৷ একই সঙ্গে জনস্বাস্থ্য সংক্রান্ত নীতি নির্ধারণের ক্ষেত্রেও বিষয়টি মাথায় রাখা প্রয়োজন ৷